ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশী পণ্যের নতুন বাজার হচ্ছে আফ্রিকা

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৪ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশী পণ্যের নতুন বাজার  হচ্ছে আফ্রিকা

এম শাহজাহান ॥ নিট পণ্যের রফতানি বাড়াতে কেনিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চুক্তির আওতায় শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা চাবে বাংলাদেশ। পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের নতুন বাজার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে আফ্রিকা। বর্তমানে আফ্রিকার ২৭টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে মিসর, কেনিয়া, লিবিয়া, মরক্কো ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে। বর্তমানে কেনিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বেসরকারী খাত বিশেষ করে নিট পণ্যের উদ্যোক্তারা চেষ্টা করছেন আফ্রিকার এই দেশটিতে রফতানি বাড়াতে। এ লক্ষ্যে কেনিয়ার একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এখন বাংলাদেশ সফর করছে। আশা করা হচ্ছে, প্রতিনিধিদলটির সফরের মধ্যদিয়ে কেনিয়ায় নিট পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, বাংলাদেশ সফররত কেনিয়া প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে অভ্যর্থনা ও বাণিজ্যিক বৈঠক করতে যাচ্ছে নিট পণ্যের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএ। নিট পণ্যের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সফররত কেনিয়ার ১১ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে শীঘ্রই এ সংক্রান্ত চুক্তি করবে বিকেএমইএ। বিকেএমইএ জানিয়েছে, কেনিয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় নিট পণ্যের রফতানি বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই সুবিধা পাওয়া গেলে আফ্রিকার এই দেশটিই হবে বড় নতুন বাজার। কেনিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির মিনিস্ট্রি অব ইন্ডাস্ট্রি এ্যান্ড ট্রেড কোঅপারেটিভের সম্মানিত প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি মি. জুলিয়াস কবির। এদিকে আফ্রিকার আলজিরিয়া, এ্যাঙ্গোলা, বেনিন, বতসোয়ানা, মিসর, ইথিওপিয়া, ঘানা, লেসোথো, লিবিয়া, মালি, মরিশাস, মরক্কো, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নাইজিরিয়া, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, দক্ষিণ সুদান, সোয়াজিল্যান্ড, তাঞ্জানিয়া, তিউনিসিয়া, উগান্ডা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। আলজিরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা চুক্তি ও দ্বিপক্ষীয় প্রটোকল রয়েছে। দেশটিতে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্য ও ওভেন পোশাকের চাহিদা রয়েছে। এদিকে, নিট পণ্যের পাশাপাশি কেনিয়া বাংলাদেশ থেকে পাটপণ্য নিতে পারে। এ ছাড়া জুট ইয়ার্ন, চা, হস্তশিল্প প্রভৃতি রফতানি করতে পারে বাংলাদেশ। তথ্যমতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ কেনিয়ায় ৭ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। আর ১ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। দিন দিন রফতানির পরিমাণ বাড়ছে। সূত্র জানিয়েছে, আজ শনিবার কেনিয়ার প্রতিনিধিদলটি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং বিকেএমইএর সভাপতি এ.কে.এম সেলিম ওসমানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে বৈঠক করবে। ওই বৈঠকে এ সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি সই করা হতে পারে। বৈঠকে বাণিজ্য সচিব শুভাশিস বোস, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আফ্রিকা উইং) শামসুল হুদার উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। জানা গেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে আফ্রিকায়। বিশেষ করে বাংলাদেশের পাট, পাটপণ্য ও তৈরি পোশাকের বাজার রয়েছে আফ্রিকায়। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী পাটপণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পাটপণ্য উৎপাদনের সামর্থ্য বৃদ্ধি ও যথাযথ কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হলে আফ্রিকায় ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব হবে।
×