ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে চালের দাম বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ৭ মার্চ ২০১৭

যশোরে চালের দাম বৃদ্ধি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ গত দু’মাসের ব্যবধানে যশোরে কয়েক দফায় চালের দাম বেড়েছে। এ মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর। চালের দাম প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় এক শ’ থেকে দেড় শ’ টাকা করে বেড়েছে বলে জানান পাইকারি বিক্রেতারা। তবে সাধারণ ভোক্তা বা ক্রেতাদের কাছ থেকে জানা জানা যায়, গত দেড় মাসে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে দুই শ’ থেকে আড়াই শ’ টাকা। চালের মানভেদে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ মূল্যবৃদ্ধি ৩শ’ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। বর্তমানে যশোরের পাইকারি বাজারে স্বর্ণা মোটা চালের প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ১৬শ’ ৫০ থেকে ১৭শ’ টাকায়, নূরজাহান অটো স্বর্ণের পলিশ চালের বস্তা ১৭শ’ ৫০ থেকে ১৮শ’ টাকায়, বিআর-২৮ চালের ৫০ কেজির বস্তা ১৯শ’ থেকে ২ হাজার ৫০ টাকায়, কাজল লতা বস্তাপ্রতি ২১শ’ থেকে ২২শ’ ৫০ টাকায়, মিনিকেট ২২শ’ থেকে ২৩শ’ ৫০ টাকা, বাসমতি ২৫শ’ থেকে ২৬শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বেশি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ ৫০ থেকে ১৬শ’ টাকায়। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিকন চালের মানভেদে দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। পাইকারি বাজারে স্বর্ণা মোটা চাল ৩৪ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ৩৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি বিআর-২৮ ৪০ টাকায়, কাজল লতা ৪৪ টাকায়, মিনিকেট ৪৫ টাকায় ও বাসমতি চাল ৫২ টাকায় বিক্রি হলেও সবক্ষেত্রেই খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। পাড়া বা গলির মোড়ের দোকানগুলোতে দাম আরও বেশি। তবে বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা ধানের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। তাদের ভাষ্যমতে, বছরের এ সময়টায় অসাধু এক ধরনের ব্যবসায়ী ধানের বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেন। স্টকে রাখা ধানই তারা আস্তে আস্তে বাজারে ছাড়েন। এতে মূলত ওই ব্যবসায়ীরাই লাভবান হন। এ বিষয়ে মদন এ্যান্ড ব্রাদার্সের মনি দাঁ বলেন, গত দেড়-দুই মাসে চালের দাম একটু বেড়েছে। প্রতি বছরের এ সময়টায় চালের দাম বৃদ্ধি পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান বাজারদরের থেকেও চড়া দরে এর আগে চাল বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বোরো আবাদ শুরু হলেও নতুন চাল বাজারে আসতে এখনও মাসদুয়েক বাকি। নতুন চাল এলে এ দাম কমবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে সাঈদ আহমেদ বাপ্পী নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, স্থিতিশীল না থেকে বরং এ দাম আরও বাড়তে পারে। এ বিষয়ে শহরের খালধার রোড এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত দেবনাথ নামে এক ব্যক্তি বলেন, বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি হলে সরকার খোলা বাজারে চাল বিক্রি করে বাজারদর কম রাখে। এতে সাধারণ ও মধ্যবিত্ত মানুষের একটু উপকার হয়। বর্তমানে চালের দাম বেড়েছে। বাজারে এ মূল্য সহনীয় করতে এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের সুবিধার্থে সরকারীভাবে খোলা বাজারে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা জরুরী। চালের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাঘারপাড়া খাজুরা এলাকার খলিলুর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, এ সময়টায় ধানের দাম বাড়ে ঠিক, তবে কৃষকের ঘরে ধান থাকে না। বাজারে মোটা ধান সাড়ে ৭শ’ থেকে মানভেদে সাড়ে ৮শ’ টাকায় মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে চিকন ধানের মণ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১১শ’ টাকায়। কিন্তু সেচ, সার, কিষান খরচ যদি ধরা হয় তবে শেষপর্যায়ে এ দামেও কৃষকদের পরতা হয় না। অথচ শেষমেষ গরিব মানুষগুলোকেই বারবার অসুবিধায় পড়তে হয়।
×