ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরলেন টোরেস

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৪ মার্চ ২০১৭

মৃত্যুর দুয়ার থেকে  ফিরলেন টোরেস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আঘাত পেয়ে খেলার মাঠে মৃত্যুর ঘটনা খুব বেশি নেই। তবে আঘাত পাওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনা আছে বেশ কিছু। এমন শঙ্কার মধ্যেই পড়ে গিয়েছিলেন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ফার্নান্ডো টোরেস। বৃহস্পতিবার রাতে স্প্যানিশ লা লিগা ফুটবলে স্বাগতিক ডিপোর্টিভো লা করুনার মুখোমুখি হয়েছিল অতিথি এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। এই ম্যাচেই মাথায় গুরুতর আঘাত পান ৩২ বছর বয়সী টোরেস। খেলোয়াড়ী জীবনে আগেও অনেকবার হেড করেছেন। হেড থেকে গোলও আছে অনেক। কিন্তু ভয়ঙ্কর এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনও হতে হয়নি টোরেসকে। যে হেড জীবনই কেড়ে নিতে চেয়েছিল। ভাগ্য ভালমৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন তারকা এই ফুটবলার। ম্যাচের শেষ দিকে ঘটে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। যাতে মিনিট দশেক স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল লা করুনার গোটা গ্যালারি ম্যাচের বয়স তখন ৮৫ মিনিট। নিজেদের বক্সের সামনে বল দখলের লড়াইয়ে লাফিয়ে হেড করতে চেয়েছিলেন টোরেস। কিন্তু ধেয়ে আসা প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডার এ্যালেক্স বারগান্টিনোসের প্রচ- ধাক্কায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এমন পড়ে গিয়েও অনেকে উঠে দাঁড়ায়। তবে টোরেসের বেলায় বিষয়টি ছিল ভিন্ন। পড়ে গিয়ে সরাসরি মাথায় আঘাত লাগে মাটিতে। তারপরই নিস্তেজ হয়ে পড়েন। সাড়া দেননি। আকস্মিক এমন ঘটনায় বিহ্বল তখন দুই দলের খেলোয়াড়রাই। ডাগ আউটে এ্যাটলেটিকো কোচ দিয়াগো সিমিওনে বিলাপ করছিলেন কথার বাণে লাইন্সম্যানকে জর্জরিত করে। পড়ে থাকা টোরেসকে ঘিরে তখন দুই দলের খেলোয়াড়রা। দ্রুতই মাঠে ঢুকেন চিকিৎসক দল। চেষ্টা চলে মিনিট পাঁচেক। এরপর এ্যাম্বুলেন্সে করে তখনই নেয়া হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে। তখন টোরেসকে নিয়ে শঙ্কায় ছিল সবাই। ডাক্তাররাও প্রথমদিকে জানিয়েছিল, আঘাতটা গুরুতর। তবে সর্বশেষ খবর, সুস্থ আছেন টোরেস। হাসপাতালের চিকিৎসকরা সিটি স্ক্যান শেষে মাথায় বা ঘাড়ে কোন ধরনের খারাপ আঘাত খুঁজে পাননি। শুধু তাই নয়, টুইটারে ভক্তদের সুখবর দিয়েছেন টোরেস নিজেই। বলেছেন, ‘আমাকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তা করেছেন আপনারা। ধন্যবাদ আমার সুস্থতার জন্য। আপনারা প্রার্থনা করেছেন। এটা ছিল ভীতিকর অভিজ্ঞতা। আশাকরি দ্রুত ফিরতে পারব আপনাদের মাঝে।’ ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এ্যাটলেটিকো কোচ সিমিওনে বলেন, বেঞ্চে বসেই আমরা শব্দটা শুনতে পেয়েছি। কি বাজেভাবে যে পড়েছে। আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যে শব্দটা আমরা পেয়েছি সেটা টোরেসের ঘাড় ভাঙ্গার কিনা। আর্জেন্টাইন কোচ আরও বলেন, পুরো এ্যাটলেটিকো পরিবার ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তবে তার জ্ঞান ফিরেছে। টোরেসের যে কিছু হয়নি, এ যাত্রা যে তিনি বেঁচে গেলেন তাতে সবচেয়ে মানসিক শান্তি বুঝি পেয়েছেন যার সঙ্গে সংঘর্ষ লেগেছিল সেই ডিপোর্টিভো ফুটবলার বারগান্টিনোস। এরই মধ্যে টোরেসের সঙ্গে তার কথাও হয়েছে। টোরেস সুস্থ আছেন বলে খুব ভাল লাগছে তার। বারগান্টিনোস বলেন, সে খুব ভাল আছে। সে আমাকে শান্ত থাকতে বলেছে। আর বলেছে এমন ঘটনা ফুটবলে ঘটতেই পারে। ঘটনাবহুল ম্যাচটিতে জিততে পারেনি কোন দলই। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। পিছিয়ে পড়ার পর এ্যাটলেটিকোর হয়ে সমতা ফেরান এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। ম্যাচ শেষে ফরাসী তারকা বলেন, আমি ফল নিয়ে ভাবছি না। আমি শুধু টোরেসের অবস্থা জানতে চাই। আশাকরছি সে ভাল আছে। দ্রুতই হয়ত সে মাঠে ফিরে আসবে।
×