ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি অস্তিত্বের প্রয়োজনেই নির্বাচনে আসবে ॥ ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৮ মার্চ ২০১৭

বিএনপি অস্তিত্বের প্রয়োজনেই নির্বাচনে আসবে ॥ ওবায়দুল কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে নিয়ে আসার প্রয়োজন নেই। বিএনপি তার অস্তিত্বের প্রয়োজনেই নির্বাচনে আসবে। মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রসঙ্গে ‘ফখরুল সাহেব কখনও গুলশানের চাপে, কখনও টেমস নদীর তীর থেকে আসে চাপ। সেই চাপে তিনি (ফখরুল) এমন সব কথা বলেন যা শুনে শিহরিত হই। আমরা নাকি ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে আনতে চাই। কি কারণে? আমাদের দরকারটা কী? আমাদের কী প্রয়োজন বিএনপিকে ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে নিয়ে আসার? বিএনপি তার অস্তিত্বের প্রয়োজনেই নির্বাচনে আসবে।’ সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতিতে কোন রাজনৈতিক দল অপ্রাসঙ্গিক থাকতে চায় না। আরেকটা নির্বাচন না করলে বিএনপি কতটা অকার্যকর, অপ্রাসঙ্গিক এবং অস্তিত্বের দিক থেকে কতটা ঝুঁকিতে পড়বে এটা তাদের নেতারা ভাল করেই জানেন। নির্বাচনের এখনও দেড় বছর বাকি। আমি জানি নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত বিএনপি ভাঙ্গা রেকর্ডটা বাজাবে। নির্বাচনে অংশ নেবে, আবার ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাবে।’ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদের কেউ ভয় দেখাতে হয় না। আপনারা আপনাদের ঘরেই ভয়ের কারণ সৃষ্টি করেছেন। আপনাদের নেতা নেতাকে বিশ্বাস করে না। অফিসের মধ্যে মারামারি করে। একজন আরেকজনকে বলে সরকারের এজেন্ট। কেউ বলে আওয়ামী লীগের এজেন্ট, কেউ বলে সরকারের এজেন্ট।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপি হচ্ছে ক্ষমতার দল। ক্ষমতা না থাকলে বেপরোয়া হয়ে যায়। হারানো সিংহাসন ফিরে পাওয়ার জন্য একেবারে বেসামাল, বেপরোয়া বিএনপি। জল ঘোলা করে গাধা পানি খায়। আপনাদের শত্রু আওয়ামী লীগ নয়। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না। আওয়ামী লীগ বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। ‘তোমারে বোধিবে যে গোকূলে বাড়িছে সে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষাক্ত আলিঙ্গনে আপনারা। এই আলিঙ্গন ছিন্ন করতে না পারলে আপনারা দল হিসেবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবেন।’ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের এক সঙ্গে দুটো কাজ করতে হবে। এক চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং তাদের দোসররা। তারা কিন্তু এখনও হুমকি হয়ে আছে। এখনও তারা তলে তলে ভয়াবহ আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা যদি মনে করি তারা দুর্বল হয়ে গেছে, নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে, আমরা তাহলে ভুল করছি। এর মাশুল আমাদের দিতে হবে। একূল-ওকূল কোনটাই সামলাতে পারবেন না। একদিকে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা আরেকদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি। সময় অত্যন্ত কম। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর বার বার বলেছি পূর্ণাঙ্গ কমিটির কথা। তারা সর্বশেষ উদ্যোগ নিয়েছে, কমিটি গঠনের জন্য সাব কমিটি। তাহলে কমিটি কবে গঠিত হবে? কমিটির একটা ডেট লাইন ঠিক করুন। দল এখন যে একটা চাঙ্গা চাঙ্গা ভাব। পকেট কমিটি যেন না হয়। কে কার ভক্ত, কে কার অনুগত এই বিবেচনায় ত্যাগী কর্মীদের দূরে ঠেলে দেবেন না। সেটা দলের জন্য শুভ হবে না। নেতায় নেতায় ভাগাভাগি করে পকেট ভারি করতে গিয়ে বাইরের পরগাছাদের কোন সুযোগ দেবেন না। এটা আমার অনুরোধ আপনাদের কাছে। এই চাঙ্গাভাব দীর্ঘদিন ধরে রাখতে হবে সাংগঠনিক শক্তি দিয়ে। আর মানবিক কারণে কাউকে নেতা বানানোর দরকার নেই। যার মানবিক দরকার তাকে আমরা সাহায্য করব। আমাদের নেত্রীর ভা-ার গরিব, অসুস্থ কর্মীদের জন্য ওপেন।’ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুর ইসলাম, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।
×