ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আবুল কাশেমের জঙ্গী সম্পৃক্ততার কথা জানত দিনাজপুরের পুলিশ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৫ মার্চ ২০১৭

আবুল কাশেমের জঙ্গী সম্পৃক্ততার কথা জানত দিনাজপুরের পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ রাজধানীতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যদের হাতে আটক নব্য জেএমবির নেতা মাওলানা আবুল কাশেমের জঙ্গী সম্পৃক্ততার কথা অনেক আগে থেকেই জানত দিনাজপুরের পুলিশ। তিনি চাকরি করতেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার অকড়াবাড়ী হামিদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায়। প্রায় ৮-৯ মাস চাকরি করেছেন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হিসেবে। তিনি যে জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এই ঘটনা আগে থেকেই জানতো পুলিশ। তবে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আগেই এখান থেকে সটকে পড়েন তিনি। এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাওলানা আবুল কাশেম এলাকায় ভাল মানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তবে বছরখানেক আগে অসুস্থ বলে ছুটি নিয়ে বাড়িতে যান তিনি। কিন্তু আর ফিরে আসেনি। পরে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে জানতে পারে, আবুল কাশেম জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। শনিবার দুপুরে ওই মাদ্রাসায় কথা হয় বর্তমান প্রিন্সিপাল আব্দুল মালেকের সঙ্গে। তিনি প্রায় ৫ মাস যাবত এখানে চাকরি করছেন। তার আগে আবুল কাশেম দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি নিখোঁজ থাকায় তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, যোগদান করার পর কোন কাগজপত্র তিনি এখানে পাননি। সবই আবুল কাশেম নিয়ে গেছেন। তাই কত দিন তিনি এখানে কর্মরত ছিলেন তা বলা যাচ্ছে না। মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি আলহাজ আব্দুল হামিদ শাহ্ জানান, আবুল কাশেমকে এই মাদ্রাসায় সর্বসাকুল্যে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হতো। গত বছরের জানুয়ারি মাসের বেতন নিয়ে অসুস্থতার কথা বলে তিনি বাড়িতে যান। এরপর আর তিনি ফিরে আসেনি। আবুল কাশেম মাদ্রাসা থেকে চলে যাওয়ার পর এখানে পুলিশ বেশ কয়েকবার অভিযান চালায়। পরে জানাজানি হয় যে, আবুল কাশেম জেএমবির সঙ্গে জড়িত। এই মাদ্রাসায় আবুল কাশেমের ৩ ছেলেও পড়াশোনা করত। মাদ্রাসার পরিবেশ নষ্ট যাতে না হয় এই স্বার্থে তাদের মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়া হয়। তিনি জানান, আবুল কাশেম আগের কোন হিসাব-নিকাশ রেখে যাননি। শুধু শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রার খাতা রেখে গেছেন। সাইতাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন জানান, তিনি যে জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তা কখনই অনুমান করা যায়নি। বেশ কয়েকবার তার সঙ্গেও কথা হয়েছে, কিন্তু বিষয়টি আঁচ করা যায়নি। যদি আঁচ করা যেত তাহলে তিনি নিজেই আবুল কাশেমকে পুলিশে ধরিয়ে দিতেন। তবে আবুল কাশেম যে জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এই ঘটনা আগেই জানতো পুলিশ। দিনাজপুরের পুলিশ সুপার হামিদুল আলম জানান, জঙ্গী সন্দেহে আগে থেকেই পুলিশ তাকে পর্যবেক্ষণ করছিল। কিন্তু অভিযানের আগেই মাদ্রাসা থেকে সটকে পড়ে আবুল কাশেম। পরে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
×