ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বড়াইগ্রামে বড় দুই দলের একক প্রার্থী ॥ লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৫ মার্চ ২০১৭

বড়াইগ্রামে বড় দুই দলের একক প্রার্থী ॥ লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৪ মার্চ ॥ সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন। এই নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী ও বিএনপির প্রার্থী উপজেলা বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক সাবেক জোনাইল ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম রাসেল চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন চলাকালীন অবস্থায় সংসদ সদস্যের এলাকায় কোন সভা সমাবেশ, অনুদান প্রদান নিষিদ্ধ। কিন্তু এমপি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ এবং অনুদান প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। সংসদ সদস্যের এই বিতর্কিত ভূমিকায় নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে। কারণ ইতোপূর্বে ইউপি নির্বাচনে সংসদ সদস্যের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে তিনজন এবং উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা বিএনপি কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনের প্রচার জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রার্থীদের বিরামহীন পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে উপজেলার প্রত্যেকটি এলাকা। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে প্রার্থীরা। ভোটারদের মন জয় করতে রাত-দিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গ্রাম-গঞ্জ, পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার, শহর-বন্দর চষে বেড়াচ্ছেন। মাইকিং, পোস্টারিং, উঠান বৈঠক, পথসভার পাশাপাশি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা। সোমবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৩৩৬ ভোটার ৮১টি কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই বড় দলের একক প্রার্থী হওয়ায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে সবাই মনে করছে। গুইমারায় তিন প্রার্থীই আশাবাদী পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি থেকে জানান, নানা শংকা ও পাল্টা-পাল্টি অভিযোগের মধ্য দিয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির নবগঠিত গুইমারা উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন। ফলে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ সরগরম হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে উত্তেজনা। তা সত্ত্বেও নির্বাচনে বিজয়ের স্বাদ পেতে সব প্রার্থীই মরিয়া। ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীরা ছুটছে প্রতিটি ভোটারের দ্বারে দ্বারে। চাচ্ছে ভোট আর দোয়া। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। প্রচারের শেষ মুহূর্তে গণসংযোগ, সেøাগান আর মাইকিং-এ মুখরিত শহরতলী থেকে গ্রামাঞ্চল। নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যানারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের এক প্রার্থী। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির জয়ে আশাবাদী হলেও আওয়ামী লীগ ও আঞ্চলিক দল ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থীরা পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ নিয়ে মাঠ গরম করছেন। পক্ষান্তরে ভোটাররা চান নতুন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। নবগঠিত গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সরকারী দল আওয়ামী লীগ প্রার্থী মেমং মারমা ও বিএনপির প্রার্থী ইউছুফের পাশাপাশি সমান তালে মাঠ চষে বেড়াচ্ছে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-(ইউপিডিএফ) সমর্থিত প্রার্থী উশেপ্রু মারমা। এছাড়া বিএনপি মনোনীত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী পূর্ন কান্তি ত্রিপুরা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হলাউচিং মারমা, আওয়ামী লীগের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুন্নবী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ঝর্ণা ত্রিপুরা, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মিল্টন চাকমা ও থোয়াইঅংগ্য চৌধুরী। গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মর্যাদার লড়াই হিসেবে বিবেচনা করছে। এই কারণে উভয় দলের নেতা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। প্রার্থীদের নিয়ে ঘুরছে ভোটারদের ঘরে ঘরে। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। বসে নেই ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-(ইউপিডিএফ) সমর্থিত প্রার্থী উশেপ্রু মারমাও। তবে সব প্রার্থীই নিজেদের বিজয়ে আশাবাদী হলেও ভোটাররা বলছে তারা সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে নিতে নতুন নির্বাচন কমিশনের অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রত্যাশা করছে। গুইমারা উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচনে দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের মেমং মারমা ও ইউসুফের মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নতা থাকলেও রাজনীতির মাঠে তারা দুজনই ক্লিন ইমেজের অধিকারী। ভোটার মহলের কাছে রয়েছে দুজনেরই পরিচিতি। দলে দুজনেরই গ্রহণযোগ্য সমানে সমান। তাদের ক্লিন ইমেজকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে তৎপর দুই প্রার্থী। বিএনপির প্রার্থী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয়ে আশাবাদী হলেও আওয়ামী লীগ ও ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থীরা পরস্পর বিরোধী অভিযোগ মাঠ গরম করে তুলছেন। হোসেনপুরে গলার কাঁটা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, হোসেনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মাঠে থাকায় বিজয়ের পথে গলার কাঁটা হতে পারে। এ অবস্থায় বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে দলীয় একক প্রার্থী থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। সোমবার অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম নূরু (নৌকা), উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম মবিন (ধানের শীষ) ও আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সোহেল (আনারস)। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের মাঝে দারুণ উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি ভোট প্রার্থনা করাসহ আনুষঙ্গিক প্রচার চালিয়েছে। সময় যত ঘনিয়ে আসছে চায়ের কাপ থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা। জলঢাকায় টাকা ছিটাচ্ছে জামায়াত প্রার্থী স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী থেকে জানান, জলঢাকা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা ফয়সাল মুরাদকে (টিউবয়েল) বিজয়ী করতে জামায়াত শিবিরের নাশকতা মামলার পলাতক আসামি নেতাকর্মীরা সর্বশক্তি দিয়ে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে। এমনকি বহিরাগত ক্যাডাররা এসে গোপনে অবস্থান নিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে এ জন্য দলটির পক্ষে লাখ লাখ টাকা মাঠে ছাড়া হয়েছে। সোমবার নির্বাচন। ফয়সাল মুরাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তিনি উপজেলার জামায়াতের সহসম্পাদক ও মিরগঞ্জ ইউনিয়নের জামায়াতের নাজেম পদের দায়িত্ব পালন করছেন। এই নির্বাচনে মোট তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। অপর দুইজন হলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মশিউর রহমান বাবু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা জাসদ (ইনু) সভাপতি গোলাম পাশা এলিচ (তালা)। ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত জামায়াত শিবিরের ঘাঁটি বলে পরিচিত জলঢাকা উপজেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের পদটি জামায়াত বিএনপির দখলে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের পদটি আওয়ামী লীগের দখলে থাকলেও গত পৌর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আব্দুর ওয়াহেদ বাহাদুর দলীয় মনোনয়নে পৌর মেয়র পদে প্রার্থী হলে ওই পদটি শূন্য হয়। পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুর ওয়াহেদ বাহাদুর পরাজিত হন। অসময়ে জলঢাকা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের এই উপ-নির্বাচনে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর জলঢাকা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মশিউর রহমান বাবুর অভিযোগ, জামায়াত শিবিবের নেতাকর্মীরা লাখ লাখ টাকা নিয়ে মাঠে নেমে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে। তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয় ঠেকানোর ফায়দা হাসিলে উপজেলা জাসদের সভাপতি গোলাম পাশা এলিচকে প্রার্থী করেছে। অথচ মহাজোটের শরীক দল জাসদ (ইনু)। এর পেছনে চক্রান্ত করা হয়েছে। কুমিল্লায় সব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ॥ দাবি বিএনপির নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা থেকে জানান, সোমবার অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে শংকা প্রকাশসহ দলীয় নেতাকর্মী ও এজেন্টদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে নগরীর কান্দিরপাড়স্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল কাইয়ুম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, উপজেলার ৫৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৪৬টি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম, কিন্তু সরকারদলীয় প্রার্থীর লোকজন ধানের শীষের সমর্থক ও এজেন্টদের মারধর, হুমকি, উঠানবৈঠকে হামলা ও ফাঁকা গুলি, একাধিক স্থানে ভাংচুরের ঘটনা ঘটানোর কারণে এখন সব কটি ভোট কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসার ও পুলিশকে এসব ঘটনার বিষয়ে অবহিত করার পরও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। সংবাদ সম্মেলনে রেজাউল কাইয়ুম প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পুলিশ পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব মোতায়েনসহ সেনাবাহিনীর টহলের দাবি জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি নেতা সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, ফজুলল হক ফজলু, এ্যাডভোকেট আলী আক্কাস, আবদুর রউফ চৌধুরী ফারুক, শফিউল আলম রায়হান, সরোয়ার জাহান দোলন, সাবেরা আলাউদ্দিনসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×