ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিঃসন্তানের মেয়ে হলো দাতা

সম্পত্তি আত্মসাত করতে ভাই বউকে সাজানো হলো মা

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৬ মার্চ ২০১৭

সম্পত্তি আত্মসাত করতে ভাই বউকে সাজানো হলো মা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৫ মার্চ ॥ অবিবাহিত এক ব্যক্তির কথিত মেয়ে এবং আপন ভাইয়ের স্ত্রীকে নিজের মা সাজিয়ে ভুয়া সনদপত্র তৈরির মাধ্যমে রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের চৌরাশী গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি ইচ্ছা রানী ম-ল নামের অসহায় নারীর সম্পত্তি আত্মসাতের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। সম্পত্তি থেকে ইচ্ছা রানী ম-লকে বেদখলসহ জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে বলে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। লিখিত অভিযোগ ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কাকৈরথোপা মৌজার এসএ খতিয়ান ৬৭৯ ‘এর ৩০, ৩১ ও ১১১০ নং দাগের বাড়ি, পুকুর ও নাল মিলে মোট ৫১ শতাংশ সম্পত্তির মধ্যে রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন মহেন্দ্রণাথ শাখারী। অবিবাহিত ও নিঃসন্তান অবস্থায় মহেন্দ্রনাথ শাখারী মারা গেলে ওয়ারিশ সূত্রে ঐ সম্পত্তির সোয়া ৩৮ শতাংশের মালিক হন ইচ্ছা রানী ম-ল। বংশ পরম্পরায় ঐ সম্পত্তিতে বসবাস ও ভোগ-দখল করে আসছে ইচ্ছা রানী ম-লের পরিবার। তার ঘর জামাই স্বামী সরল-সোজা ও বোকা ধরনের লোক। তাদের সরলতা ও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় বাসুদেব ভক্ত, গৌরাঙ্গ ভক্ত, বাবুল ভক্ত, অমল ভক্ত ও অনন্ত ভক্তগং সমুদয় সম্পত্তি আত্মসাত করতে নিজের আপন ভাই কুমুদ ভক্তের স্ত্রী সুমিত্রা ভক্তকে নিজের মা (কাকৈরথোপা মৌজার ভোটার তালিকায় ৫৫৮ নং ক্রমিকে দেখানো হয়েছে) এবং এসএ খতিয়ান ৬৭৯ এর রেকর্ডীয় মালিক অবিবাহিত মহেন্দ্র নাথ শাখারীর মেয়ে সাজিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ভুয়া ওয়ারিশের কাগজপত্র তৈরি করে এবং স্থানীয় তহশিলদারকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে কৌশলে ঐ সম্পত্তি তাদের নামে পত্তন করিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে বাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) পল্লব কুমার সন্ন্যাসী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার পূর্বে তহশিলদার হুমায়ুন কবীর বাজিতপুর অফিসে কর্মরত অবস্থায় বাসুদেব ভক্তগং স্থানীয় বাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে প্রভাবিত করে বিতর্কিত ওয়ারিশ সার্টিফিকেট হাসিল করে নিজেদের নামে পত্তন করিয়ে নেয়। আমি এই অফিসে দায়িত্ব গ্রহণের পর ইচ্ছা রানী ম-ল ওই নামপত্তন বাতিলের জন্য রাজৈর এ্যাসিল্যান্ডের কাছে আবেদন করলে আমি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করলে নামপত্তন বাতিল হয়। পরে বাসুদেব ভক্ত নামপত্তন বাতিলে এডিসি রেভিনিউ কোর্টে মামলা করলে নামপত্তন বহাল হলে ইচ্ছা রানী দেওয়ানী আদালতের শরণাপন্ন হন। দেওয়ানী আদালতে মামলার পর ইচ্ছা রানী ম-লের বাড়িতে বাসুদেব গং হামলা করে তার বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় আতঙ্কের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ইচ্ছা রানী ম-ল। অপরদিকে বাজিতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বাসুদেব ভক্তগং আমাকে ভুল বুঝিয়ে একখানা ওয়ারিশ সনদপত্র নিয়েছে। যা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে মহেন্দ্রনাথ শাখারী নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেলে একমাত্র ওয়ারিশ ইচ্ছা রানী ম-ল থাকায় গত বছর ১২ ডিসেম্বর একখানা সনদপত্র দিয়েছি।
×