কাদের খানের সোর্স চন্দনের ভগ্নিপতি নজরবন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ১ মার্চ ॥ গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় কাদের খানের অন্যতম সহযোগী হিসেবে সম্পৃক্ত সুবল চন্দ্র সরকারকে রংপুরের সেবা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ প্রহরায় নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে। চিকিৎসা শেষে তাকে আটক করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এই সুবল চন্দ্র কাদের খানের অন্যতম সোর্স চন্দন সরকারের ভগ্নিপতি এবং পেশায় মাংস বিক্রেতা (কসাই)। এমপি লিটনের কিলিং মিশনের অন্যতম খুনি মেহেদী হাসানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, এই সুবল চন্দ্রও কাদের খানের সোর্স হিসেবে কাজ করত এবং লিটনের গতিবিধি সম্পর্কে তাদের তথ্য প্রদান করত। এই খুনের সংশ্লিষ্টতায় যে সমস্ত মোবাইল কথোপথন ট্র্যাকিং করা হয়েছে তাতে চন্দন সরকার, মেহেদী এবং কাদের খানের সঙ্গে ফোনালাপে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। হত্যার দিন লিটনের গতিবিধি এবং বাড়ির পরিবেশ সম্পর্কে খুনিদের সার্বক্ষণিক তথ্য প্রদান করতে সুবল চন্দ্র বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের শাহবাজ মাস্টারপাড়ার এমপির বাড়ির আশপাশেই অবস্থান করে মোবাইল ফোনে তথ্য প্রদান অব্যাহত রেখেছে। পিত্তথলির পাথর অপারেশনের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি সুবল চন্দ্র রংপুরের ওই ক্লিনিকে ভর্তি হয়। পুলিশ তদন্তপূর্বক তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুরের ওই ক্লিনিকে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তাকে নজরবন্দী করে রাখে। এদিকে সুবল চন্দ্র সরকার সম্পর্কে জানা গেছে, সে সুন্দরগঞ্জের একজন টেরর এবং খুনের আসামি। ১৯৮৭ সালে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের একজন সদস্য হিসেবে পুলিশ তার বাড়িতে রেইড করে অস্ত্র উদ্ধার করে। এই ডাকাতি মামলায় সে দীর্ঘদিন জেলও খেটেছে। এছাড়া যে খুনের মামলাটিতে সে আসামি ছিল সেই মামলাটি মীমাংসা হওয়ায় তা থেকে সে রেহাই পায়। কাদের খানের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ সহচর ও নীতিনির্ধারক জাতীয় পার্টির বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন শাখার সভাপতি রেজাউল হককে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমপি লিটনের হত্যাকা-ে কাদের খানের সম্পৃক্ততা হওয়ার খবর পেয়েই সে এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছে। কাদের খান এমপি থাকাকালীন এবং পরবর্তী পর্যায়েও তার সকল কর্মকা-ে সম্পৃক্ত ছিল এই রেজাউল হক। যার মূলতঃ কট্টর লিটনবিরোধী হিসেবেও এলাকায় পরিচিতি রয়েছে। কাদের খানের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ॥ এমপি লিটন হত্যায় জড়িত কাদের খানসহ সকল খুনি ও সহযোগিদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তর এবং ফাঁসির দাবিতে বুধবার চন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- এম এ হাবীব সরকার, হান্নান সরকার, সমেস উদ্দিন বাবু, জাহাঙ্গীর আলম, সুনীল চন্দ্র, নাদিম হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, দেলোয়ার হোসেন, জাহেদুল ইসলাম জাভেদ প্রমুখ। সুন্দরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়ন ও সকল ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করে।