ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাফেজিয়া মাদ্রাসার আড়ালে জঙ্গী প্রশিক্ষণ দিত আবুল কাশেম

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৬ মার্চ ২০১৭

হাফেজিয়া মাদ্রাসার আড়ালে জঙ্গী প্রশিক্ষণ দিত আবুল কাশেম

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ঢাকায় আটক নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা ‘বড় হুজুর’ আবুল কাশেমের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার দুর্গম ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল উত্তর কোদালকাটি চরে। প্রথমে তিনি অষ্টমীচর ইউনিয়নের ডাটিয়ারচর বাজারে পল্লী চিকিৎসক এবং হাফেজিয়া মাদ্রাসার হুজুর ছিলেন। বিএনপি-জামায়াতের আমলে ২০০৪ সালের শুরুর দিকে ঐ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জঙ্গী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা হতো এই দুর্গম চরে। সারারাত ধরে চলত বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ। এমন অভিযোগ করেন চরের বাসিন্দারা। ডাটিয়ার চরের বাসিন্দা মজিবুর রহমান, সোলেমান মাস্টার, করিম ম-ল ও ইদ্রিস আলী জানান, আবুল কাশেম ডাটিয়ারচর হাফেজিয়া মাদ্রাসাকে জঙ্গী প্রশিক্ষণ হিসেবে ব্যবহার করত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অপরিচিত মধ্য বয়সী ও কিশোর যুবকদের যাতায়াত ছিল বেশি। এশার নামাজের পর বসত মজলিশ। যা ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত মাদ্রাসায় আলোচনা চলত। তাদের সবার খাবার রান্না হতো কাশেম হুজুরের বাড়িতে। তবে বাইরের কোন পুরুষ বা মহিলা তার বাড়িতে প্রবেশ করতে পারত না। আবুল কাশেম রাজীবপুরের করাতিপাড়া ও দিয়ারার চরের প্রায় দু’শতাধিক পরিবারকে পর্দাশীল করে গড়ে তুলেছেন। প্রথমে হাফেজিয়া মাদ্রাসার হাফেজ বানানোর কথা বলে মাদ্রাসা চালু করেন তিনি। রাজীবপুরের কোদালকাটি ইউনিয়নের উত্তর কোদালকাটি চরে আবুল কাশেমের বাড়ি। বাড়িতে দুটি দোচালা টিনের ঘর ছাড়া তেমন কিছুই নেই। তার ঘরে ৭ ছেলে ৩ মেয়ে রয়েছে। আবুল কাশেমের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ‘উনি (স্বামী) গত বছর ১৬ মে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেনি। জঙ্গী হামলার সঙ্গে আমার স্বামী জড়িত নয়। ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে অন্যায় ভাবে চক্রান্ত করে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উত্তর কোদালকাটি ইউপি মেম্বার কামাল হোসেন জানান, আমরা অনেক সময় শুনতাম আবুল কাশেম জঙ্গী নেতা। সে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জঙ্গী হিসেবে গড়ে তোলেন। সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্থানীয়রা জানালেও দুর্গম চর হবার কারণে তারা বিষয়টি নজরে নেননি। ফলে আজ এইসব দুর্গম চরাঞ্চল থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু জানান, তার বাড়িতে বিভিন্ন সময় বহিরাগত লোকজন আসত কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি তিনি জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এই বিষয়ে পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম জানান, আবুল কাশেমের বাড়ি কুড়িগ্রামে শুনেছি। কিন্তু এখনও তেমন কোন তথ্য জানা নেই
×