ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওপরে জাপানী ক্লাবের সাইনবোর্ড, নিচে উদ্দাম নৃত্য, অবৈধ মাদক ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৮:২১, ৮ মার্চ ২০১৭

ওপরে জাপানী ক্লাবের সাইনবোর্ড, নিচে উদ্দাম নৃত্য, অবৈধ মাদক ব্যবসা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ওপরে জাপানী ক্লাবের সাইনবোর্ড। নিচে আর্মড পুলিশ। এমন নিরাপত্তা থাকলে কার সাধ্য সেখানে হানা দেয়ার কথা ভাবে বা কোন ধরনের প্রশ্ন তোলে। জাপানী ক্লাবের আড়ালে ওই ফ্ল্যাটে সেখানে গভীর রাতে চলে অবৈধ মাদক ব্যবসা, উদ্দাম নৃত্য ও বেলেল্লাপনা। যেখানে নেই একজনও জাপানী কিংবা অন্য কোন বিদেশী। ঘটনাস্থল উত্তরার গরিবে নেওয়াজ রোডের ১৮নং মোস্তাফা টাওয়ার। সোমবার গভীর রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, উত্তরার সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম ও পরিদর্শক কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে হানা দেয়। প্রথমে তাদের বাধা দেয়া হয়। পরিচয় দেয়ার পর তারা দ্রুত উঠে যান সাত তলায়। সেখানে এক দফা নিরাপত্তাকর্মীর বাধার মুখে পড়েন। পরিচয় দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই যা দেখলেন তাতে মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম। আলো আঁধারিতে উদ্দাম নৃত্য আর হিন্দীগানের সুরে মাতোয়ারা সবাই। মঞ্চে দাঁড়ানো জনা বিশেক অর্ধবসনা তরুণী। তাদের সামনে সাজানো মদ ও বিয়ার। এক পাশে উন্মুক্ত বক্ষের তরুণীর বাহুবন্ধনে এক মাতাল যুবক। তার সামনে টাকা উড়াচ্ছে মদে মত্ত নাগরেরা। মাদকের টিম এক পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ পর সামনে যেতেই টনক নড়ে ওঠে বার এটেন্ডারের। তিনি ঘোষণা দেন, মিউজিক স্টপ। আর কোন ড্রিংঙ্কস সার্ভ করা হবে না। যারা টের পেলেন, তাদের ক’জন দৌড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এমন পরিবেশেই চালানো হয় অভিযান। পেছনের একটি রুম থেকে বের করে আনা হয় ৮০ বোতল বিলেতি মদ ও ৪শ’ ক্যান বিয়ার। এগুলোর লাইসেন্স আছে? কিছুই জবাব দিতে পারেনি ক্লাবের মালিক দাবিদার আব্দুল জব্বার। এখানে কোন জাপানী আছে? এ প্রশ্নের জবাবেও চুপ থাকেন। তাহলে কিভাবে গভীর রাতে এ ধরনের অবৈধ মাদকের আসর জমান। এসব প্রশ্নের কোন জবাব দিতে না পারায় তাকে আটক করা হয়। অর্ধবসনা তরুণীরা কি জন্য এত রাতে এখানে জানতে চাইলে লিমার জবাব, আমি ভার্সিটিতে পড়ি। টাকার জন্য প্রতিরাতে এখানে আসি। পার্টটাইম কাজ করি। তাতে রাতে হাজার তিনেক টাকা পাই। তাই দিয়ে সংসার ও লেখাপড়ার খরচ চালাই। এসব তরুণীর অভিভাবকদের খবর দেয়া হলে অনেকেই এসে মেয়েদের অপকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তারা আর এমন কাজে লিপ্ত হবে না এমন মুচলেকা দিয়ে মেয়েদের নিয়ে যান। এদিকে আব্দুল জব্বারকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরা পশ্চিম থানায়। সেখানে জাপানী ক্লাবের আড়ালে অবৈধ মদ ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নং ৯)।
×