ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন বানচালে বিএনপি-জামায়াত ফের তাণ্ডব চালাতে পারে ॥ নৌমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৫ মার্চ ২০১৭

নির্বাচন বানচালে বিএনপি-জামায়াত ফের তাণ্ডব চালাতে পারে ॥ নৌমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন বানচালে বিএনপি-জামায়াত আবার সারা দেশে তা-ব চালাতে পারে বলে তিনি অশঙ্কা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী শাজাহান খান শ্রমিক, কর্মচারী, পেশাজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের সকলস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকবে। উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। খাদ্যঘাটতি পূরণ করে আমরা এখন খাদ্য রফতানি করছি। পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি জাহাজও রফতানি করা হচ্ছে। আর পাকিস্তান রফতানি করছে জঙ্গী। এ জন্যই পাকিস্তান আজ জঙ্গী-সন্ত্রাসীর দেশে পরিণত হয়েছে এবং বিএনপি-জামায়াত ওই পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করছে। মন্ত্রী শনিবার দুপুরে খুলনা শহীদ হাদিস পার্কে বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়ন খুলনা বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে বিএনপি-জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় দেশে তা-ব চালিয়েছিল। সর্বস্তরের জনগণের প্রতিরোধে তারা লেজ গুটিয়ে ঘাপটি মেরে আছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের খুঁজে খুঁজে বের করছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদী কার্যক্রম এখন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মাদকের আগ্রাসন রয়েছে। গ্রাম পুলিশ সদস্যদের মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। মাদক যুব সমাজের জীবনীশক্তি ধ্বংস করছে। যুব সমাজসহ আমাদের সকলকে মাদকের, জঙ্গীর, বাল্যবিবাহ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, মন্ত্রী যখন ছিলাম না তখনও শ্রমজীবী মাষের পক্ষে কথা বলেছি। মন্ত্রী হওয়ার পরও শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে আছি। সাম্প্রতিক পরিবহন ধর্মঘট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শ্রমিকরা সংক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। এটা কেন্দ্রীয়ভাবে যখন সমাধান হয়ে গেল সেই মুহূর্তে আর এক শ্রমিকের ফাঁসির দ-ের খবর ছড়িয়ে পড়ায় সংক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সারা দেশে ধর্মঘট শুরু করে। পরে এটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তিনি বর্তমান সরকারকে জনবান্ধব, শ্রমবান্ধব উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্যই দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। সকল শ্রমজীবী মানুষের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে শ্রমিকের মজুরি সর্বনিম্ন ৫৩০০ টাকা করা হয়েছে। গ্রাম পুলিশের ভাতা দ্বিগুণ করে বর্তমানে ৩০০০ ও ৩৪০০ টাকা করা হয়েছে। গ্রাম পুলিশকে সপ্তাহে একদিন থানায় হাজিরা দেয়ার জন্য যাতায়াত ও দৈনিক ভাতা তিনশ’ টাকার আদেশ ইতোমধ্যে জারি হয়েছে। তাদের দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, এগুলো প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ সংগঠনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনূর রশিদ, সাবেক এসপি বীরবিক্রম মাহবুব উদ্দিন, খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমূল আহসান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন। বক্তৃতা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়ক শাহজাহান কবির জহীর, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন খান এবং কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমান্ডার মোস্তফা কামাল। সম্মেলনে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিপুলসংখ্যক গ্রাম পুলিশ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। মন্ত্রী পরে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসির জায়গা পরিদর্শন এবং বিকেলে খুলনা সার্কিট হাউসে মংলাবন্দর কর্তৃপক্ষের উপদেষ্টা কমিটির ১৩তম সভায় যোগদান ও রাত আটটায় ডুমুরিয়া উপজেলার বান্দা গ্রামে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
×