ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রমিক না মালিক কার স্বার্থে বার বার এই পরিবহন ধর্মঘট

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২ মার্চ ২০১৭

শ্রমিক না মালিক কার স্বার্থে বার বার এই পরিবহন ধর্মঘট

রাজন ভট্টাচার্য ॥ মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে যানবাহন চলতে দেয়া হবে না, এমন ঘোষণা আসে খোদ সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে। সিদ্ধান্ত যৌক্তিক। অথচ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের কাছে তা সঠিক নয়। দাবি ওঠে- মানি না। মানব না। চলুক পরিবহন ধর্মঘট! বাসে মাদকদ্রব্য পাওয়ার অভিযোগে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা অভিযুক্ত হলেও ধর্মঘট। অটোরিক্সা, ব্যাটারিচালিক রিক্সা সড়কে যাতায়াত করে। তাই বাসে যাত্রী কম হয়। উপায় একটা আছে। তা হলো; আরও কিছু দাবি দাওয়া যুক্ত করে ধর্মঘট আহ্বান। সড়ক দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যুর কারণে চালক দ-িত হলেই ধর্মঘট! পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ, ওয়েস্কেলে চাঁদাবাজি রোধ, সেতুতে বাড়তি টোল আদায়সহ খোঁড়া নানা অযুহাতে ডাকা হয় পরিবহন ধর্মঘট। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অনেক সময় ধর্মঘট করে অচল করে দেয়া হয় গোটা দেশ। চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই বলছেন, মূলত মালিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এসব কর্মসূচী দেয়া হয়ে থাকে। কর্মসূচীর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়েন পরিবহন মালিকরা। এজন্য কৌশলে কাজে লাগানো হয় শ্রমিকদের। অনেক ক্ষেত্রে পরিবহন মালিকরাই শ্রমিক ও মালিক সমিতির নেতা। পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন বছরে ১১৬টি পরিবহন ধর্মঘট পালন হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১০টি কর্মসূচী পালিত হয়েছে দেশব্যাপী। চলতি বছরের গত দুই মাসে ৬টি ধর্মঘট পালিত হয়েছে। এর মধ্যে একটি দেশব্যাপী হলেও বাকি আরও দুটি ধর্মঘটের কর্মসূচী সারাদেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সবচেয়ে বেশি ধর্মঘট পালিত হয় দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। তিন বছরে ১১৬ ধর্মঘট ॥ যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা ‘যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন বছরে নানা অযুহাতে ১১৬ পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচী পালিত হয়েছে। সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সালে সারাদেশে ৩১টি পরিবহন ধর্মঘট হয়েছে। সর্বনিম্ন ছয় ঘণ্টা ও সর্বোচ্চ ১০০ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মসূচী পালন করা হয়। এর মধ্যে দেশব্যাপী পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচী ছিল চারদিন। এছাড়াও ২০১৫ সালে ৪৭টি, ২০১৪ সালে ৩৮টি ধর্মঘট পালন করা হয। চলতি বছর ছয়টি ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। মোজাম্মেল হক জানান, অনেক সময় খোঁড়া অজুহাতে ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। কখন অভ্যন্তরীণ কোন্দল, রাস্তা মেরামত, সড়কে চাঁদাবাজি, পরিবহনে মাদক পাওয়ায় চালককে গ্রেফতারের কারণেও ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। কারণে অকারণে পরিবহন ধর্মঘটের মতো কঠোর কর্মসূচী দেয়া ঠিক নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কারণে অকারণে কর্মসূচী ॥ কারণে অকারণে দেয়া হয় ধর্মঘটের মতো জনভোগান্তির কর্মসূচী। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ব্যাপারে সরকারের এখন থেকেই লাগাম টেনে ধরা উচিত। অন্যথায় ভবিষ্যতে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের কাছে বার বার অযৌক্তিক ইস্যুতেও মাথা নত করা ছাড়া বিকল্প কিছুই থাকবে না। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি থেকে সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধসহ ১২ দফা দাবিতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় পণ্যবাহী যানবাহনের অনির্র্দিষ্টকালের ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। বছরের শুরুতেই এ ধর্মঘটের ডাক দেয় পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ১২ দফা দাবিগুলো হলো- পরিবহনে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই না করতে প্রেসনোট জারি, অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন, ওয়েব্রিজে জরিমানা বাতিল, ১২ হাজার টাকা স্কেল জরিমানা প্রত্যাহার, ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি ও অনিয়ম বন্ধ, কাগজপত্র পরীক্ষার নামে হয়রানি বন্ধ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ, ব্রিজের টোল কমানো, অপ্রয়োজনীয় স্পিড ব্রেকার অপসারণ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া, জ্বালানি তেলের দাম কমানো, ভারতের পেট্রোপোল বন্দরে চালকদের নির্যাতন বন্ধ ও গতবছর সীতাকু- থানায় ৪০০ জন অজ্ঞাত ট্রাক চালকদের নামে করা মামলা প্রত্যাহার। এই কর্মসূচীর কারণে খুলনা ও বরিশাল বিভাগ ও বৃহত্তর ফরিদপুরের ২১টি জেলায় পণ্য পরিবহন বন্ধ ছিল। সারাদেশে প্রায় পৌনে দুই লাখ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের আকৃতি পরিবর্তন করে লম্বায় সাত ফুট ও চওড়ায় দুই ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। বডিতে লাগানো হয়েছে তিনকোনা আকৃতির লোহার পাতের এ্যাঙ্গেল। সামনে-পেছনে আছে বাম্পার। অনেক বাস-মিনিবাসেরও আকৃতি পরিবর্তন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের জন্যই এভাবে আকৃতি পরিবর্তন করা হয়েছে, যা মোটরযান আইনের পরিপন্থী এবং এটি সড়ক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। গত রবিবার এ বিষয়ে বিআরটিএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। আগামী শনিবার পুনরায় বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্র জানায়। এর আগে ২৩ জানুয়ারি ২১ জেলায় ধর্মঘট ডাকার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মালিক-শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়। এসব দাবি দাওয়া আদায়ে কয়েকদফা কঠোর কর্মসূচী দেয়ার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। গত বছরের পাঁচ জুন নেত্রকোনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্তঃজেলা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা পরিবহন মালিক সমিতি ও কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন। করিমন-নসিমন ও সিএনজি-অটোরিক্সাচালিত সব ধরনের যানবাহন মহাসড়কে চলাচল বন্ধের দাবিতে এ কর্মসূচী দেয়া হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন নামের সংগঠনটি গত বছরের ১৫ মে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের পরিবারের পক্ষ থেকে করা ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধেও ধর্মঘট পালন করে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জামির হোসেনকে ২০১১ সালে গ্রেফতার করার পর তাঁর মুক্তির দাবিতে মালিক-শ্রমিকরা যৌথভাবে সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট পালন করেন। শহীদ মিনারে শ্রমিক সমাবেশ করা হয়। জানতে চাইলে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ও নিরাপদ সড়ক চাই-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যেই এই ধর্মঘট। ১৯৮৩ সালেও তারা শক্তি প্রদর্শন করে সড়ক দুর্ঘটনার মামলার সাজা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়। অতীতে গাড়িতে মাদকদ্রব্য রাখার দায়ে গ্রেফতার হওয়া চালককে ছাড়াতেও তারা ধর্মঘট করেছে। মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো সব সময় আইনের উর্ধে থাকতে চায়। এবার তারেক মাসুদ, মিশুক মনিরসহ সাভারে সংঘঠিত আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনার চালকের মৃত্যুদ-ের রায়ের পর ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বুধবার পর্যন্ত আঞ্চলিক এমনকি দেশব্যাপী ধারাবাহিক পরিবহন ধর্মঘট পালিত হলো। গোবিন্দগঞ্জ মালিক সমিতির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে গত বছরের ১৭ অক্টোবর গাইবান্ধায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। গোবিন্দগঞ্জ হয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক দিয়ে বিভিন্ন রুটে গাইবান্ধা থেকে যান চলাচল করে। এর মধ্যে সুন্দরগঞ্জ, বেলকা ও পাঁচপীর ফিডার রুটও রয়েছে। এসব রুটে গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে যাওয়া সব ধরনের যান চলাচল হঠাৎ বন্ধ করে দেয় গোবিন্দগঞ্জ মোটর সব রুটে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেন। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, সড়ক পরিবহন, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার, নৌপরিবহন এই চার মন্ত্রণালয় মূলত পরিবহনসহ সড়ক যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের নানাভাবে সঙ্গে যুক্ত। বিআরটিএ সূত্র জানায়, সরকারের কোন সিদ্ধান্ত মালিক-শ্রমিকদের মনঃপূত না হলেই তারা ধর্মঘট করে। কিন্তু আন্তঃমন্ত্রণালয় মিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ হয়। মজার বিষয় হলো, এই চার মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দুটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনেরও শীর্ষ নেতা। তাদের মধ্যে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান হলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা হলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি। অথচ তাদের কর্তৃত্বের মধ্যে সর্বোচ্চ রকমের জনভোগান্তির কর্মসূচী পালিত হয়। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে শাহাজান খান বলেন, আমরা দেশব্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করিনি। তাই এটাকে ধর্মঘট বলা যাবে না। নিজের বাসা থেকে শ্রমিকদের কর্মবিরতির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। তিনি বলেন, সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় চালকের মৃত্যুদ-ের রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ি চালানো বন্ধের খবর আসতে থাকে। মন্ত্রীদের অবস্থান যাই হোক কিছু ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ধর্মঘটের বিষয় মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ে ধর্মঘট হলে সড়ক পরিবহন কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে বৈঠকের নিয়মিত মুখ হচ্ছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান। পরিবহন মালিক-শ্রমিক সূত্রগুলো বলছে, ধর্মঘট ডাকার ক্ষেত্রে খুলনাভিত্তিক দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, চট্টগ্রাম অঞ্চল ও রাজশাহীভিত্তিক উত্তরবঙ্গের শ্রমিক-মালিক সংগঠনগুলোই বেশি তৎপর। এই সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা শাজাহান খান ও মসিউর রহমানের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটিরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। দেশের সড়ক ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই বিবেচনায় নির্ধারিত ওজন সীমার অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহনের বিরুদ্ধে গত বছর জরিমানা আরোপ করে সরকার। এর প্রতিবাদে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১০০ ঘণ্টা ধর্মঘট পালন করে মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। পরে ৫ অক্টোবর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, নৌমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ছয়জন মন্ত্রী ও একজন মেয়র এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বৈঠক করে মালিক-শ্রমিকদের চাপের মুখে বাড়তি জরিমানা প্রত্যাহার করা হয়। এখন ট্রাক ও লরিতে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন চলছে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ‘ধর্মঘট তাদের ব্যাপার। তবে সরকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমরা কঠোর হব। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছরের মে থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সারাদেশে ২০ বার পরিবহন ধর্মঘট হয়েছে। এর মধ্যে সাতবার আহ্বান করা হয়েছে অঞ্চলভিত্তিক। বাকিগুলো জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এসব ধর্মঘটে প্রকাশ্যে দাবির মধ্যে জনপ্রিয় দাবিগুলো হচ্ছে পুলিশের হয়রানি বন্ধ, লাইসেন্স প্রাপ্তি সহজ করা, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, টার্মিনাল স্থাপন ও চাঁদা বন্ধ করা। তবে শ্রমিক ও মালিক নেতাদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন, বেশিরভাগ সময়ই ধর্মঘট ডাকার নেপথ্যে থাকের পরিবহন মালিকরা। তারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য শ্রমিকদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাজে লাগান। কোন আন্দোলনে সরাসরি শ্রমিকদের শতভাগ স্বার্থ সংরক্ষণ হয়েছে এমন রেকর্ড নেই। তাছাড়া শ্রমিকরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় মালিকদের বিরুদ্ধেও কোন কর্মসূচী দিতে পারে না। সরকারের কোন সিদ্ধান্ত মনঃপূত না হলে তাঁরা অন্য দাবির আড়ালে ধর্মঘটের ডাক দেন। সরকার বৈঠক ডাকলে তাঁরা তাঁদের মূল দাবিতে অটল থাকেন। এর আগে ২০১৪ সালের ২৬ মে বৃহত্তর ময়মনসিংহের নেত্রকোনায় পরিবহন মালিক শ্রমিকদের ওপর আনসার সদস্যদের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক আবুল কালামকে প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে ময়মনসিংহসহ ৮ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় ঢাকা বিভাগীয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
×