ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের অভিযোগ ভুয়া

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ৭ মার্চ ২০১৭

ট্রাম্পের অভিযোগ ভুয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে টেলিফোনে আড়িপাতার যে অভিযোগ এনেছেন তা প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করার জন্য বিচার দফতরের প্রতি এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি আহ্বান জানিয়েছেন। গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রচারাভিযান চলাকালে ওবামার নির্দেশে ট্রাম্পের ফোনে আড়িপাতা হয় এ রকম একটি খবর এর আগে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ট্রাম্পের এই অভিযোগ নতুন করে বিতর্ক তৈরি করে এবং এর স্বপক্ষে তিনি কোন প্রমাণও দেখাতে পারেননি। খবর এএফপি ও নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইনের। সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তারা রবিবার বলেছেন, ওবামার বিরুদ্ধে ট্রাম্প যে অভিযোগ করেছেন তা ভুয়া এবং সেটি সংশোধিত হওয়া প্রয়োজন। তবে বিচার দফতর এ বিষয়ে কোন বিবৃতি প্রকাশ করেনি। কোমি বিচার দফতরের প্রতি শনিবার ওই আহ্বান জানান। ট্রাম্প টুইটারে ওবামার প্রতি ওই অভিযোগ করেছিলেন। এ বিষয়ে বিচার দফতরের হস্তক্ষেপ চাইছেন কোমি। কারণ, যে অভিযোগটি করেছেন তা ভুয়া এবং এর মধ্য দিয়ে এফবিআইয়ের প্রতি আইন লঙ্ঘনেরও অভিযোগ আনা হয়েছে বলে কর্মকর্তরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে এফবিআই অথবা বিচার দফতরের মুখপাত্ররা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিচার দফতরের প্রতি কোমির এই আহ্বান প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে। পূর্বসূরীর প্রতি খামখেয়ালিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ট্রাম্পকে যেন রাজনৈতিক মূল্য গুনতে না হয় সে জন্য তার সহযোগী কর্মকর্তারা রবিবার ব্যস্ত সময় পার করেন। ট্রাম্পের দাবির পক্ষে যে কোন প্রমাণ নেই সেটি তারাও স্বীকার করেন। তারা এ বিষয়ে তদন্তের জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার এদিন বলেন, ট্রাম্প আসলে যা বলতে চেয়েছেন তা হলো ২০১৬ সালে নির্বাহী বিভাগ তদন্তমূলক ক্ষমতা অপব্যবহার করেছিল কি না, সেটি যাচাই করা। ট্রাম্পের মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্সও প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি তেমনটি হয়ে থাকে তবে তাকে নির্বাহী ক্ষমতার চরম অপব্যবহার বলতে হবে।’ শনিবারের টুইটে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘ওবামা যে কতটা নিচে নামতে পারেন তার প্রমাণ হলো নির্বাচনের বছর তিনি আমার ফোনে আড়ি পাতেন। নিক্সনের ওয়াটারগেটের মতোই কাজ তিনি করেছেন।’ রিচার্ড নিক্সন ১৯৭৪ সালে যে কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন সেটি ওয়াটারগেট নামে পরিচিত। নিক্সন সেবার ওয়াশিংটনের ওয়াটারগেট হোটেলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ন্যাশনাল কমিটির অফিসে আড়ি পেতে ছিলেন বলে তথ্য উদ্ঘাটিত হয়। ট্রাম্পের এ অভিযোগ ওবামা মুখপাত্র কেভিন লুইসের মাধ্যমে ‘পুরোপুরি মিথ্যা কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। লুইস বলেন, ওবামা প্রশাসনের বরাবর নিয়ম ছিল যে বিচার দফতরের স্বাধীন তদন্তমূলক কাজে হোয়াইট হাউসের কোন কর্মকর্তা কখনও হস্তক্ষেপ করেননি। ফেডারেল বিচারকের অনুমোদন এবং সন্দেহের গ্রহণযোগ্য ভিত্তি ছাড়া আমেরিকার প্রেসিডেন্টের পক্ষে কারও ফোনে আড়িপাতার নির্দেশ দিতে পারেন না। ওবামার সময় ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালকের দায়িত্ব পালনকারী অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জেমস ক্ল্যাপার এনবিসি টেলিভিশনকে বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে বা পরে কখনই তার ফোনে আড়িপাতা হয়নি। ট্রাম্প এবং দেশের প্রধান আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তার পারস্পরিক মুখোমুখি অবস্থানকে হোয়াইট হাউসকে সামনের দিনগুলো আরও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। কারণ, প্রেসিডেন্ট ও এফবিআই একে অন্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
×