ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৩৬ ঘণ্টা ধর্মঘট শেষে বুধবার সন্ধ্যা থেকে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক ;###;গাবতলীতে ১৬ ঘণ্টা তাণ্ডব

ভোগান্তির অবসান

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২ মার্চ ২০১৭

ভোগান্তির অবসান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধর্মঘট শেষে বুধবার সন্ধ্যা থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দুদিন ধরে ব্যাপক জনভোগান্তির পর ধর্মঘট উঠিয়ে যানবাহন চালানো শুরু করেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। বুধবার দুপুরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সরকারের পক্ষ থেকে ‘আইনী সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ার কথা’ জানিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের যানবাহন চলাচল শুরুর আহ্বান জানান। মূলত এর পর থেকেই আস্তে আস্তে সারাদেশে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে। এর আগে পরিবহন মালিক, শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে তিন দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ক্ষেত্রে চালকের সাজা কমানোর দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তা-ব চালায় পরিবহন শ্রমিকরা। রাজধানীর গাবতলীতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা তা-ব করে তারা। পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ গাড়ি ভাংচুর, সড়ক অবরোধ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ, সংবাদকর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ ঘটনায় এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। বিভিন্ন স্থানে পরিবহন থেকে যাত্রী নামিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে রোগী নামিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছে বেপরোয়া শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকেই দেশব্যাপী হঠাৎ ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে সারাদেশে মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে বাড়ে মানুষের ভিড়। সারাদেশের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল। রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের দুদিন ধরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। নগরীতে অফিসমুখী ও পরীক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। রিক্সা ও ভ্যান ছিল পথ চলার একমাত্র মাধ্যম। রাস্তা ছিল ফাঁকা। অটোরিক্সা ও প্রাইভেট কার চলেছে নামমাত্র। বিআরটিসি সার্ভিসও চলেছে নামকাওয়াস্তে। বাড়তি ভাড়া গুনে রিক্সায় গন্তব্যে গিয়েছেন রাজধানীর মানুষ। সব মিলিয়ে পথে পথে ছিল মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। মানিকগঞ্জে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় গত মাসের শেষ দিকে জামির হোসেন নামের এক বাস চালকের যাবজ্জীবন সাজার রায় হয়। এর প্রতিবাদে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় গত রবিবার শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। সোমবার দুপুরে প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচী প্রত্যাহারের ঘোষণা এলেও ওইদিন সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে মীর হোসেন নামের এক চালকের ফাঁসির রায় হলে পরিবহন শ্রমিক নেতারা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কর্মসূচী দেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে সেই ধর্মঘটে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। চিকিৎসাসহ জরুরী প্রয়োজনে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে না পেরে বিপাকে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। বুধবার ঢাকায় নগর পরিবহনের গাড়িও বন্ধ রাখায় ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। যাত্রাবাড়ীতে রাস্তা আটকে রিক্সা ও অটোরিক্সা থেকে যাত্রীকে নামিয়ে দিতে দেখা যায়। সন্ধ্যায় গাবতলী থেকেও বাস ছাড়া শুরু হয়েছে বলে জানান হানিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপক আলমাস আলম। তিনি বলেন, শ্রমিক নেতারা আমাদের ফোন করে বলেছে গাড়ি ছাড়া যেতে পারে। এজন্য গাড়ি ছাড়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। এদিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা আসার পরও বিকেল ৩টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে একদল শ্রমিককে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা তাদের সরিয়ে রাস্তা খালি করে দেয়। রাতে টার্মিনাল এলাকার প্রায় সব কাউন্টার এর পর খুলে দেয়া হয়, শুরু হয় যাত্রী ওঠানোর হাঁকডাক। বিকেলে টার্মিনালের কেন্দ্রীয় মাইক ও পুলিশের এপিসি থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার এবং রাস্তায় কোন ঝামেলা নেই বলে ঘোষণা দেয়া হয় বার বার। ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্বাস উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আইনী লড়াইয়ে যেতে চাই আমরা। চালকের সাজার বিষয়ে আইনী সহায়তা দেয়ার আশ্বাস পাওয়ায় আমরা কর্মবিরতি তুলে নিয়েছি। ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ সদু বলেন, শ্রমিক নেতারা চালকদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এ কারণে শ্রমিকরা বাস চালাতে রাজি হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ে বৈঠক ॥ পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। এতে জনভোগান্তি চরমে ওঠায় তীব্র সমালোচনার মুখে বুধবার সকালে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার দফতরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহকে নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আজকের মধ্যে কর্মসূচী প্রত্যাহার করে বাস পরিবহন চলাচলের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফের বৈঠকে মন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ ॥ এর পর দুপুরে শাজাহান খান, রাঙ্গা ও এনায়েত উল্যাহসহ চারটি মালিক শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতারা মতিঝিলে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে নৌমন্ত্রী লিখিত বক্তব্যে বলেন, এখন থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য মালিক ও শ্রমিক ভাইদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আশা করছি, সারাদেশে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও এটিকে শ্রমিকদের ধর্মঘট মানতে নারাজ নৌপরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন। আমরা পরিবহন শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, এ অনুরোধের প্রেক্ষিতে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে। শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থায় জনদুর্ভোগের জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ধর্মঘট ডাকলে নোটিস দিয়ে ডাকতে হয়। কিন্তু এই কর্মসূচী নোটিস দিয়ে হয়নি। আমার বাসায় একটি বৈঠক চলছিল। বৈঠক চলা অবস্থায় খবর আসে সাভারের একটি সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় চালকের বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের রায় হয়েছে। এর পর বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকদের গাড়ি চালানো বন্ধের খবর পাই। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সচিবালয়ে বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকের প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেছেন, সম্প্রতি একটি মামলায় চালকের যাবজ্জীবন সাজা হওয়া এবং আরেকটি মামলায় হাইকোর্টে বিশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়ার ঘটনায় শ্রমিকরা অনিরাপদ বোধ করছে। আমাদের আশঙ্কা, এ ধরনের মামলা আমাদের বিরুদ্ধে যাবে। এ বিষয়ে আজ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা সমস্যার বাস্তবতা উপলব্ধি করেছেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আইনগতভাবে এ সমস্যা সমাধানের। আইনানুগ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তারা। নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেছেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এতে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আন্তরিকভাবে আমরা দুঃখিত। এই অচলাবস্থাকে কেন্দ্র করে কিছু মহল উস্কানি দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। তবে তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা আইনের উর্ধে নয়। এ সময় মশিউর রহমান রাঙা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু, শ্রমিক নেতা কাজী মোতাহার হোসেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের ফারুক তালুকদার সোহেল ও আবুল কালাম উপস্থিত ছিলেন। এদিকে মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর পরই হাইকোর্ট এক রিট আবেদনের শুনানি করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশে স্বাভাবিক যান চলাচল নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, অবরোধ বা ধর্মঘট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং যারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে ধর্মঘট ডাকবে তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। সারাদেশের যানবাহন চলাচলের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে রাত আটটায় জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, আমরা সব টার্মিনালে গাড়ি চালু করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। মালিকদের আমরা নির্দেশ দিয়েছি যাতে শ্রমিকরা গাড়ি চাইলে তারা দিয়ে দেন। মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি তারেক মাহমুদ বলেন, মহাখালী টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ গাড়ি বৃহত্তর ময়মনসিংহ, উত্তরবঙ্গের কিছু জেলা এবং সিলেট ও চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বলে জানান তিনি। দারুস সালাম ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার খায়রুল আমিন বলেন, দূরপাল্লার বাস ছাড়ার কথা পরিবহনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ঢাকার ভেতরে গণপরিবহনগুলো চলতে শুরু করেছে। দক্ষিণবঙ্গগামী সাতক্ষীরা এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপক বোরহান উদ্দিন বলেন, আমরা টিকেট বিক্রি ও বুকিং নেয়া শুরু করেছি। বিপ্লবী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা জানান, বিকেলের পর সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে পরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে ॥ সারাদেশে ডাকা ধর্মঘটের মধ্যে গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের কয়েক দফা সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ক্ষেত্রে চালকের সাজা কমানোর দাবিতে সারাদেশে ডাকা ধর্মঘট বুধবার বিকেলে প্রত্যাহারের আগে সকালে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ধর্মঘট যারা করছেন তারা পুলিশের রেকারভ্যানে আগুন দিয়েছেন, পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছেন। এছাড়া আজ একটা জিপে আক্রমণ করেছেন। এই ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। এসব ঘটনায় মামলা হবে। বুধবার সকালেও আন্দোলনকারী শ্রমিকরা সামরিক বাহিনীর উর্ধতন এক কর্মকর্তার গাড়ি চলাচলে বাধা দেয় বলে অনুষ্ঠানের বক্তব্যে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। তাদের এই আন্দোলনকে ‘অহেতুক’ আখ্যায়িত করে মন্ত্রী বলেন, এটাকে অহেতুক বললাম এই কারণে, যেটার বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। তাদের জন্য রাস্তা খোলা ছিল। ধৈর্য ধরা উচিত ছিল । ধর্মঘটে একটি দল সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে -রাঙ্গা ॥ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, পরিবহন ধর্মঘটে একটি রাজনৈতিক দল সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী ঢুকে এটাকে রাজনৈতিক রং দেয়ার চেষ্টা করছে। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী দাবি করেন, তাদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ধর্মঘট করছেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও তার পরিবহন খাতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওই দিন তারা খুলনার ১০ জেলার ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনার জন্য বসেছিলেন। ওই মুহূর্তে পরিবহন খাতের নেতারা খবর পান যে একজন বাসচালককে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে; তখন শ্রমিকনেতাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরপর তারা তাদের নির্দেশ ছাড়া নিজেদের মতো ধর্মঘট শুরু করেন। নির্দেশের অপেক্ষা করেননি। মন্ত্রীর অপসারণ চেয়ে স্মারকলিপি ॥ পরিবহন ধর্মঘটে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের সমর্থন থাকার অভিযোগ এনে তার অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের এক আইনজীবী। মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়ে শাজাহান খান সংবিধান লঙ্ঘন ও শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে স্মারকলিপিতে বলা হয়। বুধবার দুপুরে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ওই স্মারকলিপি পাঠান আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
×