ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন নীতিমালার কারণেই আইপিও অনুমোদন কমেছে

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ৫ মার্চ ২০১৭

নতুন নীতিমালার কারণেই আইপিও অনুমোদন কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলসের কারণে যেসব কোম্পানি পুরনো নিয়মে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় ছিল, সেগুলোকে নতুন আইনের অধীনে নতুন করে আবেদন করতে হয়েছে। যার কারণে আইপিও অনুমোদন কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর আগে সংস্থাটির নিকট ২০১৬ সালে নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তি কেন কমেছে বলে উন্নয়ন সহযোগী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানতে চেয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিএসইসি ভবনে আইএমএফের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংস্থাটির কাছে এ বিষয়ে জানতে চায়। এ সময় বিএসইসির পক্ষ থেকে দেশের পুঁজিবাজারে বিভিন্ন সংস্কার ও অগ্রগতির পাশাপাশি গেল বছরে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) হ্রাসের কারণ তুলে ধরা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নতুন সংশোধিত আইনে আরও বেশি ডিসক্লোজার সংযোজন করার বাধ্যবাধকতা যোগ হওয়ায় এগুলো পরিপালনে কোম্পানি ও ইস্যু ম্যানেজারদের কিছুটা সময় লেগেছে। গত বছর মূলত এ কারণেই কোম্পানির তালিকাভুক্তি কিছুটা কমেছে। তবে আইপিওতে তালিকাভুক্তির হার কমলেও প্রাইভেট প্লেসমেন্ট ও বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সরবরাহের প্রক্রিয়া অব্যাহত ছিল বলে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেছে কমিশন। বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, আইএমএফের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কমিশনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছে। এ সময় তারা জানতে চেয়েছে, ২০১৬ সালে আইপিওতে কোম্পানির তালিকাভুক্তি কেন কমেছে। আমরা বলেছি পাবলিক ইস্যু রুলস সংশোধনের ফলে নতুন করে আবার আবেদন করার বাধ্যবাধকতা থাকায় গত বছর আইপিও কিছুটা কম হয়েছে। তাছাড়া বাজারের উন্নয়নে আমাদের মাস্টারপ্ল্যানের বিষয়েও প্রতিনিধি দলটি জানতে চেয়েছে। আমরা তাদেরকে বিগত সময়ে বাজার উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেছি। পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসির ভূমিকা তুলে ধরতে প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়, বিভিন্ন ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বর্তমানে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। বাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিগত কয়েক বছরে বেশকিছু সংস্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএসইসির নতুন ভবন নির্মাণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর বৈশ্বিক সংগঠন আইওএসসিওর ‘এ’ ক্যাটাগরির সদস্যপদ, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি এবং আইডিআরএর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, ১০ বছর মেয়াদী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, ভারতীয় সেবি ও বিএসইসির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, বিএসইসি অধ্যাদেশ ১৯৬৯ ও বিএসইসি আইন ১৯৯৩ সংশোধন, কর্পোরেট বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট অব ডেট সিকিউরিটিজ রুলস প্রণয়ন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর ডিমিউচুয়ালাইজেশন, অত্যাধুনিক সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার সংযোজন করা হয়। সংস্কার কাজের মধ্যে রয়েছে- ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রম চালু, পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত একাডেমি প্রতিষ্ঠা, স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য স্বতন্ত্র লেনদেন বোর্ড প্রবর্তনের পরিকল্পনা, কর্পোরেট গবর্ন্যান্স গাইডলাইন প্রণয়ন, বুক বিল্ডিং পদ্ধতির সংশোধন, ইক্যুইটি রিসার্চ রুলস প্রবর্তন, তদন্ত ও এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠনের মতো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের ফলে আগের তুলনায় বাজার আরও বেশি স্থিতিশীল হয়েছে এবং এতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বেড়েছে। এ সময় চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বে কমিশনার অধ্যাপক মোঃ হেলাল উদ্দিন নিজামী, মোঃ আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক স্বপন কুমার বালাসহ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×