নাগরপুরে অবৈধ ট্রাক্টরের থাবায় ক্ষতবিক্ষত সড়ক

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ৫ মার্চ ॥ নাগরপুরে অবৈধ ট্রাক্টরের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে উপজেলার ভিতর দিয়ে চলাচলের রাস্তাঘাট। পাকা সড়ক বিটুমিন পুরোপুরি উঠে গিয়ে খানা-খন্দকে এবং কাঁচা-রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার এমন কোন সড়ক পাওয়া যাবে না যে রাস্তাটি ট্রাক্টর নামক এ যন্ত্র দানবের ভয়াল থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এখন শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় রাস্তার পাথর এবং ইটগুলো ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে অতিরিক্ত ধুলার। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ভুক্তভোগীরা জানান, এসব সড়ক দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচলও দুরূহ হয়ে পড়েছে। সড়কের দু’পাশে অবস্থিত বাড়ির মালিকরা ক্ষোভের সাথে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দিয়ে যখন ট্রাক্টরগুলো চলাচল করে তখন তার বিকট শব্দে ছোট বাচ্চারা চমকে ওঠে এবং ধুলায় বাড়ি-ঘরগুলো অন্ধকার হয়ে যায়। ঘরের চাল, সবজি ক্ষেত ও গাছপালায় ধুলার স্তর পড়ে গেছে। ফলে সবজি ও ফলমূলের ফলন ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার নাগরপুর-চড়ডাংগা, নাগরপুর-ধল্লা, এমপি রোড, নাগরপুর-সলিমাবাদ পাকা সড়কগুলোর অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ট্রাক্টরগুলো হচ্ছে কৃষি কাজের জন্য। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে ট্রাক্টরগুলো মালামাল নিয়ে সড়ক দিয়ে চলাচল করে সড়কের ক্ষতি সাধন করলেও প্রশাসন এ ক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, এ উপজেলার কাঁচা-পাকা সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ১৮০-২০০টি ট্রাক্টর। হালচাষের অনুমোদন নিয়ে সারা বছর তারা লাঙ্গল বাদ দিয়ে মাটি ও মালামাল বহন করছে। রাস্তাঘাট ভাঙ্গার পাশাপাশি হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। অদক্ষ ও কিশোর চালক দিয়ে ট্রাক্টর চালানোর ফলে দুর্ঘটনার হারও বেড়েছে ব্যাপকভাবে। গত বছর প্রায় ২০টি দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১০ জন এবং পঙ্গু হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ। এদের চালক এতটাই অদক্ষ যে এর চাকায় পিষ্ট হয়ে খোদ গাড়ির হেলপার মরার মতোও ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে দ্রুত এই ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রণের জন্য। তা না হলে ভবিষ্যতে বাড়বে আরও দুর্ঘটনা। ট্রাক্টরের মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে এ অবৈধ ট্রাক্টর।