ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু, ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৯ মার্চ ২০১৭

চট্টগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু, ভাংচুর

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে পাহাড়তলী সেগুনবাগান তালিমুল কোরান মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগের শিশু ছাত্র ইশমাম হায়দার (১১) নিহতের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে, মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় মাদ্রাসায় ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এ ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ৯টার আগে যে কোন সময় মাদ্রাসায় ইশমাম হায়দার নিহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু বিকেল ৫টায় হেফজখানার শিক্ষকের পক্ষ থেকে ইশমামের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে অভিযোগ করা হয়েছে সে মাদ্রাসায় নেই। এমনকি মাদ্রাসা থেকে কোন এক সময় পালিয়ে গেছে। এ কথা শুনে ইশমামের ভাই ও মা মাদ্রাসায় আসেন। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বিকেলের পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না, এমনকি মাগরিবের নামাজেও সে অংশ নেয়নি। সন্ধ্যার পর হেফজখানায় পড়তে বসার কথা থাকলেও সেখানেও সে অনুপস্থিত ছিল। কর্তৃপক্ষের এসব কথা শুনে পরিবারের সদস্যদের বিশ্বাস হচ্ছিল না। ফলে তারা মাদ্রাসার কোন কক্ষে ইশমাম লুকিয়ে আছে কিনা এমন সন্দেহে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মাদ্রাসার বেডিং কক্ষে কয়েকটি তোষক ও বালিশের নিচে তাকে খুঁজে পায়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কর্তৃপক্ষ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। পরে দ্রুত তাকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সেগুনবাগান বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাদ্রাসায় হামলা চালায়। মাদ্রাসার প্রধান ফটকসহ বেশকিছু দরজা জানালা ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলশী থানার ওসিসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনে। মাদ্রাসা ছাত্রের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় পরিচালনা কমিটি বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ইশমামকে খুঁজে না পাওয়ার পর কর্তব্যরত শিক্ষক ইশমামের পরিবারকে বিষয়টি জানায়। শিক্ষকরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যরা ইশমামকে যেখানে পেয়েছে সেটি ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি জায়গা। সেখানে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা ঘুম থেকে উঠার পর তাদের বিছানাপত্র ওই জায়গায় ফেলে রাখত। আবার ঘুমানোর সময় হলে সেখান থেকে নিয়েই ঘুমিয়ে পড়ত। তার সঙ্গে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী ইশমাম কম্বল মুড়িয়ে ওই স্থানে ঘুমিয়ে পড়ে। পরক্ষণে বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা ঘুম থেকে উঠার পর তাদের ব্যবহৃত কম্বল তোষক ইত্যাদি ওই স্থানে জড়ো করে। পরবর্তীতে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত অন্য শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। অভিভাবকদের জানানোর পর ইশমামকে যখন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অচেতন অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আকস্মিক এ মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়রা মাদ্রাসা ভাংচুর করে বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি। এমনকি ছাত্র-শিক্ষকদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মাদ্রাসা পরিচালক হাফেজ মোঃ তৈয়ব লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
×