ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খামার নয় পোল্ট্রি এখন কোম্পানি

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৩ মার্চ ২০১৭

খামার নয় পোল্ট্রি এখন কোম্পানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পোল্ট্রি শিল্পে বিপ্লব চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এখন পোল্ট্রিতে কোনো খামারি নেই, সব কোম্পানিতে রূপ নিয়েছে। এই শিল্পে এখন বিনিয়োগের অঙ্ক ২৫ হাজার কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ১০ম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে যখন পোল্ট্রি শিল্প উন্নতির দিকে যাচ্ছিল ঠিক তখনই হানা দেয় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (এভিয়ান ফ্লু ভাইরাসজনিত মুরগির একটি মারাত্মক সংক্রামক ও ছোঁয়াচে রোগ), কিন্তু আমরা এর প্রতিষেধক নিয়ে আসি। এরপর শুরু হয় পোল্ট্রি শিল্পের উন্নতির বিপ্লব। মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৭ সালে দেশে পোল্ট্রি শিল্পের আবির্ভাব হলেও অল্প দিনেই উন্নতি সাধন করে। কিন্তু আকস্মিক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার আঘাত আমাদের এ খাতকে পিছিয়ে দিতে থাকে। বাংলাদেশে যখন এই রোগ ছড়ায় তখন ২০০৭ সালের সরকারে অনেক শিক্ষিত লোক থাকলেও এর প্রতিষেধক নিয়ে কেউ ভাবেনি। ২০০৯ সালে আমাদের সরকার এসে ওই ভাইরাসজনিত রোগের প্রতিষেধক নিয়ে আসে। আর এতেই পোল্ট্রি শিল্পে বিপ্লব শুরু হতে থাকে। তিনি বলেন, ছোট ছোট উদ্যোক্তার অবদানে পোল্ট্রি শিল্প আজ বড় হয়েছে। এসব ছোট উদ্যোক্তার সহযোগিতায় পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আজকে আপনাদের এত বড় অবস্থানের পেছনে মূল ভূমিকা গ্রামের ছোট ছোট খামারিরা, ছোট ছোট উদ্যোক্তারা। তিনি বলেন, গ্রামের ছোট ছোট খামারিরা যখন পুঁজি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে তখন তারা ধার-কর্জ করে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আবার খামার দাঁড় করিয়েছেন। এই শিল্পকে এত বড় করেছেন। পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, সেদিন এসব ছোট খামারিরা আপনাদের পাশে না দাঁড়ালে আজ আপনারা কোম্পানি হতেন না। কর্পোরেট হাইজে পরিণত হতেন না। তাই এদের দিকে আপনারা তাকাবেন। এদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে কিভাবে উপরে তুলে আনা যায়, কিভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ানো যায় সেটা ভাবুন। প্রদর্শনী ঘুরে দেখা গেছে, এবারের মেলায় দেশী-বিদেশী মোট ১৯৫টি পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট কোম্পানি তাদের পণ্য ও প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেলায় রয়েছে ৪৯০টি স্টল। আরও থাকছে ফুড কোর্ট। বিশ্বের ২০টি দেশের প্রতিনিধিরা ৩ দিনব্যাপী এ শোতে অংশ নিয়েছেন। পোল্ট্রি দুনিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, পণ্য ও জ্ঞান সবার জন্য উন্মুক্ত করতে মেলায় প্রবেশ এবং সেমিনারে অংশগ্রহণ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা মোট ১০৪টি টেকনিক্যাল পেপার উপস্থাপন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট, প্রফেসর নিং ইয়াং এবং সেক্রেটারি জেনারেল ড. রোয়েল ডব্লিউ এ ডব্লিউ মুলডার প্রমুখ। এবারের পোল্ট্রি শোর সেøাগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘পোল্ট্রি ফর বেটার টুমরো’। ৩ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি)।
×