ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এ কেমন বসন্ত! হঠাৎ শীতে কাহিল উত্তরাঞ্চল

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৬ মার্চ ২০১৭

এ কেমন বসন্ত! হঠাৎ শীতে কাহিল উত্তরাঞ্চল

সমুদ্র হক ॥ শীত দ্রুত চলে গেল। মাঘেও ছিল না। ফাগুনের হাওয়া বইল। তাপমাত্রা বেড়ে গেল। শেষ ফাল্গুনেই ঘাম ঝরা গরম। ফাল্গুনের এই শেষার্ধে বসন্ত বেলায় বলা নেই কওয়া নেই কোত্থেকে ফের শীত জেঁকে বসল। দিন কয়েক আগেও চলল বৈদ্যুতিক পাখা, এয়ার কন্ডিশনার। এখন বন্ধ। শুধু কি শীত! শনিবার সঙ্গী হয়ে এলো বৃষ্টি। রবিবার সকাল থেকেই ঘন বর্ষার চিত্র। ক্ষণে ক্ষণে বজ্রপাতে কালো মেঘে ছাওয়া আকাশ মাঝে মাঝেই ঝলসে উঠছিল। তারপরই বিকট শব্দে মেঘের গর্জন। কানে তালি লাগার মতো অবস্থা। দিনের আলো কেড়ে নেয় মেঘ। আড়াল করে সূর্য। আরও অবাক হওয়ার দৃশ্য কুয়াশা। ভোরে এই আসছে এই যাচ্ছে। লোকমুখে বলাবলি এ কি হলো! জোর করে অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঋতুতে ঋতুতেও যুদ্ধ লেগে গেল নাকি! বৃষ্টি আর সামান্য ঝড়ো বাতাস হলেই এই বসন্তে বিদ্যুতও বেড়াতে যায়। দেশের মানুষ ভাবতে পারছে না প্রকৃতির এ কেমন খেয়ালী আচরণ। বগুড়া আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বললেন, এটা মৌসুমী বায়ুর কোন প্রভাব নয়। তা শুরু হবে জুনের শেষে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতকাল ধরা হয়। শীতকালে উত্তুরে হাওয়া বয়। বর্তমানে যে মৌসুম শুরু হয়েছে তা প্রাক মৌসুম। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত থাকবে। শীতের উত্তুরে হাওয়া কিছুটা সময় থাকে। এবার এই সময়টায় তা পরিবর্তিত হয়ে পশ্চিম দিক থেকে আসছে। পশ্চিমা এই লঘুচাপ বেশি কলকাতা ও বিহারে। সেখান থেকে এই পথ ধরেছে। পূর্ব দিক থেকে পূবালী হাওয়া বইছে সিলেট অঞ্চলে। পশ্চিমা লঘুচাপ ও পূবালী হাওয়ার পাশাপাশি দক্ষিণ সমুদ্র থেকে বাতাস বয়ে আনছে জলীয়বাষ্প। পশ্চিমা লঘুচাপ পূবালী হওয়া আর সমুদ্রের জলীয়বাষ্প সব মিলে প্রাক মৌসুমে প্রকৃতিকে জটিলতার মধ্যে ফেলেছে। এর প্রভাব থাকবে কিছুটা সময়। মার্চের প্রথম সপ্তাহের পর দ্বিতীয় সপ্তাহের ৮ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। এই সময়ে হালকা মাঝারি ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মার্চেই বজ্রঝড়ের সঙ্গে কালবৈশাখীর সম্ভাবনা লক্ষ্য করছেন আবহাওয়াবিদরা। এবারের প্রাক মৌসুমটি গত কয়েক বছরের চেয়ে একটু ভিন্ন হয়ে দেখা যাচ্ছে। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা এক প্যাকেজে এসেছে। যারা শীত চলে গেল বলে শীতের কাপড় পরিষ্কার করে ওয়ার্ড্রবে রেখেছিল তা বের করতে হচ্ছে। দিনের বেলায় অনুভূত হচ্ছে শীত। গায়ে ফের চরাতে হচ্ছে শীতের পোশাক। রাতে লেপ বের করতে হচ্ছে না তবে কম্বল কাঁথা ছাড়া ঘুমানো যাচ্ছে না। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলাবলি করেন ‘ঘোর কলি প্রকৃতিতেও, কলির ছোঁয়া লেগেছে। তাই সব ওলোট পালোট হয়ে যাচ্ছে...’।
×