ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাঁদাবাজির উৎপাতে সড়কের কাজে স্থবিরতা

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ৭ মার্চ ২০১৭

চাঁদাবাজির উৎপাতে সড়কের কাজে স্থবিরতা

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌর শহরের ফিডার রোড-সামুদাবাদ সড়কের বেহালদশায় নাগরিক দুর্ভোগ চরম আকার নিয়েছে। উপজেলা পরিষদের সামনের এ ব্যস্ততম সড়ক কার্পেটিংয়ের জন্য ঠিকাদারকে এক বছর মেয়াদে কার্যাদেশ দেয়া হলেও ১৬ মাসেও তা শেষ হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, কয়েক নেতার চাঁদাবাজির কারণে ঠিকাদার সড়ক নির্মাণকাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, যে কারণে অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় সড়কটি অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেলে রাখা হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ অন্য অজুহাত দাঁড় করিয়েছে এবং শীঘ্র কাজটি সম্পন্ন হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা পরিষদের সামনের ফিডার রোড-সামুদাবাদ সড়কের ৬৯৫ মিটার অংশের এক দশমিক ১৯৫ কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিংয়ের কাজ করার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে কোস্টাল টাউন এনভায়রনমেন্টাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টের (সিটিইআইপি) আওতায় দুই কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই বছরের এক নবেম্বরে এমএম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কার্যাদেশে এক বছরের মধ্যে ওই সড়কের কাজ সম্পন্নের নির্দেশনা ছিল। সে অনুযায়ী গত বছরের নবেম্বর মাসে সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু কার্যাদেশ দেয়ার ১৬ মাস পার হয়ে গেলেও কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ইট তুলে ফেলায় এবং খোয়া বিছিয়ে রাখার কারণে সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগে। এখন হেঁটে চলাচলও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রাতের বেলায় চলাচলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। সামান্য বর্ষায় সড়কে হাঁটুপানি জমে। গলাচিপা শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এ সড়ক এখন নাগরিক দুর্ভোগের প্রধান কারণ। অভিযোগ উঠেছে, সড়কে যে ইট ও খোয়া বিছানো হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। মানুষের পায়ে চলাচলেই খোয়া ভেঙ্গে যাচ্ছে। সড়কের পাশের ড্রেনও অত্যন্ত নিম্নমানের হয়েছে। এ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের সম্ভাবনা তেমন নেই। আরও অভিযোগ উঠেছে, এ সড়ক নির্মাণকাজের বরাদ্দ নিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থের চাঁদাবাজি হয়েছে। কয়েক রাজনৈতিক নেতা সাড়ে ২৮ লাখ টাকা চাঁদা তুলেছে, যে কারণে ঠিকাদার সড়ক নির্মাণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। চাঁদাবাজির বিষয়টি আংশিক স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আবদুল মান্নান জানান, চাঁদা তোলা না হলে অনেক আগেই সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হতো। এছাড়া সড়কটি প্রশস্ত করার জন্য বিদ্যুতের খাম্বা সরানো দরকার। পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতি খাম্বাগুলো সরিয়ে নিতে অনেক বিলম্ব করেছে, যে কারণে সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করা যায়নি। পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী এসএম সোলায়মান জানান, কার্যাদেশের শর্ত অনুযায়ী কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েক দফা সতর্ক করা হয়েছে। বিদ্যুতের খাম্বা সরানোর টাকা জমা দিতে হয়েছে। তবে শীঘ্র সড়কের কাজ শুরু এবং শেষ হবে। সড়কে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহার হয়নি বলেও তিনি জানান। রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি।
×