ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে ঘেরে বিষ প্রয়োগ ॥ চিংড়ি চাষ হুমকিতে

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১০ মার্চ ২০১৭

বাগেরহাটে ঘেরে বিষ প্রয়োগ ॥ চিংড়ি চাষ হুমকিতে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মাছের ভা-ার খ্যাত বাগেরহাটের চিতলমারী- মোল্লাহাট-ফকিরহাটে একের পর এক চিংড়ি ঘেরে বিষ প্রয়োগের ঘটনায় চাষীরা দিশেহারা। প্রায় প্রতিরাতে এসব উপজেলার কোন না কোন এলাকায় বিষ প্রয়োগ করে দুর্বৃত্তরা ঘেরের মাছ লুটে নিয়ে যাচ্ছে। বিষ প্রয়োগের ফলে ঘেরের বাকি সব মাছ মরে যায়। চিংড়ির দরপতন, পোনা ও খাবারের মূল্য বৃদ্ধিতে এমনিতেই চিংড়ি চাষে খরচের টাকা ঘরে তুলতে পারছেনা চাষী। এরপর বিষ প্রয়োগের ঘটনায় চাষীদের মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে এ অঞ্চলে চিংড়ি চাষ এখন হুমকিতে। চিতলমারী-ফকিরহাট- মোল্লাহাট চিংড়ি চাষে সমৃদ্ধির ফলে এখন ‘সাদাসোনার ছোট কুয়েত’ বলে পরিচিতি পায়। এখানে প্রায় ১৫ হাজার ছোট-বড় চিংড়ি ঘের রয়েছে। যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা’ পরোক্ষভাবে তিন লাখ মানুষ নির্ভরশীল। কিন্তু প্রতিরাতে একের পর এক চিংড়ি ঘেরে বিষ দিয়ে দুর্বৃত্তরা চাষীদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি করছে। চাষীরা জানান, প্রতিবছর কমবেশি বন্যা, ঝড়, খরা ইত্যাদি নানা দুর্যোগে চিংড়ি চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এখানকার অধিকাংশ চাষী বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও, দাদন ব্যবসায়ী ও সুদেকারবারীদের কাছ থেকে অধিক মুনাফায় টাকা এনে বেশি দামে মাছের পোনা ও ফিড ক্রয় করে চাষাবাদ করেন। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় গ্রামের পর গ্রামে ব্যাপক ভাবে ঘেরে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। বড়বাড়িয়া, কলাতলা, হিজলা, পাটরপাড়া, শিবপুর, চরবানিয়ারী, সন্তোষপুর, শ্যামপাড়া, কুলিয়া, উদয়পুর, বাহিরদিয়া, নলধা-মৌভোগ ইত্যাদি এলাকায় গত দু বছরে কমপক্ষে ৪’শ চাষী বিষ প্রয়োগের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বুধবার রাতেও পাটরপাড়া গ্রামের মিলন বিশ্বাস, দানোখালী গ্রামের সঞ্জয় বসু, সুদেব বিশ্বাস, মনোজ বাড়ৈ, সঞ্জিত গোলদার, প্রফুল¬ বাইন, রাজু রায়, প্রমথ রায়, গৌতম মন্ডলের চিংড়ি ঘেরে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটে। চরবানিয়ারী ইউনিয়নের শ্যামপাড়া গ্রামের আনন্দ বৈরাগী, সুকুমার বৈরাগী, সঞ্জয় বৈরাগী, মৃনাল বালা, বিভাষ মন্ডল, কামরুল ইসলাম সুমন, ব্রহ্মগাতী গ্রামের স্বপন হালদারের চিংড়ি ঘেরে বিষ দিয়ে দুর্বৃত্তরা মাছ লুটে নিয়েছে। এসব চাষীরা এখন হাপিত্যেশ করছেন। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র মন্ডল জানান, বিষ প্রয়োগের অধিকাংশ ঘটনা থানায় অভিযোগ হয় না। তারপরেও দুর্বৃত্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘেরে বিষ প্রয়োগের ঘটনা প্রতিরোধে চাষীদের চিংড়ি ঘেরে পাহারা বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কমিউনিটি পুলিশিং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
×