ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গোলোৎসবে জয় বার্সিলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ৬ মার্চ ২০১৭

গোলোৎসবে জয় বার্সিলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্প্যানিশ লা লিগায় বড় জয় পেয়েছে দুই পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা। শনিবার রাতে এ্যাওয়ে ম্যাচে সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও গ্যারেথ বেলকে ছাড়াই স্বাগতিক এইবারকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে অতিথি রিয়াল। গ্যালাক্টিকোদের হয়ে জোড়া গোল করেন ফরাসী ফরোয়ার্ড করিম বেনজামা। অপর দুই গোলদাতা জেমস রড্রিগুয়েজ ও মার্কো এ্যাসেনসিও। একই রাতে আবারও গোলাৎসব করেছে বার্সিলোনা। নিজেদের মাঠ ন্যুক্যাম্পে অতিথি সেল্টা ভিগোকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে কাতালানরা। বার্সার জয়ে যথারীতি আলো ছড়িয়েছেন তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক করেন জোড়া গোল। বাকি গোলগুলো করেন নেইমার, ইভান রাকিটিচ ও স্যামুয়েল উমটিটি। এই তিন গোলেও অবদান রাখেন আর্জেন্টাইন তারকা। অপ্রতিরোধ্য জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানও ধরে রেখেছে বার্সা। ২৬ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৬০ পয়েন্ট ভা-ারে তাদের। এক ম্যাচ কম খেলে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনের কাছে ৪-০ গোলের হতাশাজনক হারটা যেন তাতিয়ে দিয়েছে বার্সিলোনার তারকা ফুটবলারদের। লা লিগার সবশেষ দুটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ ছিন্নভিন্ন করেছেন মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা। যার প্রমাণ দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ১১ গোল। অথচ এবারের মৌসুমের শুরুটা ভালভাবে করতে পারেনি বার্সা। প্রথম সাতটি ম্যাচের মধ্যে হেরেছিল দুটিতে। ড্র করেছিল একটি ম্যাচে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে সেল্টা ভিগোর কাছে লা লিগার প্রথম লেগের ম্যাচেও বার্সা দেখেছিল হারের মুখ। এবার নিজেদের মাঠে সেই হারের প্রতিশোধটা দারুণভাবেই নিয়েছেন মেসি-নেইমাররা। ম্যাচের শুরু থেকেই সেল্টার ডিফেন্ডারদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখেন বার্সার ফুটবলাররা। স্বাগতিকরা প্রথম গোল পায় ম্যাচের ২৪ মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে বলের দখল নিয়ে অনেকটা একক প্রচেষ্টায় গোল করেন মেসি। ৪০ মিনিটে নেইমার ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটিও করেন মেসির পাস থেকে। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৭ ও ৬১ মিনিটে সেল্টার জালে আরও দুইবার বল জড়ান রাকিটিচ ও উমটিটি। শুরুর মতো ম্যাচের শেষ গোলটিও করেন মেসি। ৬৪ মিনিটে করেন নিজের দ্বিতীয় গোলটি। আগামী বুধবার পিএসজির বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ৪-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে মাঠে নামবে লুইন এনরিকের শিষ্যরা। মৌসুমের মাঝামাঝিতে এসে এটাই যে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সেরা পারফর্মেন্স এতে কোন সন্দেহ নেই। অলআউট পারফর্মেন্সের মাধ্যমে তারা সেল্টাকে বিধ্বস্ত করেছে। সে কারণেই ম্যাচ শেষে এনরিকেও বলতে সাহস পেয়েছেন, মৌসুমের শেষে এসে আমরা যেভাবে খেলছি তাতে আমি দারুণ আত্মবিশ্বাসী। আর নিজেকে ঠিক স্বরূপে দেখাতে না পারলেও নেইমার জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমই তার কাছে সেরা। গোলের জন্য সংগ্রাম করতে থাকা নেইমার বলেন, আমি মনে করি বার্সায় এটা আমার সেরা মৌসুম। আমি নিজে এবং দল সবক্ষেত্রেই উন্নতি করছি এবং এটাই গুরুত্বপূর্ণ। এনরিকের বার্সা ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা দুঃখজনক, কারণ তিনি এমন একজন যার প্রতি আমাদের অনেক ভালবাসা আছে। আমরা তার সঙ্গে তিন মৌসুম ধরে আছি এবং তার প্রতি আমাদের অনেক আস্থা আছে। আর মেসি ম্যাচে তার প্রথম গোল উৎসর্গ করেছেন ভাতিজাকে। গোলটি করার পর মেসির উদযাপন ছিল অনেকটাই ভিন্নরকম। গোল করে ফিরে আসেন মাঝবৃত্তে। গ্যালারির দিকে তাকিয়ে কাউকে খুঁজতে খুঁজতে ডান হাত কানের কাছে নিয়ে ফোন করার একটা ভঙ্গি করেন। ম্যাচ শেষে মেসি জানান, তার এমন উদআসলে ভাইপোর জন্য। ভাইপো গ্যালারিতেই ছিলেন। এইবারের বিরুদ্ধে ম্যাচের ১৪ ও ২৫ মিনিটে পরপর দুটি গোল করে রিয়ালকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন বেনজামা। ২৯ মিনিটে রড্রিগুয়েজ করেন তৃতীয় গোল। বিরতির পর ৬০ মিনিটে রিয়ালের চতুর্থ গোলটি করেন এ্যাসেনসিও। ৭২ মিনিটে এইবারের পক্ষে সান্ত¡নাসূচক একটি গোল করতে পেরেছেন রুবেন পেনা। আগের দুই ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হার ও লাস পালমাসের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্রয়ের পর এই ম্যাচে বেশি উজ্জীবিত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে রিয়াল। ম্যাচ শেষে দলটির কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, যেভাবে ছেলেরা খেলেছে তাতে আমি দারুণ খুশি। পুরো মৌসুমে এমন কিছু মুহূর্ত আসে যখন সবদলই চাপে পড়ে। আর সে কারণেই সবসময় ভাল খেলাটা জরুরী। আমাদের শুরুটা বেশ ভাল হয়েছিল। এ্যাওয়ে ম্যাচে যা গুরুত্বপূর্ণ।
×