ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তর কোরিয়া নিয়ে এই কর্মসূচী পূর্বসূরি থেকে পেয়েছেন ট্রাম্প

গোপন সাইবার যুদ্ধ

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ৬ মার্চ ২০১৭

গোপন সাইবার যুদ্ধ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়া বিষয়ক গোপন সাইবার যুদ্ধ তার পূর্বসূরির কাছ থেকে পেয়েছেন। পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তিন বছর আগে পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর উদ্যোগ নিলে এক সেকেন্ডের মধ্যে যেন সেটি বিকল করে দেয়া যায়। খবর নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইনের। কিছুদিন পর দেখা গেল উত্তর কোরিয়া একটার পর একটা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করছে। প্রায় সব ক্ষেপণাস্ত্রই গিয়ে পড়ে সাগরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোপন সাইবার কর্মসূচী যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা আরও বাড়াতে সহায়তা করে। ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলে (আইসিবিএম) করে আমেরিকায় পরমাণু হামলার পরিকল্পনা যদি উত্তর কোরিয়া করে থাকে তবে যুক্তরাষ্ট্র একদিনের মধ্যে তাদের সে চেষ্টা কয়েক বছর পিছিয়ে দিয়েছে। তবে সব বিশেষজ্ঞ তা মনে করেন না। তাদের ধারণা, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ব্যর্থ হওয়ার কারণ কারিগরি ও সরঞ্জামাদির ত্রুটি। দেশটির নেতা কিম জং উনের প্রতি যাদের ক্ষোভ রয়েছে তারাও কর্মসূচী বানচালের একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে। গত আট মাসে উত্তর কোরিয়া অবশ্য তিনটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এছাড়া কিম জং উন যেমন দাবি করছেন তার দেশ এখন আইসিবিএম পরীক্ষার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে সেটি ভুয়া না সঠিক, এ নিয়েও বিশেষজ্ঞরা দ্বিধার মধ্যে আছেন। ওবামা ও ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে গোপন সাইবার যুদ্ধের বিষয়টি জানা গেছে। তবে এ সামান্য কিছু সরকারী নথিপত্র যা পাওয়া যায় তা এই ধারণাই তুলে ধরে যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হামলার ঝুঁকি মোকাবেলার সামর্থ যুক্তরাষ্ট্রের নেই। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতে এ রকম ঘটার আদৌ কোন সম্ভাবনা নেই। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে ওবামা হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর থেকেই এ ধরনের হামলার ঝুঁকি বেড়েছে। ট্রাম্পের জন্য এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করে দেয়া হয়। ট্রাম্পও বিষয়টিকে গুরুত্বেও সঙ্গে নিয়েছেন। কিম জং উন নববর্ষের বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে হুমকি দেয়ার পর ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন ‘এটি কখনই ঘটবে না’। দুই দেশ মৌখিকভাবে যতই হুমকি আর পাল্টা হুমকি দিক বাস্তবে পিয়ংইয়ংয়ের রাশ টেনে ধরতে ওয়াশিংটনের সামনে খুব বেশি বিকল্প নেই। ট্রাম্পের সামনে এখন যে বিকল্পগুলো রয়েছে সেগুলো কোনটিই খুব কার্যকর নয়। যেমন তিনি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার যুদ্ধ জোরদার করার জন্য পেন্টাগনকে নির্দেশ দিতে পারেন। কিন্তু এটি যে কাজে আসবে তার কোন গ্যারান্টি নেই। তিনি এ বিষয়ে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সরাসারি আলোচনা শুরু করতে পারেন। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ মঞ্চগুলো লক্ষ্য করে হামলার নির্দেশ দিতে পারেন। ওবামা এটি করার কথা এক সময় বিবেচনা করেছিলেন। এতে সব উৎক্ষেপণ মঞ্চ ধ্বংস হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। এছাড়া ট্রাম্পের সামনে আর যে বিকল্প আছে তা হলো উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানানো। কিন্তু চীন যে তাতে সাড়া দেবে না তা বলাই বাহুল্য।
×