ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেপোলিকে নাচিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ৯ মার্চ ২০১৭

নেপোলিকে নাচিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রত্যাশিত জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে নেপলসের স্টাডিও সান পাওলোতে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে অতিথি রিয়াল ৩-১ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলিকে। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রথম লেগের ম্যাচেও একই ব্যবধানে জিতেছিল আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দুই লেগ মিলিয়ে তাই ৬-২ গোলের বিশাল জয় নিয়ে টানা সপ্তমবারের মতো ইউরোপ সেরার আসরের শেষ আটের টিকেট পেয়েছে গ্যালাক্টিকোরা। প্রথম লেগে ৩-১ গোলের জয়ের পর শেষ আটে ওঠাটা রিয়ালের জন্য অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। তবে ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে প্রথমে গোল করে অবশ্য ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল নেপোলি। কিন্তু সার্জিও রামোস ও মোরাতার নৈপুণ্যে কোন অঘটন ঘটেনি। প্রত্যাশিত জয় নিয়েই পরের পর্বে উঠেছে জিনেদিন জিদানের দল। সাও পাওলোতে শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে নেপোলি। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা দলটি বারবারই রিয়ালের রক্ষণভাগে ত্রাস ছড়ায়। গোলের জন্যও খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি স্বাগতিকদের। ম্যাচের ২৪ মিনিটে বেলজিয়াম ফরোয়ার্ড ড্রাইস মারটেন্সের গোলে এগিয়ে যায় দিয়াগো ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব। হামসিকের পাসে বল পেয়ে কোনাকুনি শটে কেইলর নাভাসকে পরাজিত করেন তিনি। এক গোলে এগিয়ে থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে প্রথম লেগে হারা দলটি। আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় লরেঞ্জো ইনজাইনরা। এই অর্ধে অবশ্য সমতায় ফিরতে পারত রিয়াল। তবে সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে এলে হতাশ হয় মাদ্রিদের দলটি। ৩৭ মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন মারটেন্স। কিন্তু তার নেয়া দারুণ শট অল্পের জন্য গোলবার ঘেঁষে বাইরে যায়। বিরতির পর জেগে ওঠে রিয়াল। আক্রমণের ধার বাড়ান রোনাল্ডো-বেল-বেনজামারা। এর ফলও পেয়ে যায় দলটি। টনি ক্রুসের কর্নারে হেড করে দলকে সমতায় ফেরান রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস। এর ছয় মিনিট পর আবার গোল করেন রামোস। এটা অবশ্য ছিল আত্মঘাতী গোল। এবারও গোলটি আসে কর্নার থেকে। আগেরবার ডানপ্রান্ত থেকে শট নেয়া ক্রুস এবার বাঁপ্রান্ত থেকে কর্নার কিক করেন। দারুণ হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন রামোস। তার আগে অবশ্য নেপোলির মারটেন্সের মাথা ছুঁয়ে যায় বল। যে কারণে দু’দলের হয়েই গোল করেন এই বেলজিক। খেলার একেবারে শেষ মূহূর্তে রিয়ালের হয়ে শেষ গোলটি করেন আলভারো মোরাটা। বাঁপ্রান্ত থেকে রোনাল্ডোর শট রুখে দেন নেপোলির গোলরক্ষক। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ফিরতি শটে গোল করেন মোরাটা। প্রথমবারের মতো শেষ আটে পৌঁছাতে হলে নেপোলিকে অলৌকিক কিছু করে দেখাতে হতো। বিশেষ করে ফুটবল পাগল ইতালীয় এই দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরে একটি অঘটনের অপেক্ষায় ছিল সবাই। প্রথমার্ধে মরিজিও সারির দল রিয়ালের পোস্টে ১১টি শটও নেয়। রিয়ালের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের জুভেন্টাসের হয়ে ১৫টি শটের থেকে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কিন্তু মারটেন্স, লোরেনজে ইনসিগনে কিংবা হামসিক রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে কাবু করতে পারেননি। অথচ প্রায় ৫৭ হাজার দর্শকপূর্ণ উদ্যোমে পুরোটা ম্যাচে আজ্জুরিদের সমর্থন যুগিয়ে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত তা বিফলে গেছে। ম্যাচ শেষে নেপোলি কোচ মরিজিও সারি বলেন, ডেড বল পরিস্থিতিতে রামোস বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। চলতি বছর একইভাবে সে সাত থেকে আটটি গোল করেছে। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় গোলটিতেই মূলত আমরা লড়াই থেকে ছিটকে পড়ি। আমাদের হয়তবা আরও আগ্রাসী হওয়া উচিত ছিল। এটা আমাদের জন্য একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা। কারণ ৫৫ মিনিট পর্যন্ত আমরা ভাল অবস্থায় ছিলাম। খারাপ লাগছে সমর্থকদের প্রত্যাশাটা একটু বেশি ছিল। এজন্য আমরা তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। কারণ আমরা মনে করি তাদের জন্য আরও কিছু দেয়াটা আমাদের উচিত ছিল। কিন্তু এটাও ভাবতে হবে রিয়াল বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। শারীরিকভাবেও তারা আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। আর রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, জিততে পেরে আমরা খুশি। প্রথমার্ধে আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। এই সময়ে নেপোলি আমাদের ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি।
×