ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চাহিদামতো যৌতুক না দেয়ায় ৩ সন্তানের জননী হাসপাতালে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৬ মার্চ ২০১৭

চাহিদামতো যৌতুক না দেয়ায় ৩ সন্তানের জননী হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ৫ মার্চ ॥ যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় তিন সন্তানের জননী নার্গিস আকতারকে ঘরের মধ্যে দু’দিন আটকে রেখে স্বামী সেলিম খন্দকার নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার নার্গিস পালিয়ে এসে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার মাইঠা গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে। জানা গেছে, শৈশবে পিতাকে হারিয়ে নার্গিস আকতার চাচা জাকির মোল্লার আশ্রয়ে বড় হয়। ২০০০ সালে উপজেলার নাচনাপাড়া গ্রামের মৃত ছিদ্দিক মোল্লার মেয়ে নার্গিস আকতারকে মাইঠা গ্রামের হাছান খন্দকারের ছেলে সেলিম খন্দকারের সঙ্গে বিয়ে দেয়। ওই সময় নার্গিসের পরিবার জামাতাকে যৌতুক হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দিয়েছে। কিছুদিন যেতে না যেতেই সেলিম স্ত্রী নার্গিসের কাছে যৌতুক দাবি করে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অযুহাতে তাকে টাকা দিতে হয়েছে। গত বুধবার স্ত্রী নার্গিসকে ঘর নির্মাণ করবে বলে বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা আনার জন্য পাঠিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রী নার্গিস বাবার বাড়ি থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে যায়। ওইদিন দুপুরে সেলিম কাজ শেষে বাড়িতে এলে স্ত্রী নার্গিস ২০ হাজার টাকা তার কাছে তুলে দেয়। টাকা অল্প দেখে স্ত্রীকে গালাগাল শুরু করে। এক পর্যায় স্ত্রীর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল খুলে দিতে বলে। স্ত্রী গহনা দিতে অস্বীকার করায় বাঁশের কঞ্চি ও রড দিয়ে বেধরক মারধর শুরু করে। এক পর্যায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মারধর শেষে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বাবার বাড়ি লোকজনকে খবর দিয়ে বাকি টাকা আনাতে বলে। এভাবে দু’দিন ঘরের মধ্যে রেখে টাকা আনার জন্য নির্যাতন করে। শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে পালিয়ে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। শনিবার রাতে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় নার্গিস মহিলা ওয়ার্ডের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তার ডান চোখ রক্ত জমাট, চোখের নিচের অংশ লালচে ফুলা, নাকের ওপর আঘাত, বাম পায়ের গোড়ার জয়েন্ট ফুলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজরা বলেন, তার ডান চোখের মধ্যে রক্ত জমাট, চোখের নিচে লালচে ফুলা, নাকের ওপরে আঘাত, বাম পায়ের গোড়ালির জয়েন্টসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আহত নার্গিস বেগম কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অযুহাতে আমার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিতে হয়েছে।
×