ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্যামসাং প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা

দঃ কোরিয়ার শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী মহলে শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৯ মার্চ ২০১৭

দঃ কোরিয়ার শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী মহলে শঙ্কা

ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট স্যামসাংয়ের কর্ণধার জে ওয়াই লি। পৈত্রিকসূত্রে তিনি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পান। ব্যক্তিগতভাবে দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার যথেষ্ট ভাল সম্পর্ক ছিল। এভাবেই চলছিল জে ওয়াই লির দিনকাল। এরপর পিতার মতো তিনিও মামলায় জড়িয়ে সংবাদ শিরোনাম হন। স্যামসাং গ্রুপের কার্যত প্রধান লি গত সপ্তাহে একটি ঘুষের মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। যার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম রাজনৈতিক কেলেঙ্কারির ঘটনা। তাকে হাতকড়া অবস্থায় ধরে নিয়ে যাওয়ার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ ঘটনা স্যামসাংয়ের সামগ্রিক ভাবমূর্তির জন্য নেতিবাচক। দেখা গেছে হাতকড়া পরানো অবস্থায় লিকে পুলিশ প্রসিকিউটরের দফতরের উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে তাকে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনাটি পুরো দেশকে নাড়া দিয়েছে। অনেকের ধারণা, যুদ্ধপরবর্তী দক্ষিণ কোরিয়া যেভাবে অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে লির দুর্নীতির মামলা এর জন্য এক বড় ধরনের ধাক্কা। মামলা মোকাবেলা করা স্যামসাংয়ের জন্য নতুন কোন বিষয় নয়। প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক সময়ে ১৯৬০ এর দশকে সুইটনার চোরাচালান মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিল কোম্পানিটি। এ নিয়ে ওই সময় এর কর্তাব্যক্তিদের খুব ব্যতিব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। তবে অল্পের ওপর দিয়ে তারা পার পেয়েছিলেন। লির পিতাও এভাবে কারাদ- এড়াতে পেরেছিলেন। কারণ, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট তার পক্ষে ছিলেন। প্রেসিডেন্টের কথা ছিল সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশটির অর্থনীতিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে স্যামসাংয়। প্রতিষ্ঠানটি কোন কারণে বন্ধ হয়ে পড়লে বহু লোক বেকার হয়ে তারা অর্থনীতির ওপর বোঝা হয়ে উঠবে। তবে এখন সময় ভিন্ন রকম। দুর্নীতির মামলায় লি কারারুদ্ধ থাকায় শিল্প বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দক্ষিণ কোরিয়ার বহু লোক এখন আতঙ্কিত। দেশটির রাজনীতি বর্তমানে অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন নেতৃত্বে যারা আসবেন তারা শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব বজায় রাখবেন। ধনী লোকদের অন্যায় করে সহজে ছাড়া পেয়ে যাওয়ার বিষয়টিও সাধারণ মানুষ আর ভালভাবে নিচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, কোম্পানির ওপর পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতেই লি ঘুষ দিয়েছিলেন। বাণিজ্য জগতের শীর্ষস্থানীয়রা সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িত; লির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ধনিক শ্রেণী সম্পর্কে প্রচলিত সর্বসাধারণের ধারণা আরও বদ্ধমূল হবে। কেলেঙ্কোরির জেরে প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইয়ের সরকার এখন টালমাটাল অবস্থায়। অবশ্য লি ও তার প্রতিষ্ঠান উভয়ই যে কোন ধরনের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। -নিউইয়র্ক টাইমস
×