ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফিজিকে উড়িয়ে প্রথম জয় বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ৬ মার্চ ২০১৭

ফিজিকে উড়িয়ে প্রথম জয় বাংলাদেশের

জাহিদুল আলম জয় ॥ ফিজিকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ‘ওয়ার্ল্ড হকি লীগে (রাউন্ড-টু)’ প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। রবিবার বিকেলে মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে জয় তুলে নেয় লাল-সবুজের দেশ। পুল ‘এ’র ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে জোড়া গোল করেন দুই তারকা অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি ও মামুনুর রহমান চয়ন। অপর গোলটি করেন আশরাফুল ইসলাম। সহজ এই জয়ে নিজেদের গ্রুপের রানার্সআপ হওয়ার সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। পুল ‘এ’ থেকে ইতোমধ্যে টানা দুই ম্যাচ জিতে শীর্ষস্থান প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে মালয়েশিয়া। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মালয়েশিয়া ৬-১ গোলে হারিয়েছে ওমানকে। এর আগে তারা বাংলাদেশকে হারায় ৩-০ গোলে। শেষ গ্রুপ ম্যাচে ওমানকে হারাতে পারলেই গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা হবে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে কাজটি যে সহজ হবে না সেটা বলাইবাহুল্য। কেননা এখই পর্যন্ত গ্রুপে বাংলাদেশকে টপকে দুইয়ে আছে ওমান। বাংলাদেশ ও ওমান দু’দলই দু’টি করে ম্যাচ খেলে একটিতে হেরেছে ও একটিতে জিতেছে। তবে গোলগড়ে এগিয়ে ওমান। অবশ্য ওমান গোল হজম করেছে ছয়টি, সেখানে বাংলাদেশের জালে গোল হয়েছে চারটি। হকির বিশ্ব মানচিত্রে ফিজির অবস্থান তেমন মজবুত না। ৩৫টি দলের র‌্যাঙ্কিং তালিকায় নেই ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশটি। তবু মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে নিজেদের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে ফিজি ভালই লড়াই করে বাংলাদেশের সঙ্গে। এ কারণে জিমি-চয়নরা অনেক গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেও পাঁচটির বেশি গোল পায়নি। ম্যাচে বাংলাদেশ ১৩টি পেনাল্টি কর্নার থেকে মাত্র তিনটিতে গোল পেয়েছে। বাংলাদেশ কোচ অলিভার কার্টজ শেষ ম্যাচে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। জয়ের জন্য মরিয়া বাংলাদেশ শুরু থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েও প্রথম গোলটি পেতে অপেক্ষা হয় লম্বা সময়। টানা ছয়টি পিসি নষ্ট করার পর ২৭ মিনিটে সপ্তম সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কৃষ্ণ কুমারের পুশ সারোয়ার হোসেন স্টপ করার পর পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট মামুনুর রহমান চয়নের হিট ঠিকানা খুঁজে পায়। ওমানের কাছে ৭-০ গোলে হেরে শুরু করা ফিজি নিজেদের রক্ষণ সামলে মাঝে মাঝে পাল্টা আক্রমণে উঠতে থাকে। ৩২ মিনিটে পাওয়া প্রথম পিসি কাজে লাগিয়ে সমতায় ফেরে তারা। স্মিথ হেক্টর জুনিয়রের হিট ফেরাতে পারেননি বাংলাদেশ গোলরক্ষক অসীম গোপ। ৩৭ মিনিটে গোছালো আক্রমণ থেকে ফের এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বাঁদিক থেকে নিজেদের মধ্যে বল দেয়া নেয়া করে আক্রমণে যাওয়া কামরুজ্জামান রানার বাড়নো বল নিখুঁত হিটে লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি। একটু পর পিসি থেকে পাওয়া চয়নের হিট ফেরান গোলরক্ষক। ৪১ মিনিটে জয়ের পথে আরেকটু এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। রোমান সরকার থেকে পাওয়া বল সারোয়ার হোসেন আলতো করে বাড়ান জিমিকে। নিখুঁত ফ্লিকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই ফরোয়ার্ড। ৫০ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে চয়নের হিটে স্কোরলাইন হয় ৪-১। শেষদিকে পেনাল্টি কর্নার থেকে জয় নিশ্চিত করে নেয় বাংলাদেশ। কৃষ্ণ কুমারের পুশ সারোয়ার স্টপ করার পর আশরাফুল ইসলামের হিট জালে আশ্রয় নেয়। পুল ‘বি’র প্রথম ম্যাচে ঘানা ৫-৪ গোলে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। ঘানার পক্ষে বোটিসিও জনি পিসি থেকে তিনটি, আকাবা এলিকেম ও বাইদেন মাইকেল একটি করে গোল করেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে রতœায়েকা অনুরাধা, দোরানেগালা ইশাঙ্কা, ফার্নান্দো আবিথা ও হেন্দেনিয়া পুস্পা একটি করে গোল করেন। দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। যারা জিতবে তারাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের পথে এগিয়ে থাকবে। এমন একটি ম্যাচের ফলাফল নিষ্পত্তি হলো সাডেন ডেথে। মিসর ৫-৪ গোলে হারায় শক্তিশালী চীনকে। নির্দিষ্ট সময়ে ২-২ গোলে ড্র ছিল। চীনের হয়ে গোল দুটি করেন জুউ জিন ও ডু তালাকে। মিসরের হয়ে গোল করেন এলনাগার আহমেদ ও মামদু মাহমুদ। শূট আউটে উভয় দল দুটি করে গোল করলে আবারও ড্র হয়। এরপর সাডেন ডেথে মিসরের সাইদ আমর গোল করলে মিস করেন চীনের ই, লিগুয়াং। ফলে ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মিসর। তৃতীয় ম্যাচে মালয়েশিয়া ৬-১ গোলের সহজ জয় পায় ওমানের বিপক্ষে। ‘এ’ গ্রুপ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের পথে এক পা এগিয়ে গেল তারা। মালয়েশিয়ার পক্ষে আইমান ও টেঙ্গু দুটি করে এবং সাবাহ শাহরিল ও রহিম রাজি একটি করে গোল করেন। ওমানের পক্ষে একটি গোল পরিশোধ করেন লওয়াতি মোহাম্মদ।
×