ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৬ মার্চ ২০১৭

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

সুধীর বরণ মাঝি শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া শিক্ষক, হাইমচর কলেজ, হাইমচর-চাঁদপুর। মোবাইল : ০১৭৯৪৭৭৭৫৩৫ (পূর্ব প্রকাশের পর প্রস্তুতি তৃতীয় অধ্যায় ৭। অল্প বয়সী মেয়েরা এইডস সংক্রমণে ঝঁকিপূর্ণ কেন? ভূমিকা ঃ বয়স প্রত্যেক মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব বয়সের মানুষের পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব হয় না। বয়সের কোন পর্যায়ে মানুষ আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় আবার কোন পর্যায়ে সেই আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে। বিশেষ করে অল্প বয়সের মেয়েরা আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়। অল্প বয়সী মেয়েরা এইডস সংক্রমণে ঝঁকিপূর্ণ ঃ অনেক দেশে অনিয়ন্ত্রিত মাদকের ব্যবহার, অসচেতনতা, অশিক্ষা, দারিদ্র প্রভৃতি কারণে অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যে এইডস সংক্রমণের ব্যাপকতা মহামারী আকারে পৌঁছে গিয়েছে।এইডস রোগের পরিণতি যেহেতু ভয়াবহ তাই বিশেষ করে অল্প বয়সী মেয়েদেরকে এ বিষয়ে বিশেষভাবে সচেতন ও সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। বিভিন্ন দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি থেকে জানা যায় যে নতুন এইচআইভিতে আক্রান্তদের অর্ধকেই ১৫-২৪ বছর বয়সী।এ বয়সী মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। এর প্রধান কারণগুলো হচ্ছে- ক। আর্থ-সামাজিক কাঠামোতে মেয়েদের দুর্বল অবস্থান। খ। এইচআইভি /এইডস সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব। গ। অনিয়ন্ত্রিত ও অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা কম। ঘ। নারী-পুরুষের বৈষম্যের কারণে নারীর নিগৃহীত হওয়া। ঙ। মেয়েদের বিশেষ শারীরিক বৈশিষ্ট্য। চ। অনৈতিক ও অনিরাপদ দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন। ছ। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। ৭। কিশোর কিশোরীদের সচেতনতাই এইডস প্রতিরোধ করতে পারে- ব্যাখ্যা কর। ভূমিকা ঃ বয়স প্রত্যেক মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব বয়সের মানুষের পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব হয় না। বয়সের কোন পর্যায়ে মানুষ আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় আবার কোন পর্যায়ে সেই আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীরা আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়। এইডস ঃ এইডস এক ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ। এই রোগের ভাইরাসটির নাম এইচআইভি। এই ভাইরাস মানব দেহে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে স্থায়ীভাবে ধ্বংস করে দেয়। এই রোগের এখনো কোন কার্যকর ঔষধ বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। অকালমৃত্যুই এইডস রোগের শেষ পরিণতি। এইডস রোগের ভয়াবহ- মানুষের জীবন ধ্বংসের জন্য যুগে যুগে বিভিন্ন প্রাণঘাতি রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে এইডস এদের মধ্যে একটি। সারা বিশ্বে এই ঘাতক ব্যাধি এইডস আশঙ্কাজনকভাবে বিস্তার লাভ করছে। ২০১০ সালের সরকারী তথ্য হিসাবে বাংলাদেশে এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৭৫০০ জন। আর বর্তমান বিশ্বে প্রতিদিন এই রোগে প্রায় ৬৮০০জন ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছে। অকালমৃত্যুই এইডস রোগের শেষ পরিণতি। এইডস প্রতিরোধে কিশোর কিশোরীদের সচেতনতা ঃ বাচঁতে হলে জানতে হবে। সচেতনতাই এইডস প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। একবার হইলে রক্ষা নাই এইডস রোগের কোন ঔষধ নাই। কিশোর কিশোরীদের এইডস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে চেতনার পরিবর্তে আবেগকে প্রশ্রয় দেয়। তাই তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে। এইডস থেকে বাঁচার জন্য কিশোর কিশোরীদের আরো অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই এইডস বিষয়ে অন্যকে সচেতন করতে হলে নিচের বিষয়গুলো জানা থাকা দরকার- ক। এইচআইভি/এইডস কী খ। এইচআইভি কীভাবে ছড়ায় এবং কীভাবে ছড়ায় না গ। এইচআইভি/এইডসের লক্ষণসমূহ ঘ। এইচআইভি সংক্রমনের ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ন আচরণ ঙ। এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধের উপায়সমূহ চ। এইডস আক্রান্তদের চিকিৎসা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা, সচেতনতাই পারে তাদের এই রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে করতে। ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ পরিহার করতে হবে, আবেগকে প্রশমন করতে হবে। সচেতনার সাথে ঝুঁকিপূর্ণ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে। সচেতনতা ধর্মীয় অনুশাসন ও সামাজিক রীতিনীতি মেনে বাধ্য করে। এই উদ্দেশ্যে র‌্যালির আয়োজন পত্রিকায় প্রচার, মিড়িয়ায় নাটক ও সংগীতের মাধ্যমে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে কিশোর কিশোরীদের সচেতন করতে পারলেই এইডস প্রতিরোধ সম্ভব। যার কোন প্রতিকার নেই তাকে প্রতিরোধ করতে সচেতনতা সৃষ্টি করে। ৮। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি কীভাবে এইডস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে- ব্যাখ্যা কর। সমাজ হচ্ছে সামাজিক সম্পর্কের জটাজাল, যেখানে প্রত্যেক মানুষ,প্রত্যেক মানুষের সাথে সম্পর্কযুক্ত। মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যেই সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি হয়।এই সামাজিক সচেতনতাই এইডস প্রতিরোধের হাতিয়ার হিসেবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। এইডস কী, কীভাবে এ রোগ সংক্রমিত হয়,প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কী প্রভৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা ও সকলকে সচেতন করা প্রয়োজন। যার কোন প্রতিষেধক নেই তাকে প্রতিরোধ করাই একমাত্র উপায়। এ ক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতাই পারে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। সামাজিক সচেতনতাই পারে যে কোন অনৈতিক কর্মকান্ডকে রুখে দিতে। অনেক বিষয় আছে যেখানে আইন অকার্যকর কিন্তু সামাজিক সচেতনতা কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এইডসের ভয়াবহতা সম্পর্কে ব্যপক গণসচেতনা সৃষ্টি করতে পারলেই ঘাতক এইডস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এই উদ্দেশ্যে র‌্যালির আয়োজন,পত্রিকায় প্রচার, মিড়িয়ায় নাটক ও সংগীতের মাধ্যমে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে পারলেই এইডস প্রতিরোধ সম্ভব। তাছাড়া মসজিদে ও মন্দিরে নামাজ এবং পূজার সময় এইডসের ভয়াবহতা সম্পর্কে ইমাম সাহেব ও পরোহিত বক্তব্য রাখলে খুব সহজেই সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করে। যার কোন প্রতিকার নেই তাকে প্রতিরোধ করতে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সামাজিক সচেতনতার মধ্য দিয়ে মোকাবেল করতে অনৈতিক আচরণ। সামাজিক আন্দোলন সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।সচেতন মানবসমাজ যথাসময়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করে এইডস মোকাবেলায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা মুখ্য ভূমিকা পালন করে।তাই এইডস বিষয়ে অন্যকে সচেতন করতে হলে নিচের বিষয়গুলো জানা থাকা দরকার- ক। এইচআইভি/এইডস কী খ। এইচআইভি কীভাবে ছড়ায় এবং কীভাবে ছড়ায় না গ। এইচআইভি/এইডসের লক্ষণসমূহ ঘ। এইচআইভি সংক্রমনের ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ন আচরণ ঙ। এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধের উপায়সমূহ চ। এইডস আক্রান্তদের চিকিৎসা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা। ৯। এইডস আক্রান্ত রোগীর সমস্যা মানে পরিবারেই সমস্যা- মতামত দাও। এইডস এর প্রভাব মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে আনে স্বাস্থ্য সেবায় যেমন এইডস এর ক্ষতিকর দিক রয়েছে, তেমনি পারিবারিক ক্ষেত্রেও এর ক্ষতিকার প্রভাব রয়েছে। এইডস আক্রান্ত রোগীর সমস্যা শুধুমাত্র রোগীর একক সমস্যা নয়, পরিবারের ও সমস্যা বটে। ব্যক্তি পরিবারের অধীন। পরিবারের কোন ব্যক্তি এইডস রোগে আক্রান্ত হলে তার পরিবারের ওপর প্রভাব পড়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে। চলবে...
×