ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাপটিলের ম্যারাথন সেঞ্চুরি, সিরিজে ফিরল নিউজিল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২ মার্চ ২০১৭

গাপটিলের ম্যারাথন সেঞ্চুরি, সিরিজে ফিরল নিউজিল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মার্টিন গাপটিলের ম্যারাথন সেঞ্চুরির ওপর ভর করে চতুর্থ ওয়ানডতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারাল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-২এ সমতায় ফিরল কিউইরা। হ্যামিল্টনে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭৯ রানের ফাইটিং স্কোর গড়ে টস জিতে ব্যাটিং নেয়া এবি ডি ভিলিয়ার্সের নেতৃত্বাধীন অতিথি শিবির। জবাবে ‘ম্যাচের নায়ক’ গাপটিল তা-বে (১৩৮ বলে অপরাজিত ১৮০ রান) ৩ উইকেট হারিয়ে ৫ ওভার আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড। রান টপকে জয়ের ক্ষেত্রে কিউইদের হয়ে এটিই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, সর্বোপরি ওয়ানডে ইতিহাসের চতুর্থ। অকল্যান্ডে সিরিজ ফয়সালার পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে শনিবার। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা গাপটিল এদিন ১৩৮ বলে অপরাজিত ১৮০ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৫ চার ও ১১টি বিশাল ছক্কা দিয়ে। সঙ্গে অভিজ্ঞ রস টেইলরের ৬৬ ও অধিনায়ক উইলিয়ামসনের ২১ রান স্বাগতিকদের সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। ২৮০ রান করতে নেমে ৫ রানে প্রথম উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড যে এত সহজে ম্যাচটা জিতে যাবে সেটা বোধ হয় অনেকেই ভাবতে পারেননি। ওয়ানডে ক্রিকেটে রান তাড়া করতে নেমে গাপটিলের ইনিংসটি নিউজিল্যান্ডের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সর্বোপরি চতুর্থ। এক্ষেত্রে রেকর্ড ১৮৫ রানের ইনিংসটি অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনের দখলে, ২০১১ সালের এপ্রিলে মিরপুর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে। গাপটিল অবশ্য আরেকটি জায়গায় অনন্য। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ তিন ওয়ানডে ইনিংসের মালিক যে তিনিই। সর্বোচ্চ ২৩৭, ২০১৫ বিশ্বকাপে ওয়েলিংটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তার আগে ২০১৩ সালে সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৮৯ রানের ইনিংস। তিনটি ইনিংসেই আবার ‘অপরাজিত’ তিনি। সফরকারীদের হয়ে স্পিনার ইমরান তাহির ২ ও পেসার কাগিসো রাবাদা নিয়েছেন ১টি করে উইকেট। তার আগে টসজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকার ২৭৯ রানের ইনিংসে সর্বোচ্চ এবি ডি ভিলিয়ার্সের। ৫৯ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন আগের ম্যাচেই রেকর্ড দ্রুত ৯ হাজারি ক্লাবের নাম লেখানো প্রোটিয়া অধিনায়ক। অপর দুই তারকা ফ্যাফ ডুপ্লেসিস ৬৭ ও হাসিম আমলার ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। শেষ দিকে ক্রিস মরিস (২৭ বলে ২৮) ও ওয়েইন পারনেলের (১২ বলে ২৯) ছোট দুটি ঝড়ো ইনিংস প্রোটিয়াদের ফাইটিং স্কোরের পথে কার্যকর ভূমিকা রাখে। স্বাগতিক কিউইদের হয়ে বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা জিতেন প্যাটেল ২, মিচেল স্যান্টনার, ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি নেন ১টি করে উইকেট। হ্যামিল্টনের সেডন পার্ক এদিন শুরুতেই অবশ্য বিরল এক ঘটনার সাক্ষী হয়। ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই প্রান্ত থেকে বোলিং শুরু করেন দুই স্পিনার। দুই তুখোড় গতি তারকা ট্রেন্ট বোল্ট বা টিম সাউদি নন, এদিন নিউজিল্যান্ডের হয়ে প্রথম ওভারেই আক্রমণে ২০০৯ সালের পর মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা ৩৬ বছর বয়সী অফস্পিনার প্যাটেল। তৃতীয় বলেই ইনফর্ম কুইন্টন ডি’ কককে (০) শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরান তিনি। চমকের তখনও বাকি। অন্য প্রান্ত থেকে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারটি শুরু করেন বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার। তাতেই ৪৬ বছরের ওয়ানডে ক্রিকেট বিরল ঘটনার সাক্ষী হয়। স্কোর ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ২৭৯/৮ (৫০ ওভার; আমলা ৪০, ডি কক ০, ডুপ্লেসিস ৬৭, ডুমিনি ২৫, ডি ভিলিয়ার্স ৭২*, মিলার ১, প্রিটোরিয়াস ১০, মরিস ২৮, পারনেল ২৯; জিতেন প্যাটেল ২/৫৭, স্যান্টনার ১/৪০, নিশাম ১/১৫, বোল্ট ১/৭০, সাউদি ১/৭০)। নিউজিল্যান্ড ইনিংস ২৮০/৩ (৪৫ ওভার; গাপটিল ১৮০*, ব্রাউনলি ৪, উইলিয়ামসন ২১, টেইলর ৬৬, রনকি ১*; তাহির ২/৫৬, রাবাদা ১/৪১)। ফল ॥ নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মার্টিন গাপটিল (নিউজিল্যান্ড)। সিরিজ ॥ পাঁচ ওয়ানডের সিরিজ ২-২এ চলমান।
×