ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন শুরু হচ্ছে কাল

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৯ মার্চ ২০১৭

জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন শুরু হচ্ছে কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘মৃত্যুরে করিবে তুচ্ছ প্রাণের উৎসাহ’ প্রতিপাদ্যে শাহবাগের জাতীয় গ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন। জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ আয়োজিত ষড়ত্রিংশতম বার্ষিক এ অধিবেশন চলবে ১২ মার্চ পর্যন্ত। সকাল সাড়ে ৯টায় তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন শিল্পী রফিকুন নবী। এ উপলক্ষে ছায়ানটের রমেশচন্দ্র দত্ত স্মৃতি মিলনকেন্দ্রে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সহ-সভাপতি আ ব ম নূরুল আনোয়ার, মঈন উদ্দিন নাজির, বুলবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা, মিতা হক ও কোষাধ্যক্ষ লিলি ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে সম্মেলন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন লাইসা আহমদ লিসা। তিনি বলেন, এ অধিবেশনে অংশ নেবে দেশের নানা অঞ্চল থেকে পাঁচ শতাধিক শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠক। তিন দিনেরই সান্ধ্য অধিবেশন সাজানো হয়েছে গুণীজনের সুবচন রবিরশ্মি, আবৃত্তি, পাঠ, নৃত্য ও গান দিয়ে। উদ্বোধনী পর্ব শুরু হবে ‘সর্ব খর্বতারে দহে তব ক্রোধদাহ’ বোধনসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ১১ মার্চ বিকেল ৫টায় থাকবে সেমিনার। এতে ‘সভ্যতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ লিখেছেন ভূঁইয়া ইকবাল। আলোচক থাকবেন ডাঃ সারওয়ার আলী ও মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করবেন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন। অন্যবারের মতো এবারের প্রধান আকর্ষণ জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতা ১৪২৩’র চূড়ান্ত মঞ্চায়ন। প্রাক সম্মেলন কার্যক্রম হিসেবে গ্রন্থাগার চত্বরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে কিশোর বিভাগ ও সাধারণ বিভাগের জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব। কিশোর ও সাধারণ বিভাগের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা হবে যথাক্রমে আগামীকাল দুপুর আড়াইটায় ও ১২ মার্চ সকাল ১০টায়। তৃতীয় দিন ১২ মার্চ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি। সকাল ১০টায় থাকবে প্রতিনিধি সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হবে সমাপনী অধিবেশন। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে মানপ্রাপ্ত প্রতিযোগীদের সনদ ও পুরস্কার এবং গুণী তবলাশিল্পী মদন গোপাল দাস ও পটশিল্পী শম্ভু আচার্যকে গুণীজন সম্মাননা জ্ঞাপন ও রবীন্দ্রপদক প্রদান করবেন প্রধান অতিথি। সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠিত ॥ আনুষ্ঠানিকভাবে দসিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ প্রদান করা হয় চ্যানেল আই ভবনে বুধবার দুপুরে। আনন্দঘন আর উৎসবমুখর পরিবেশে প্রবীণ ও নবীন লেখকদের উপস্থিতিতে এবার ১০ লেখকের হাতে তুলে দেয়া হয় এ পুরস্কার। সদ্য শেষ হওয়া অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত সেরা বইয়ের জন্য দেয়া হয় এ পুরস্কার। নবমবারের মতো এ পুরস্কার দেয়া হয় দুটি শাখায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং সিটিব্যাংক এনএর কান্ট্রি ট্রেজারার ও মার্কেট চীফ সাজেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুর আগে পুরস্কারের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন আনন্দ আলো সম্পাদক রেজানুর রহমান। এবার ‘ক’ শাখায় প্রবন্ধ, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা বিভাগে অনন্যা থেকে প্রকাশিত ‘উনিশ শতকে পূর্ববঙ্গে ব্রাহ্ম আন্দোলন’ গ্রন্থের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, কবিতায় যৌথভাবে আবিষ্কার থেকে প্রকাশিত ‘জো’ কাব্যগ্রন্থের জন্য কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও জার্নিম্যান থেকে প্রকাশিত ‘সাত দেশের কবিতা’ অনুবাদ কাব্যগ্রন্থের জন্য কবি মুহাম্মদ সামাদ, শিশুসাহিত্যে (যৌথভাবে) কিশোর উপন্যাসে ‘হাশেম খানের ছবির গল্প মধুবক’ গ্রন্থের জন্য হাশেম খান ও ছড়ায় চন্দ্রাবতী এ্যাকাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘লাল জেব্রার ম্যাজিক’ ছড়াগ্রন্থের জন্য ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, উপন্যাসে যৌথভাবে প্রথমা থেকে প্রকাশিত ‘প্রিয় এই পৃথিবী ছেড়ে’ গ্রন্থের জন্য কথাশিল্পী আনিসুল হক ও কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত ‘ডুগডুগির আসর’ গ্রন্থের জন্য কথাশিল্পী প্রশান্ত মৃধাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে (জীবনের প্রথম বই) সময় থেকে প্রকাশিত ‘প্রকাশকনামা ও হুমায়ূন আহমেদ’ গ্রন্থের জন্য ফরিদ আহমেদ, কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত ‘মেঘ ও বাবার কিছু কথা’ গ্রন্থের জন্য দ্বিতীয় সৈয়দ হক ও অনন্যা থেকে প্রকাশিত ‘নীল ফড়িং কাব্য’ গ্রন্থের জন্য শানারেই দেবী শানু পুরস্কৃত হয়েছেন। ‘ক’ শাখায় প্রতিটি পুরস্কারের মূল্যমান ৩০ হাজার টাকা ও একটি ক্রেস্ট আর ‘খ’ শাখায় পুরস্কারের মূল্যমান ১০ হাজার টাকা ও একটি ক্রেস্ট। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কথাশিল্পী আনোয়ার সৈয়দ হক, অনন্যার প্রকাশক মনিরুল হক, কথা প্রকাশের স্বত্বাধিকারী জসিম আহমেদ প্রমুখ। সিটি ব্যাংক এনএর সহায়তায় ২০০৮ সালে এই পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। আচার্য জয়ন্ত বোসকে সংবর্ধনা প্রদান : সুর সাধনার মধ্য দিয়ে সোনার বাংলা নয় শুধু, চাইলে সোনার পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় কিংবদন্তি শিল্পী জয়ন্ত বোস। বীণকার মিউজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রদান করা হয় বীণকার মিউজিক্যাল এ্যাওয়ার্ড। এ্যাকাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নাট্যজন শংকর সাওজাল এবং এ্যাকাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগের পরিচালক সোহরাব হোসেন। সংবর্ধনা ও পুরস্কার প্রদান করেন সংগঠনের অধ্যক্ষ ও সভাপতি পঙ্কজ বোস। সংবর্ধনা গ্রহণ করে আচার্য্য জয়ন্ত বোস বলেন, সঙ্গীত সাধনার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সরলতা ও উদারভাব এবং মানবিকতাবোধ জাগ্রত হয়। বাংলাদেশে আসতে পেরে আনন্দিত হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে এ দেশের সঙ্গে যোগাযোগ আরো বাড়াতে আগ্রহী আমি। আমি সোনারোদ এবং সোনার বাংলার কথা বহুবার শুনেছি। সোনারোদের স্বাদ উপভোগের সুযোগ হলেও এই প্রথম সোনার বাংলার মানুষের সান্নিধ্যে আসতে পারলাম। এ আমার এ পরম সৌভাগ্য। সভাপতির বক্তব্যে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, আচার্য্য জয়ন্ত বোস শুধু সঙ্গীত জগতে নিজের প্রজ্ঞা ও দক্ষতার পরিচয় দেননি, একইসাথে একজন বলিষ্ঠ সঙ্গীত বোদ্ধা হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। এ সময় তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের জন্য আচার্য্য জয়ন্ত বোসকে আমন্ত্রণ জানান। অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে তিনদিনব্যাপী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতবিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। বীণকার মিউজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। নারী নাট্যজন-নাট্যকর্মী সংবর্ধনা : ‘নারীজন্ম ধন্য হোক আপনভাগ্য গড়ার অধিকারে’Ñ সেøাগানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নাটক মঞ্চায়ন ও গুণীজন সম্মাননা প্রদান করে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদল। শিল্পকলা এ্যাকাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রদান করা হয় নাট্যজন আইরিন পারভীন লোপাকে। এছাড়া সংবর্ধনা দেয়া হয় স্বপ্নদলের নিয়মিত নারী নাট্যকর্মীদের। সব শেষে মঞ্চায়ন হয় স্বপ্নদলের সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘হেলেন কেলার’।
×