ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল

নতুন চ্যাম্পিয়ন টৈটং ও টেপুরগাড়ি স্কুল

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩ মার্চ ২০১৭

নতুন চ্যাম্পিয়ন টৈটং ও টেপুরগাড়ি স্কুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফাগুনের আগুনঝরা রোদে পাওয়া গেল দুই নয়া শিরোপাধারী স্কুলকে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট (সপ্তম আসর) এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে (ষষ্ঠ আসর) নতুন দুটি দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বালক বিভাগের ফাইনালে চট্টগ্রামের কক্সবাজারের পেকুয়ার টৈটং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টাইব্রেকারে (সাডেন ডেথে) ৫-৪ (১-১) গোলে সিলেটের জৈন্তাপুরের কামরাঙ্গী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারায়। এছাড়া বালিকা বিভাগের ফাইনালে রাজশাহীর চারঘাটের বড়বাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে রংপুরের লালমনিরহাটের পাটগ্রামের টেপুরগাড়ি বিকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খেলা উপভোগ করেন এবং বিজয়ী ও বিজিত দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার (২৫ হাজার টাকা) পায় যথাক্রমে টৈটং স্কুলের আবু হানিফ নোমান এবং মিনার উদ্দিন বুলেট। অনেকেই মজা করে বলেছে, ‘সাফল্যে টইটম্বুর টৈটং স্কুল।’ চ্যাম্পিয়ন দুই দল এক লাখ টাকা এবং রানার্সআপ দুই দল ৭৫ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া বালক বিভাগে বরিশালের বরগুনার আমতলীর পশ্চিম গাজীপুর অগ্রদূত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বালিকা বিভাগে খুলনার ঝিনাইদহের শৈলকুপার দোহারো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দল হিসেবে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পায়। সেই সঙ্গে শীর্ষ তিন দলের খেলোয়াড়, কোচ ও ম্যানেজাররা লাভ করেন জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে এবং ১টি করে মেডেল। ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় ৫০ মিনিটের (২৫+২৫ মিনিট)। বালক বিভাগের ফাইনালে খেলার ৫ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় সিলেটের কামরাঙ্গী স্কুল। গোলদাতা স্কুলটির অধিনায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক। তবে দ্বিতীয়ার্ধেই গোল করে সমতায় ফেরে টৈটং স্কুল। এই গোলটিও আরেক অধিনায়কের, মিনার উদ্দিন বুলেটের (১-১)। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হলে সরাসরি টাইব্রেকার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রথম পাঁচ শটে সমতা (৪-৪)। পরে সাডেন ডেথে জেতে টৈটং স্কুল (৫-৪)। টৈটং স্কুলের নূর মোহাম্মদ, মোঃ ইরফান, মোঃ আমজাদ, মিনার উদ্দিন বুলেট এবং মোঃ আরাফাত গোল করে। শট মিস করে আবু হানিফ নোমান। কামরাঙ্গী স্কুলের ফাহিম আহমেদ, শাহরিয়ার আহমেদ ইমন, তাওহিদুল ইসলাম তানজিল এবং তাওমিদ আহমেদ সাদেক গোল করে। মিস করে শাকিল আহমেদ এবং ছয়ফুল্লাহ্। বালিকা বিভাগে রংপুরের টেপুরগাড়ি স্কুল মিতু আক্তারের দেয়া একমাত্র গোলে হারায় রাজশাহীর বড়বাড়িয়া স্কুলকে। মজার ব্যাপার হচ্ছেÑ দুই ফাইনালের সময়সীমার চেয়েও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাপ্তি ছিল বেশি। খেলার মাঝের বিরতি ছিল ১০ মিনিট করে। অথচ এই ১০ মিনিটের পরিবর্তে ২০ মিনিট ধরে নাচ-গান করে ক্ষুদে নৃত্যশিল্পীরা। আর খেলা শুরু হওয়ার আগে তো ছিলই। প্রতিবারের মতো এবারও ফাইনাল দুটি অনুষ্ঠিত হয় ভর দুপুরে এবং প্রখর রোদে। বরাবরের মতো এবারও খেলা শুরুর আগে স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে ঢুকতে দেয়া নিয়ে সাংবাদিকদের হেনস্থা করা হয়েছে। নিজ অফিসের পরিচয়পত্র থাকার পরও বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের দোহাই তুলে সাংবাদিকদের প্রেসবক্সে ঢুকতে বাধা দেয় স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) দায়িত্বরত কর্মর্কতারা। প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে প্রেসবক্সে ঢোকার পরও শান্তি নেই। সেখানে নোংরা, ধুলাবালিতে আচ্ছন্ন। পরে অনেক চেষ্টা পর এগুলো পরিষ্কার করা হয়। এসি চালু ও খাবার জল সরবরাহ করা হলেও ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়নি। গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় এই দুটি আসরের জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত পর্ব। এ দুটি টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলায় ৭টি বিভাগের ১৪টি চ্যাম্পিয়ন দল অংশগ্রহণ করে। এ প্রতিযোগিতায় ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু হয়ে উপজেলা, জেলা ও বিভাগ হয়ে জাতীয় পর্যায়ে পৌঁছে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে এবারের অংশগ্রহণকারী স্কুলের সংখ্যা ৬৪ হাজার ২৬০ এবং অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড় সংখ্যা ১০ লাখ ৯২ হাজার ৪২০। বঙ্গমাতা ফুটবলে অংশগ্রহণকারী স্কুলের সংখ্যা ৬৪ হাজার ১৯৬ ও খেলোয়াড় সংখ্যা ১০ লাখ ৯১ হাজার ৩৩২। উল্লেখ্য, গত বছরের চেয়ে দল ও খেলোয়াড় সংখ্যা এবার অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) জানিয়েছে, এ বিষয়টি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-বইকে তারা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যেই কার্যক্রম শুরু করেছেন। কেননা, সংখ্যার দিক থেকে বিবেচনা করলে এ টুর্নামেন্ট দুটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট।
×