ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা জীববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৪ মার্চ ২০১৭

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা জীববিজ্ঞান

Taslima Afroz Blessed with SHAH MD.IDRIS ALI & HAMIDA ALI C/O Md. Sofiul Haq Khandakar (Shohag) M.Sc. (First Class 1st), B.Sc. (First Class 9th) Achieved: Best Teacher Award, Lecturer in Zoology, Arambagh High School & College, Arambagh, Motijheel, Dhaka -1000. Mob: 01717-293619 e-mail: [email protected] দ্বিতীয় অধ্যায়: জীবকোষ ও টিস্যু সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। ইতোপূর্বে তোমরা উদ্ভিদ টিস্যু (Plant Tissue)র মধ্যে ভাজক টিস্যু ও স্থায়ী টিস্যু (সরল টিস্যূ)র মধ্যে সরল টিস্যু, জটিল টিস্যু (জাইলেম) সম্পর্কে জেনেছো। আজকের আলোচনা : জটিল টিস্যু (Complex Tissue) র মধ্যে ফ্লোয়েম টিস্যু, নিঃস্রাবী টিস্যু ও প্রাণি টিস্যু (Animal Tissue)। ২) ফ্লোয়েম (Phloem) : এরা জাইলেমের সাথে একত্রে পরিবহন টিস্যুগুচ্ছ গঠন করে। সীভনল, সঙ্গীকোষ, ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা ও ফ্লোয়েম তন্তু নিয়ে ফ্লোয়েম টিস্যু গঠিত হয়। কাজ: জাইলেম যেমন খাদ্যের কঁচামাল পানি সরবরাহ করে তেমনি ফ্লোয়েম পাতায় প্রস্তুত খাদ্য উদ্ভিদদেহের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করে। ফ্লোয়েমে কয়েক ধরনের কোষ থাকে, যেমন- সিভকোষ, সঙ্গীকোষ, ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা ও ফ্লোয়েম ফাইবার বা তন্তু। ক) সিভকোষ (ঝরবাব পবষষ) : এরা বিশেষ ধরনের কোষ। দীর্ঘ, পাতলা কোষপ্রাচীরযুক্ত ও জীবিত এ কোষগুলো লম্বালম্বি ভাবে একটির উপর একটি পরপর সজ্জিত হয়ে সিভনল (ঝরবাব ঃঁনব) গঠন করে। এ কোষ গুলো চালুনির মতো ছিদ্রযুক্ত সিভিপ্লেট দ্বারা পরস্পর থেকে আলাদা থাকে। সিভকোষে প্রোটোপলাজম প্রাচীর ঘেঁষে থাকে। ফলে একটি কেন্দ্রীয় ফাঁপা জায়গার সৃষ্টি হয়, যা খাদ্য পরিবহনে নল হিসেবে কাজ করে। এদের প্রাচীর লিগনিন যুক্ত। পরিণত সিভকোযে কোনো কেন্দ্রিকা থাকেনা। অবস্থান: সকল প্রকার গুপ্তবীজী উদ্ভিদের ফ্লোয়েমে সিভকোষ ও সিভনল উপস্থিত থাকে। কাজ: পাতায় প্রস্তুত খাদ্য উদ্ভিদদেহের বিভিন্ন লম্বচ্ছেদ অংশে পরিবহন করা এদের প্রধান কাজ। খ) সঙ্গীকোষ (ঈড়সঢ়ধহরড়হ পবষষ): প্রতিটি সিভকোষের সাথে প্যারেনকাইমা জাতীয় একটি করে কোষ অবস্থান করে। এদের কেন্দ্রিকা বেশ বড়। ধারণা করা হয় যে, এই কেন্দ্রিকা সিভকোষের কার্যাবলি কিছু পরিমাণে হলেও নিয়ন্ত্রণ করে। এ কোষ প্রোটোপলাজমপূর্ণ ও পাতলা প্রাচীরযুক্ত। ফার্ন ও ব্যক্তিবীজী উদ্ভিদে এদের উপস্থিতি নেই। গ) ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা (চযষড়বস ঢ়ধৎবহপযধুসধ): ফ্লোয়েমে উপস্থিত প্যারেকাইমা কোষগুলোই ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা। গঠন: এদের কোষ সাধারণ প্যারেনকাইমার মতো পাতলা কোষপ্রাচীরযুক্ত এবং প্রোটোপ্লাজমযুক্ত। অবস্থান: একবীজপত্রী উদ্ভিদ ব্যতীত দ্বিবীজপত্রী, আবৃতবীজী ও নগ্নবীজী এবং ফার্ন উদ্ভিদের ফ্লোয়েমে এদের পাওয়া যায়। কাজ: এরা খাদ্য সঞ্চয় করে ও খাদ্য পরিবহনে সহায়তা করে। ঘ) ফ্লোয়েম ফাইবার বা তন্তু (চযষড়বস ভরনৎব) : স্কেরেনকাইমা কোষ সমন্বয়ে ফ্লোয়েম ফাইবার গঠিত হয়। এগুলো এক প্রকার দীর্ঘ কোষ যাদের প্রান্তদেশ পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে। এদের বাস্টফাইবারও বলে। পাটের আঁশ এক ধরনের বাস্টফাইবার। উদ্ভিদ অঙ্গের গৌণ বৃদ্ধির সময় এ ফাইবার উৎপন্ন হয়। এসব কোষের প্রাচীরে কূপ দেখা যায়। কাজ: ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে পাতায় উৎপাদিত শর্করা ও মূলে সঞ্চিত খাদ্য একই সাথে উপরে-নিচে পরিবাহিত হয়। নিঃ¯্রাবী টিস্যু (ক্ষরণকারী) : যেসব টিস্যু থেকে মধু, তরুক্ষীর, রেজিন নিঃসৃত হয় তাকে নিঃ¯্রাবী বা ক্ষরণকারী টিস্যু বলে। এই টিস্যু দুই প্রকার। যথা: তরুক্ষীর টিস্যু ও গ্রন্থি টিস্যু প্রাণি টিস্যু (অহরসধষ ঞরংংঁব): বহুকোষী প্রাণীদেহে অনেক কোষ একত্রে কোন বিশেষ কাজে নিয়োজিত থাকে। একই ভ্রুণীয় কোষ থেকে উৎপন্ন হয়ে এক বা একাধিক ধরনের কিছু সংখ্যক কোষ জীবদেহের কোনো নির্দিষ্টস্থানে অবস্থান করে সমষ্টিগতভাবে একটা কাজে নিয়োজিত থাকলে ঐ কোষগুলো সমষ্টিগতভাবে টিস্যু (ঞরংংঁব) বা তন্তু তৈরি করে। একটি টিস্যুর কোষগুলোর উৎপত্তি, কাজ এবং গঠন একই ধরনের হয়। টিস্যু নিয়ে আলোচনাকে টিস্যুতত্ত্ব (ঐরংঃড়ষড়মু) বলে। কোষ ও টিস্যুর মধ্যে পার্থক্য খুবই নির্দিষ্ট। কোষ, টিস্যুর গঠনগত ও কার্যকরী একক। যেমন লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেতরক্তকণিকা এবং অনুচক্রিকা বিভিন্ন ধরনের রক্তকোষ। এদের একত্রে তরল যোজক টিস্যু বলা হয়। তরল যোজকটিস্যু রক্ত দেহের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় শারীরবৃত্তীয় কাজে অংশ নেয়। প্রাণি টিস্যুর প্রকারভেদ: প্রাণি টিস্যু তার গঠনকারী কোষের সংখ্যা, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের নিঃসৃত পর্দাথের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে প্রধানত চার ধরনের হয়। নিচে প্রকারসহ বিভিন্ন টিস্যুর বর্ণনা দেওয়া হলো: পরবর্তীতে প্রাণি টিস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
×