ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সর্বস্বান্ত কৃষক দিশেহারা

শার্শায় বাসমতি ধানে ভাইরাস

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৮ মার্চ ২০১৭

শার্শায় বাসমতি ধানে ভাইরাস

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের শার্শা এলাকায় ‘ব্যাস্ট’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শত শত হেক্টর জমির বাসমতি ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ভাল দামের আশায় সুগন্ধি এই ধান চাষ করেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু এখন বিপদে পড়লেও কৃষি অফিস থেকে কোন সহযোগিতা মিলছে না বলে কৃষকদের অভিযোগ। শার্শায় চলতি বোরো মৌসুমে ২১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ২০ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি বাসমতি ধান রয়েছে। ‘ব্যাস্ট’ নামে এক ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শত শত হেক্টর বাসমতি ধান নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার বেনাপোল, বাহাদুরপুর, লক্ষ্মণপুর, ডিহি, শার্শা ও উলাশীর বিভিন্ন এলাকায় রোগাক্রান্ত জমি বেশি। এ রোগে আক্রান্ত জমির ধানগাছের গোড়া ও শিকড় পচে যায়। ধানগাছের পাতায় ফোটা ফোটা কালো দাগ পড়েছে এবং পাতা লালচে হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে গাছ মরে যাচ্ছে। চাষীদের অভিযোগ, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরকে জানানোর পরও তারা কোন খোঁজ খবর নেয়নি। সময় মতো খোঁজখবর নিলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে পথে বসেছেন এ এলাকার কৃষকরা। লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নের চাষী ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে বাসমতি ধান চাষ করেছি। পুরোটাই আক্রান্ত হয়েছে ভাইরাসে। কোন ওষুধ দিয়েও সুফল পাচ্ছি না। স্বরূপদহ গ্রামের চাষী মজিবর রহমান, বাবলু, শাজাহান, গয়ড়া গ্রামের শওকত আলী বাসমতি ধানের আবাদ করেছেন। তাদের প্রত্যেকের জমিতে ‘ব্যাস্ট’ ভাইরাসের আক্রমণ ঘটেছে। তারা বলছেন, কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা আমাদের চেনেন না এবং খোঁজ খবরও নেন না। শার্শার বাসমতি চাষী কবীর উদ্দীন, হরিণাপোতা গ্রামের কবীর হোসেন, পান্তাপাড়ার আব্দুল খালেক জানান, তারা এই ধান চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাদের কোন পরামর্শ দেয়া হয়নি। কীভাবে চাষ করতে হয় তাও জানানো হয়নি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরককুমার সরকার বলেন, “উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কিছু কিছু বাসমতি ধানের জমিতে ‘ব্যাস্ট’ নামে এক ধরনের ভাইরাস দেখা দিয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত জমির ধানের গোড়া ও শিকড় পচে যায়, পাতা লালচে হয়ে যায়।” তিনি দাবি করেন, এ বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পরামর্শ গ্রহণ করে কৃষকরা ওষুধ ব্যবহার করছেন, সুফলও পাচ্ছেন। অফিসে জনবলের সংকট রয়েছে। এ কারণে কৃষকদের সঠিকভাবে সেবা দেয়া যাচ্ছে না। জনবল সংকট পূরণ হলে কৃষকদের কোন অভিযোগ থাকবে না’, বলেন এই কৃষি কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের উপ-পরিচালক কাজী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শার্শা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি আক্রান্ত বাসমতি ধানের প্রত্যেক জমি নিজ চোখে দেখে ও চাষিদের পরামর্শ দিতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আক্রান্ত জমিতে সিকিউর, এমিস্টারটব ও নাটিবু ওষুধ স্প্রে করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। একইসঙ্গে জমির পানিও শুকিয়ে ফেলতে হবে।
×