ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কার তাপমাত্রা নিয়ে চিন্তিত মুশফিক

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৭ মার্চ ২০১৭

শ্রীলঙ্কার তাপমাত্রা নিয়ে চিন্তিত মুশফিক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আজ গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট। সাগরের কোল ঘেঁষে অবস্থিত গলে ম্যাচের দিন থাকবে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা। অবশ্য এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য সহনীয়ই। কিন্তু বাতাসের আর্দ্রতা একেবারে কম থাকায় এর চেয়েও কম তাপমাত্রা অসহনীয়। ম্যাচ শুরুর আগে অধিনায়ক মুশফিকের কপালে তাই চিন্তার ভাঁজ। এই তাপমাত্রাকেই ভয়। তিনি মনে করছেন এমন কন্ডিশনে টস জেতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। টস জিতে ব্যাটিং করতে পারলে এই তাপমাত্রায় রোদের ভয়টা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হতে পারে। নয় তো পরে ব্যাটিং করলে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যাটসম্যানরা তেমন সুবিধা করতে পারবেন কিনা তা বড় এক শঙ্কা। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে সর্বশেষবার এসেছিল বাংলাদেশ দল। সেবার গল টেস্টে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে বড় এক ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ৪ বছর পর আবার সেই গলে একেবারে আগন্তুকের মতোই বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে তীব্র গরমটাই অনেক বড় সমস্যার কারণ। মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এখানে গরমটা অনেক। উইকেট একটু তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে যেতে পারে। এখানে স্পিনারদের ভাল সুযোগ থাকবে। সেই সঙ্গে শুরুতে ব্যাটসম্যানদের জন্যও ব্যাটিং করা সহজ হবে। ব্যাটসম্যানরা পরিকল্পনা মতো খেলতে পারলে এই উইকেটে অনেক রান সম্ভব। তবে উইকেটের থেকেও কঠিন হবে এখানকার গরম। এই গরমের মধ্যেও যেন ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে মাঠে নামা যায়, পাঁচটি দিন কীভাবে খেলা যায় সেটা চিন্তা করেই আমরা অনুশীলন করেছি। আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছি। একটা অনুশীলন ম্যাচও খেলেছি। দুই দলের জন্যই কষ্টকর হবে। তবে আশা করছি দ্রুততই মানিয়ে নিতে পারব।’ শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ অবশ্য মনে করছেন সফরকারী দলের কোচিং স্টাফে বেশ কয়েকজন শ্রীলঙ্কান থাকার কারণে মুশফিকদের জন্য সুবিধা হবে। প্রধান কোচ চান্দ্রিকা হাতুরাসিংহে, ট্রেনার ভিল্লাভারায়ন এবং ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবিরা আছেন। তাদের পরামর্শে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের গলের পরিবেশ ও উইকেট বুঝতে সহজ হবে। মুশফিক বলেন, ‘এই গরমের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই বেশিক্ষণ মাঠে থাকার চেষ্টা করেছি। এই গরমে আমাদের ক্রিকেট খেলতে হবে এবং সেখানে আমাদের ফিটনেসও ভাল থাকার একটা বিষয় আছে। শ্রীলঙ্কান কোচিং স্টাফ হিসেবে আমরা তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু সুবিধা পাচ্ছি। কিন্তু এটাই পুরো বিষয় নয়। আমাদের মাঠে ভাল খেলাটা নিশ্চিত করা জরুরী। তারা তাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা শেয়ার করে। সেই পরিকল্পনাগুলো মাঠে বাস্তবায়ন করাটাই হচ্ছে কথা।’ কিন্তু যত যাই হোক ঘরের মাঠে লঙ্কানরা দারুণ ভাল দল। তাদের বিপক্ষে ভাল করাটা খুব সহজ হবে না মুশফিকদের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা বর্তমানে তরুণ দল। কিন্তু ঘরের মাঠে তারা ভাল দল। তাদের বিপক্ষে জিততে গেলে আমাদের অনেক ভাল ক্রিকেট খেলেই জিততে হবে।’ এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারের ৫২ টেস্টের ৪৭টিতেই বাংলাদেশ দলের মূল উইকেটকিপার হিসেবে খেলেছেন মুশফিক। এর আগে ২০০৫ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের অভিষেক টেস্টে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছিলেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কাতেই ২০০৭ সালে প্রথমবার উইকেটরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব শুরু করেছিলেন। কিন্তু ২০০৬ সালে বগুড়ায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবং ২০১৫ সালে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন টেস্টে মুশফিক খেলেছিলেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে। সেই মুশফিকের দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারের বাঁক বদল হচ্ছে আজ। এবারও তিনি ফিল্ডার হিসেবে থাকবেন, গ্লাভস পরে উইকেটের পেছনে দাঁড়াবেন লিটন কুমার দাস। এ বিষয়ে মুশফিক বলেন, ‘আমি বার বার বলে এসেছি কিপিং সব সময় আমাকে সাহায্য করত। আমি উইকেটের পেছন থেকে বুঝতে পারতাম যে উইকেট কেমন আচরণ করবে। যা আমার ব্যাটিংয়ে অনেক সাহায্য করত। এখন একটু ভিন্ন অনুভূতি হচ্ছে। দল থেকে আমাকে যা করতে বলা হবে, আমি সেটাই করতে প্রস্তুত। উপরে ব্যাটিং করলে চেষ্টা করব যতটুকু সম্ভব ভূমিকা রাখতে।’
×