ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আকিল জামান ইনু

থ্যাংক ইউ ম্যাট ডেমন ‘দি গ্রেট ওয়াল’

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২ মার্চ ২০১৭

থ্যাংক ইউ ম্যাট ডেমন ‘দি গ্রেট ওয়াল’

টুইটারজুড়ে ভাইরাল ‘থ্যাংক ইউ ম্যাট ডেমন’ এশিয়ার প্রতিটি প্রান্ত থেকে জানানো হচ্ছে এই ধন্যবাদ। কারণ? এশিয়ান কালচারের জন্য তার অবদান। এই অবদান তিনি রেখেছেন ‘দি গ্রেট ওয়াল’ ছবির মাধ্যমে। ম্যাট ডেমন ১৯৭০ এর ৮ অক্টোবর জন্ম নেয়া এই অভিনেতাকে বলা হয় মোস্ট ব্যাংকেবল স্টার। তার নামই ছবির বাণিজ্যিক সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয়। ঝুলিতে আছে অস্কার, গ্লোন্ডেন গ্লোব, তার চাইতে বড় প্রাপ্তি বিশ্বজুড়ে অগণিত দর্শকে হৃদয়জুড়ে তার উপস্থিতি। কখনও দুর্ধর্ষ মার্সেনারি, কখনও আন্ডার কভার এজেন্ট হয়ে ম্যাট যেমন রুখে দাঁড়ান অন্যায় প্রতিরোধ, রক্ষা করেন বিশ্বকে হয়ে ওঠেন নায়ক থেকে মহানায়ক। ম্যাট ডেমন নামটি মনে পড়লেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে রাইফেলের সাইটে চোখ রাখা নীরব, শান্ত দৃঢ় এক তরুণ যার প্রতিটি অভিব্যক্তিতে শক্তির বিচ্ছুরণ। তবে এবার বিষয়টি ভিন্ন। হাউস আফ ক্লাইং ড্যাগারের পরিচালক জাং ইমোউ পরিচালিত ম্যাট ডেমন অভিনীত ‘দি গ্রেট ওয়াল।’ এশিয়াজুড়ে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করলেও পড়েছে সমালোচকদের কোপানলে। ছবিজুড়ে ম্যাট ডেমনকে ঘিরে আছেন টিয়ান জিং। পেড্রো প্যাসকেল ও একঝাঁক এশিয়ান অভিনেতা-অভিনেত্রী। বলা হচ্ছিল মাস্টার মেকার জাং ইউ ইমোউ আর ম্যাট ডেমনের ১৩৫ মিলিয়ন ডলারের ড্রিম প্রজেক্ট দি গ্রেট ওয়াল। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে সংস্কৃতির এক মেলবন্ধন বলে বিবেচিত হচ্ছিল ছবিটি- অপরদিকে ছবিটি আমেরিকান মুভির অন্যতম বৃহৎ বাজার হিসেবে চায়নার দ্বার উন্মোচনের সিনেমা বলেও গণ্য করা হচ্ছে। আর সমালোচকরা বলছেন অতি বাণিজ্যিকীকরণ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে ছবির সৌন্দর্য আর অনুবাদের ক্ষেত্রেও হারিয়ে গেছে সুর। চাইনিজ কোন পরিচালকের ইংরেজী ভাষায় করা হলিউডে ছবির ক্ষেত্রে এই ভাষাগত সমস্যা আগেও দেখা গেছে। জাং এর বেইজিং ফিল্ম একাডেমির ক্লাসমেট চেন কাইসির ইংলিশ ডেব্যু ছবি ‘কিলিং মি সফটনিতেও ভাষার সমস্যা ছিল। ‘দি পিয়ানো’র সিনেমাটো গ্রাফার স্টুয়ার্ট ড্রাইবার্গের সিনেমাটো গ্রাফিতে চায়নার ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ‘দি গ্রেট ওয়াল’ ছবিটিও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ভাষাগত সমস্যা। এ ছাড়াও যে সময়ের গল্প বলা হয়েছে তার সঙ্গে ব্যবহৃত ভাষা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এটি প্রথম ইংরেজী ভাষার ছবি। যা সম্পূর্ণ চিত্রায়িত হয়েছে চায়নায়। গল্প এক দল ইউরোপীয় মার্সেনারির যারা খুঁজে বেড়ায় ব্ল্যাক পাউডার। এক সময় তারা পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ স্থাপনা দি গ্রেট ওয়াল অব চায়নাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে নেয়। জাংয়ের ছবিতে নারী চরিত্রের উপস্থিতি সব সময়ই শক্তিশালী। এখানেও ব্যতিক্রম নয়। সভ্যতাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় টিয়ান জিং এলিট ফোর্সের কমান্ডার চরিত্রে শক্তিশালী অভিনয় করেছেন এ ছবিতে। ছবিতে পরিচালক এ্যাকশন দৃশ্যের গ্রন্থনা ছিল অর্কেস্ট্রা কনডাকটরের মতোই নিপুণ। রাতের আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা বেলুন দর্শককে নিয়ে যাবে ভিন্ন জগতে। এলিয়েনদের উপস্থিতি বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে। মুক্তির পর আমেরিকার বাজারে ৩৩২৫টি প্রেক্ষাগৃহে প্রথম সপ্তাহে আয় করেছে ২১ মিলিয়ন ডলার যা এ বাজেটের ছবির জন্য কম বলেই বিবেচিত হচ্ছে। তবে এশিয়ার চিত্রটা ভিন্ন। কেবল চায়নাতেই আয় ১৭১ মিলিয়ন আর অন্যান্য দেশে ৫৪ মিলিয়ন ডলার। সমালোচকদের মুখে ছাই দিয়ে বলা যায় এ ছবি এশিয়ার হলিউড জয়ের মাইল ফলক বলেই গণ্য হবে। ‘থ্যাংক ইউ ম্যাট ডেমন’।
×