ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দীপক চৌধুরী

বিএনপির অপশাসন বনাম উন্নয়নের মহাসড়ক

প্রকাশিত: ০৪:২০, ৪ মার্চ ২০১৭

বিএনপির অপশাসন বনাম উন্নয়নের মহাসড়ক

অগ্নিঝরা মার্চ। বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, চিকিৎসা এমনকি বাঙালীর অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে এ মাস। রয়েছে ইতিহাসের অনেক ঘটনা। স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন-সংগ্রামের অসংখ্য উজ্জ্বল-অনুজ্জ্বল কাহিনী রয়েছে। ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার ঘোষণার পরে জাতির পিতাকে গ্রেফতার করা হয়। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছাকে এবং আজকের আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সবাইকে গ্রেফতার করে ধানম-ির ১৮ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়। দেশ ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হলেও তাঁরা মুক্তি পান ১৭ ডিসেম্বর। এরপর জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষার পালা। সেই অপেক্ষার শেষ হয় ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। সুতরাং এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে জড়িয়ে রয়েছে শাসন-শোষণ, অগ্রগতি, উন্নয়ন। আজ স্বাধীন আমরা। দেশ আজ অগ্রগতি-উন্নয়নের পথে। বাংলাদেশ এখন বিশ^মানের পণ্য তৈরি করে রফতানি করছে। বিশ^বাজারে তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয়। এখন ১৬ কোটি মানুষের দেশ। আট কোটির বেশি কর্মক্ষম জনশক্তি, এদের বয়স গড়ে ২৫ বছরের মধ্যে। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশও স্বাভাবিক। সঙ্গত কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখেই বিদেশীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসছে। রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে পণ্য রফতানি ক্ষেত্রে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। দেশে এখন অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত। এজন্য বেশকিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মানুষের শান্তি আর স্বস্তির জন্য দরকার রাজনীতির স্থিতিশীলতা। কিন্তু এর উল্টোটা করতে একটি পক্ষ লেগেই আছে। বিরামহীন সন্ত্রাস করেছে, তা-ব চালিয়েছে, মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছেÑ সবকিছুই আন্দোলনের নামে। বাসে ঘুমন্ত যাত্রীকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারা ‘রাজনীতি’ হতে পারে না, এটা গণমানুষের সঙ্গে প্রহসন ছিল। এমন রাজনীতিকে ধিক জানিয়েছে সকল শ্রেণীর মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ শ্রমিক, মজুর, তাঁতিকে। বাংলাদেশকে তারা জঙ্গীবাদী রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা বাংলাদেশের একশ্রেণীর সুশীল নিয়ে নতুন যড়যন্ত্রে ব্যস্ত। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত বাইরে। বাংলাদেশকে তারা যে অপবাদই দিক না কেন, সবকিছুরই মোকাবেলা করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ এগিয়ে যায় দেশের মানুষের উন্নয়ন ঘটে। বাংলাদেশের এই উন্নয়ন পশ্চিমা কয়েকটি দেশের ভাল লাগে না। তারা বাংলাদেশের গায়ে বিভিন্ন তকমা লাগাতে তাদের আপ্রাণ চেষ্টা। তারা কখনও শ্রমিকদের স্বার্থে কথা বলে জিএসপি সুযোগ প্রত্যাহার করে, আবার কখনও গণতন্ত্রের কথা বলে তারা একাত্তরের ঘাতকদের ফাঁসি যেন কার্যকর করা না হয় এর জন্য চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু সকল বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অর্জন। এদেশের সবচেয়ে আলোচিত শব্দের নাম ‘দুর্নীতি’। এরই মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে দুর্নীতি করে কেউ পার পাচ্ছে না। যারা দুর্নীতি করেন তারা যেন বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে না থাকেন তা নিশ্চিত করা গেছে এবং এটা বর্তমান সময়ে চোখের সামনেই ভাসছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। এরপরও আওয়ামী লীগের বহু এমপি-মন্ত্রী-দলের প্রভাবশালী নেতাকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জেরার মুখে পড়তে হয়েছে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারসহ বিভিন্ন দলিলে, এমনকি ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ঘোষণার কথা রয়েছে। আইন প্রয়োগে ঘাটতি নেই, ছাড় দেয়া হচ্ছে না সাবেক বা বর্তমান মন্ত্রী-এমপিদেরও। দুর্নীতিতে বাংলাদেশ কখন পরপর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এটা সবারই জানা। বিএনপি-জামায়াতের আমলের সেই অনিয়মের রেশ এখনও টানতে হচ্ছে। টিআইবির প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল টানা পাঁচ বছর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ছিল। এখন সেই চিত্র নেই, নেই তখনকার সংস্কৃতি। সম্প্রতি প্রভাব খাটিয়ে প্লট বরাদ্দ দেয়া ও নেয়ার মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও আম্বার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আজিজ রাসেলকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শওকত আজিজ রাসেল পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এ হাশেমের ছেলে। গত ২ মার্চ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোঃ এমদাদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। বনানীর নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আমাদের স্মরণ আছে, দুদক চেয়ারম্যান হয়েই ইকবাল মাহমুদ দৃঢ়কণ্ঠে বলেছেন, তিনটি খাত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধে ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমসহ সবার সহযোগিতা চাই। দেশে শিক্ষার মান কমেছে। বিসিএস পরীক্ষায় যোগ্য লোক পাওয়া যায় না। গ্রেস দিয়ে পাস করাতে হয়। এ লজ্জা রাখার জায়গা নেই। শিক্ষার মান বাড়াতে এ খাতের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। কতিপয় লোক ব্যাংক থেকে জনগণের আমানত নিয়ে গেছে, সম্পদ লুট করেছে। তাদের ছাড়া হবে না, সে যে-ই হোক। ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাটকারীদের রেহাই নেই। তার এমন উচ্চারণ মানুষের মনে সাহস যোগায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে মানুষ দেখতে পাচ্ছে জবাবদিহিতা। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়েছে। আমাদের মতো দেশগুলোরই শুধু নয়, প্রতিটি উন্নত-অনুন্নত রাষ্ট্রের প্রধান প্রয়োজন উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা। একটি সরকারের দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজনীয়তা। বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে অবস্থান জনগণের জন্য অবশ্যই আশীর্বাদ। এর ফলেই গত আট বছরে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ভিশন ও গতিশীল নেতৃত্বে এটা সম্ভব হয়েছে। ১৯৭১ সালে বীরের গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে এ বিশ্বে যে জাতি- রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, সেই বাঙালী জাতি বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ১০টি ধনী দেশের কাতারে শামিল হওয়ার মিশন নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্বীকার করতেই হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল এবং স্বাভাবিক। গত বছরের ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজানে অপ্রত্যাশিত যে ঘটনা ঘটেছিল তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দক্ষতার সঙ্গে কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হয়েছে। দেশে-বিদেশে তা প্রশংসিত হয়েছে ও হচ্ছে। নিরাপত্তার দিক থেকে এখন বাংলাদেশে কোন ধরনের সমস্যা নেই। কারণ, এক দশক আগেও যেখানে রাজধানীতে প্রতিমাসে ৭০/৮০ জন খুন হতো সন্ত্রাস, ডাকাতি, চাঁদাবাজিতে ব্যবসায়ী মহলের মধ্যে অস্বস্তি ছিল, এখন সেটি নেই বললেই চলে। যোগাযোগের কথা যদি বলি প্রথমেই আসে রেলের কথা। রেলপথ হচ্ছে প্রধান গণপরিবহন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হিসাবমতে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেল স্টেশনগুলোর মধ্যে কমপক্ষে ৬০টি স্টেশন দ্রুত চালু করা হবে। সারাদেশের রেল যোগাযোগ উন্নয়নে কাজ হচ্ছে। নতুন নতুন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। কোচ আনা হচ্ছে। সবকিছুর উদ্দেশ্য যাত্রীদের সেবা বাড়ানো। রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক সেদিন এক অনুষ্ঠানে একথা বলে নিশ্চিত করেছেন, আগামী দু’বছরের মধ্যে রেলের অনেক প্রকল্প শেষ হলে যাত্রীদের অধিক হারে সেবা দেয়া সম্ভব হবে। গত ২ মার্চ রাজধানীর রেলভবনে রেল মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু সেতু রেল সংযোগ’ প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। যমুনা নদীর ওপর নতুন রেলসেতু নির্মাণ খুবই জরুরী। এই সেতু নির্মাণ হলে উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলসহ সমগ্র দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে রেল। আরও নতুন ট্রেন চালানো যাবে, অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে। ফলে সেতুটি দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে। জাতীয় এবং উপ-আঞ্চলিক রেলপথ যান চলাচলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে একটি পৃথক রেলসেতু নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২০২১ সালে দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনে রেলপথ একটি উদাহরণ হবে। বর্তমানের ধারা অব্যাহত থাকলে, কোনরকম বাধাগ্রস্ত না হলে এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ। প্রতিটি গ্রামই এক একটি নগর হিসেবে গড়ে উঠছে। গ্রামের মানুষও উন্নত জীবন পাবেÑ সেটা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ মহলের তাগিদ অনুভূত হচ্ছে মানুষের। এখন মানুষ বিশ্বাস করে, সমগ্র বাংলাদেশই হবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম হবে। খেলাধুলার প্রতি তাঁর ভালবাসা ফুটে ওঠে এই উচ্চারণে। সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলায় ২০২১-এর লক্ষ্য অর্জনে এ মুহূর্তে করণীয় সম্পর্কে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে দারিদ্র্যের হার আমরা কমাব, সাক্ষরতার হার বাড়াব, প্রতিটি ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া শিখবে, দেশের মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা পাবে, পুষ্টি পাবে। পুরো দেশ ডিজিটাল হবে। দেশের সব স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম হবে, স্কুল-কলেজসহ পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছু আমরা ডিজিটাল করে দেব। এ কথা আজ প্রমাণিত সত্য, বিএনপি চেয়ারপার্সনের নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে যুদ্ধাপরাধীরাও মন্ত্রী হয়েছে, তাদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ফাঁসি হয়েছে। খালেদার অতি বিশ্বস্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামায়াত নেতা নিজামী, মুজাহিদদের মৃত্যুদ- কার্যকরের পর বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস ’৭১-এর চেতনায় ফিরে এসেছে। সুতরাং বিএনপি-জামায়াত জোটের হাতে এদেশের গণতন্ত্র আসতে পারে না আর তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায়ও না। শুধু তাই নয়, বিএনপি-জামায়াত শেখ হাসিনার সরকার পতনের আন্দোলনের নামে আগুনে পুড়িয়ে সাধারণ মানুষ ও ২৩ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, গোয়েন্দা এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ সারাদেশে ২৩১ জন হত্যা, ৩ হাজার ৩৩৬ জনকে আগুনে পুড়িয়ে আহত করা, রেলগাড়ি, লঞ্চ ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, যা কখনও মানুষ ভুলতে পারেনি, পারবে না। তবে এটাও সত্য, আমাদের দুর্দিন কেটে গেছে বলে আমরা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারি না। বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে আনতে পেরেছি সত্য, তবে এখনও বহু পথ বাকি। এসব পথ বন্ধুর। দেশের শাসন ব্যবস্থায় নতুনত্ব আনতে চাইলে মেধাবী মানুষ দরকার। ছবি উঠিয়ে মোবাইল ফোনে ‘লাইক’ দিয়ে মুহূর্তেই ঝড় তোলা যায়, কিন্তু বাস্তবতা বড় কঠিন। কোন অর্জনই সহজে আসেনি। দেশ গড়ার প্রতিটি কাজে বাধা এসেছে। ’৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে ঘাতকদের নিজেদের স্বার্থে সোজা রাস্তাকে বাঁকা করেছে আবার বাঁকা রাস্তাকে সোজা। প্রশাসনে বেছে বেছে ঘাতকপক্ষের সমর্থকদের বসানো হয়েছে। সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের ছুড়ে ফেলা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে যারাই কথা বলেছেন তাদের কপালে ‘শনি’ চড়েছে। তবে এখন সেই যুগের অবসান হয়েছে। এজন্যই শিক্ষা, খাদ্য, চিকিৎসাসহ সকল স্তরে যোগ্য লোক দরকার। গণমুখী, আধুনিক ও ডিজিটাল দেশকে এগিয়ে নিতে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যোগ্য মেধাবী ও সাহসী লোক বসানো দরকার। তাই বলে কোথাও সৎ-দক্ষ মানুষ নেই একথা বলবার ধৃষ্টতা দেখাব না। জনপ্রশাসন সচিব ড. মোজাম্মেল হক খানকে চিনি। তিনি সিনিয়র সচিব, অত্যন্ত দক্ষ মানুষ। কখনও চেয়ারের অমর্যাদা করেননি। রাজনীতির দোহাই দিয়ে অন্যায়-অপকর্ম ভীষণ অপছন্দ তার। স্বরাষ্ট্র সচিব হিসেবে যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল কঠোর। কাজের মাধ্যমে নিজের সততা ও দক্ষতার প্রমাণ রাখতে সক্ষম তার মতো লোক প্রশাসনে দরকার। স্বীকার করতেই হবে, বাংলাদেশ বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল সহজে হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরামহীন চেষ্টা ও অবদান রয়েছে এর পেছনে। বাংলাদেশকে এখন আর কেউ দরিদ্র বা দুর্যোগের দেশ বলে অবহেলা করতে পারে না। বরং আমাদের উন্নয়ন আজকে তাদের কাছে দৃশ্যমান, তাদের কাছে মডেল। দেশে এক শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, দেশব্যাপী ১৩ হাজার ১৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যাওয়া, সামাজিক নিরাপত্তাবলয় সৃষ্টির দৃষ্টান্ত এখন জনগণের চোখের সামনে। লেখক : সাংবাদিক
×