ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক

কুমিল্লা সিটি নির্বাচন ইসির জন্য আরেকটি পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৯ মার্চ ২০১৭

কুমিল্লা সিটি নির্বাচন ইসির জন্য আরেকটি পরীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দায়িত্ব নিয়ে প্রথমবারের মতো আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসছে ইসি। কুমিল্লার পাশাপাশি সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। এছাড়াও অন্য চার কমিশনারও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রধানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আগামী ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচন। ইতোমধ্যে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের জন্য মেয়র ও কাউন্সিলর পদে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৪ মার্চ প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ পাবেন। প্রত্যাহার শেষেই প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতীক নিয়ে তারা নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়বেন। দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হওয়ায় এবং আওয়ামী লীগ ও বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রার্থী অংশ নেয়ায় এ নির্বাচন মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা সিটি নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্যও এক ধরনের পরীক্ষা। কমিশন জানিয়েছে, মেয়র পদে এ সিটিতে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদিও ৫ জন প্রার্থী মেয়র পদে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু বাছাইয়ে ২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেয়া হয়েছে। তিন জন প্রার্থীর মধ্যে ২ জন নারী ও একজন পুরুষ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এর মধ্যে ক্ষমতসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আঞ্জুম সুলতানা এবং বিএনপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোঃ মনিরুল ইসলাম সাক্কু। যিনি এ সিটির সদ্য সাবেক মেয়র। আইন অনুযায়ী মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি পুনরায় নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বিএনপি থেকে তাদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দেয়া হয়েছে। অপর প্রার্থী শিরিন আকতারও এ সিটিতে মেয়র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে যাতে কোন প্রকার বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও যে কোন মূল্যে নিরপেক্ষতা বজায় রাখারও নির্দেশা দেয়া হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা সিটি নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে কোন ধরনের ভিজিডি কার্ড ইস্যু করাসহ নতুন কোন প্রকার অনুদান ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ না করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে জরুরী ভিত্তিতে কোন প্রকার ত্রাণ বা অনুদান বিতরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে তা নির্বাচন কমিশনের সম্মতিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তা বিতরণের জন্য বলা হয়েছে। ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, কুমিল্লা সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কমিশন খুবই কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, দলীয় ভিত্তিতে হওয়ায় এবং নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশ গ্রহণ থাকায় এ নির্বাচন হবে প্রতিযোগিতামূলক। এ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ যেমন থাকবে, তেমনি ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি হবে। ৯ মার্চ কুমিল্লা সিটি নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কমিশন খুবই কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান ইসি সচিব। কুমিল্লা সিটি নির্বাচন হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বড় কোন নির্বাচন। যা আগামী ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে তাদের অধীনে গত ৬ মার্চ ১৪ উপজেলায় এবং ৪টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছোট পরিসরে হলেও নির্বাচন নিয়ে কোন মহল থেকে কোন ধরনের অভিযোগ ওঠেনি। এছাড়া আগামী ২২ মার্চে অনুষ্ঠিত হবে গাইবান্ধা ১ আসনের উপ-নির্বাচন। ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের পাশাপাশি ওইদিন সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচনেও ভোট গ্রহণ করা হবে।
×