ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নকল, ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে এক বছরে ২ হাজার মামলা

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ৩ মার্চ ২০১৭

 নকল, ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে এক বছরে ২ হাজার মামলা

সংসদ রিপোর্টার ॥ নকল, ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে গত এক বছরে (জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ) ভ্রাম্যমাণ আদালত ২ হাজার ১৬৯টি মামলা দায়ের করে ৬ কোটি ৬৬ হাজার ২৭ হাজার ৭শ’ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। আর নকল ও ভেজালের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ৫৮ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদী কারাদ- প্রদান এবং ৩৭ প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-১১ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ এম আবদুল লতিফের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সংসদে এ তথ্য উপস্থাপন করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, ২০১৬ সালে নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রির দায়ে ড্রাগ কোর্টে ৪১ এবং ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ৬৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এই ১ বছরে ১৭ কোটি টাকার ভেজাল ওষুধ জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জিএমপি গাইডলাইন অনুসরণ না করায় এবং ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনের দায়ে এ পর্যন্ত ৮৬ ওষুধ কোম্পানির লাইসেন্স সাময়িক বাতিল এবং ১৮ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমান সরকার মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধে দেশের বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল ফার্মেসি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। ফেনী-২ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জানান, নিয়মিত টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের জন্য গত ৭ বছরে বাংলাদেশ ৪টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ এমডিজি এ্যাওয়ার্ড, গ্যাভী এ্যালায়েন্স এ্যাওয়ার্ড, সাউথ সাউথ এ্যাওয়ার্ড ও পোলিও মুক্ত সার্টিফিকেট। ২০১০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর শিশু মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনাইটেড নেশন কর্তৃক এমডিজি এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০০৯ এবং ২০১২ সালে ২ বার বাংলাদেশ গ্যাভী এ্যালায়েন্স এ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। সর্বশেষ ২০১২ সালের ৫ থেকে ৭ ডিসেম্বর তানজানিয়ায় অনুষ্ঠিত গ্যাভী পার্টনারদের মিটিংয়ে বাংলাদেশের তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এএফএম রুহুল হক উক্ত সম্মাননা গ্রহণ করেন। ভোলা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ সরকার দলীয় সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর কিছু রোগী চিকিৎসার জন্য পার্শ¦বর্তী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে। তবে স্ব দেশের চিকিৎসার প্রতি রোগীদের আস্থা ফেরাতে সরকার চেষ্টা করছে। মন্ত্রী জানান, রোগীদের বিদেশ প্রবণতা কমাতে উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল/ বিশেষায়িত হাসপাতাল চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। বিদেশগামী রোগীদের চিকিৎসক ও নার্সের সুষ্ঠু এবং আন্তরিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের চিকিৎসার প্রতি আস্থা আনতে পারলে বিদেশেগামী চিকিৎসা গ্রহণের প্রবণতা অনেকাংশে রোধ সম্ভব হবে। সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করছে। এম আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকারী হাসপাতালের চেয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল/ক্লিনিকে তুলনামূলকভাবে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার অনেক। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এন্ড হেলথ সার্ভে-২০১১ অনুযায়ী সিজারিয়ানের হার ছিল ১৫ ভাগ। তবে ২০১৪ সালের সার্ভে অনুসারে সিজারিয়ানের হার ২৩ ভাগে উন্নীত হয়েছে। সরকারী হাসপাতালে প্রসবসেবা বাড়ানোর মাধ্যমে প্রাইভেট হাসপাতাল/ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের হার কমানোর লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
×