ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাহিয়ান দ্বীপ

সময় এখন মারের

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৮ মার্চ ২০১৭

সময় এখন মারের

গত কয়েক মৌসুম ধরেই টেনিস বিশ্বের আলোচিত নাম এ্যান্ডি মারে। অসাধারণ পারফর্মেন্স উপহার দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। গত মৌসুমেও টেনিসের মেজর চার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছেন তিনটিতে। পেয়েছেন উইম্বলডন জয়ের স্বাদও। ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা দুইবার অলিম্পিকের স্বর্ণপদকও জিতেছেন এ্যান্ডি মারে। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানও দখল করেছেন গ্রেট ব্রিটেনের এই টেনিস তারকা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাও নিজের শোকেসে তুলেছেন এ্যান্ডি মারে। গত বছরের ৭ নবেম্বর র‌্যাঙ্কিংয়ের চূড়ায় উঠেন ব্রিটেনের এই টেনিস তারকা। কিন্তু চলতি মৌসুমের শুরুতে অবশ্য নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারছিলেন না তিনি। অবশেষে শনিবার দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে এ্যান্ডি মারে ৬-৩ এবং ৬-২ সেটে পরাজিত করেন ফার্নান্দো ভার্দাস্কোকে। প্রতিপক্ষকে হারাতে মারে এদিন সময় নেন মাত্র এক ঘণ্টা ১৪ মিনিট। শুধু তাই নয়, ২৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্রিটেনকে দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা উপহার দেন তিনি। এতে দারুণ রোমাঞ্চিত মারে। এ প্রসঙ্গে স্কটিশ তারকা বলেন, ‘এখানে প্রথম শিরোপা জিতে অবশ্যই আমি খুব আনন্দিত।’ ২০১৭ সালে এটাই মারের প্রথম শিরোপা। যা তার ক্যারিয়ারের ৪৫তম। এর আগেও দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। ২০১২ সালে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার! সেবার শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডের জীবন্ত কিংবদন্তি রজার ফেদেরারের কাছে হার মানেন তিনি। এবার আর ভুল করলেন না মারে। প্রথমবারের মতো দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে আনন্দে উদ্বেলিত ২৯ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ। নিজের পারফর্মেন্সেও দারুণ তৃপ্ত তিনি। এ ব্যাপারে মারে বলেন, ‘শিরোপা জিততে পারাটা সব সময়ই আনন্দের। যদিওবা ম্যাচের শুরুটা খুব ধীরগতিতেই করেছিলাম। তার ফোরহ্যান্ড আক্রমণে কখনই ভয় পায়নি। এটা কোনভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ফোরহ্যান্ড আক্রমণে সে সেরাদের একজন। কিন্তু কোর্টে আমিও সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা করেছি।’ উইম্বলডনের চ্যাম্পিয়ন এবং রিও অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের ফলশ্রুতিতেই বছরের শেষ দিকে প্রথমবারের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ের পুরুষ এককের শীর্ষস্থান দখল করেন এ্যান্ডি মারে। কিন্তু মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অবশ্য নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। মেলবোর্নের চতুর্থ পর্ব থেকেই বিদায় নেন স্কটিশ তারকা। তবে দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপেই নিজের জাত চেনালেন তিনি। ফার্নানেদা ভার্দাস্কোকে হারানোর ফলে জোকোভিচের সঙ্গে তার র‌্যাঙ্কিংয়ের পয়েন্টের ব্যবধানটাও আরও বেড়েছে। সোমবার প্রকাশিত সর্বশেষ র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী মারের সংগ্রহে ১২০৪০ পয়েন্ট। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা নোভাক জোকোভিচের দখলে ৯৮২৫ পয়েন্ট। এই তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান স্টানিসøাস ওয়ারিঙ্কার সংগ্রহে ৫১৯৫ পয়েন্ট। তবে ফ্রেঞ্চ ওপেনের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মারের কাছ থেকে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান কেড়ে নেয়ার সম্ভাবনা নেই কারও। শুধু তাই নয়, দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ফলে এ্যান্ডি মারের আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গেছে বহুগুণে। আগামী সপ্তাহে মারে ক্যালিফোর্নিয়াতে কোর্টে নামবেন। সেখানে তার লক্ষ্য নিজের সেরাটাই ঢেলে দেয়া। এদিকে টেনিসকে নাকি এখন আর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন না সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা নোভাক জোকোভিচ! খেলার চেয়ে নিজের পরিবারকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন সার্বিয়ান আইকন। অগ্রাধিকার তালিকায় এক নম্বরে না রাখলেও যথাসম্ভব সর্বোত্তম স্বামী, বাবা ও টেনিস খেলোয়াড় হতে চান তিনি। ২০১৪ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো বাবা হওয়ার পর থেকেই জোকোভিচের মনোভাবে এমন পরিবর্তন। সেটিই সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে প্রকাশ করেছেন ১২টি গ্র্যান্ডসøামের মালিক। এ বিষয়ে জোকোভিচ বলেন, ‘টেনিস আমার এক নম্বর অগ্রাধিকার ছিল, যখন স্টিফান (স্টিফান জোকোভিচ) জন্মগ্রহণ করেনি। এখন এটা সম্পূর্ণ বিপরীত। আমার একটি ছেলে, স্ত্রী এবং পরিবার রয়েছে। বাবা হতে পেরে আমি খুবই কৃতজ্ঞ। আমি এমন একটি অবস্থানে আছি যেখানে সম্ভাব্য সর্বোত্তম স্বামী, বাবা ও টেনিস খেলোয়াড় হওয়ার চেষ্টা করছি। এটা চ্যালেঞ্জিং কিন্তু অসম্ভব নয়।’ এ সময় তিনি আরও বলেন ‘সবাই নিজেদের সেরাটা হওয়ার চেষ্টা করেন। আমার ক্ষেত্রেও তাই। একই সময়ে, আমি অন্যদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দিতে পারব না। কিন্তু, সব সময়ই নিজের সেরাটা দিতে সক্ষম।’
×