ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ সড়কে যন্ত্রদানব

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ৯ মার্চ ২০১৭

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ সড়কে যন্ত্রদানব

পরিবহন শ্রমিকরা ঘাতক নয় সেবক। আমি একজন পরিবহন শ্রমিক হিসেবে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমার শ্রম ও পেশাগত জীবনের আলোকে দেখেছি পরিবহন শ্রমিকরা অবহেলিত। প্রতিদিন দেশের আনাচে-কানাচে বিভিন্নভাবে অনেক পরিবহন শ্রমিক নির্যাতিত হচ্ছে, দুর্ঘটনার মাধ্যমে চিকিৎসার অভাবে স্থায়ী পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। নতুবা মৃত্যুবরণও করছে। এর হিসাব কত ভয়াবহ, কত মর্মান্তিক, একমাত্র শ্রমিকরাই জানে। পরিবহন পেশাটা প্রতিনিয়ত জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি অথচ পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক নিশ্চয়তা ও মৃত্যু ঝুঁকি নিরাপত্তার জন্য কোন সুব্যবস্থা আজও সরকারী বা বেসরকারীভাবে গড়ে ওঠেনি। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে এ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে পরিবহন শ্রমিকরা। অথচ এদের কোন নিয়োগ পত্র নেই, নেই জীবন বীমা নেই কল্যাণমূলক কোন ফাউন্ডেশন। অথচ এই শ্রমিকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা। এরা দিনের বেলায় ট্রিপ ধরে ও গাড়ির ইঞ্জিন মেরামত করে সেবা করে। রাতের বেলায় তারা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত গন্তব্যে পৌঁছায়। যখনই দেশের রাজনৈতিক দল হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটের ডাকে জ্বালাও পোড়াও করে পেট্রোলবোমার মতো ঘাতক বোমা মারে তখনও পরিবহন শ্রমিকরা তাদের জীবনবাজি রেখে তাদের গাড়ি চালায়। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। যন্ত্রদানবদের থামানোর কী উপায়? যন্ত্রদানবদের থামানোর উপায় হলো যদি হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুশিল, ট্রাফিক সার্জেন্ট, ম্যাজিস্ট্রেট, বিআরটিএর ফিটনেস কর্মকর্তা ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ এরা যদি এদের কাজ ন্যায় ও সততা দিয়ে তাদের কাজ সম্পন্ন করে। টাকার বিনিময় অবৈধভাবে কাজ না করে বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত না হয়। যথাযথ প্রশিক্ষণ, এ দেশের সরকারী-বেসরকারীভাবে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা অরিজিনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স, পিএইচবি এবং পরিবহন শ্রমিকদের ১০ ঘণ্টা ডিউটি এ সব ব্যবস্থা করা হয়। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেয়া উচিত। সকল ড্রাইভিং ব্যবস্থায় সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা ন্যূনতম ৮ম শ্রেণী পাস বা শিক্ষগত যোগ্যতা থাকতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য একতরফা ড্রাইভারকে দায়ী করা চলবে না। সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করে মামলা করতে হবে। সড়ক মহাসড়কে ডিভাইডার ও লেন চালু করলে দুর্ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই কমে আসবে। দক্ষ সড়ক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। সড়ক নির্মাণে ত্রুটি ও ভাঙ্গাচোড়া সড়ক মেরামত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আসুন সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তুলি। মোহাম্মদপুর, ঢাকা থেকে
×