ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মন্দাভাব কাটছে না

৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিটেন্স এসেছে ফেব্রুয়ারিতে

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২ মার্চ ২০১৭

৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিটেন্স এসেছে ফেব্রুয়ারিতে

রহিম শেখ ॥ রেমিটেন্স প্রবাহে মন্দাভাব অব্যাহত রয়েছে। প্রতি মাসেই কমছে এ খাতে আয়ের পরিমাণ। চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) ফেব্রুয়ারি মাসেও কমেছে প্রবাসী আয়। কমতে কমতে এমন পর্যায়ে এসেছে যে, একক মাস হিসাবে ফেব্রুয়ারি মাসে গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় চলে এসেছে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ৯২ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। আর চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স আয় এসেছে ৯৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। সে হিসেবে বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে কোন একক মাসে প্রবাসী আয়ের এটাই সর্বনিম্ন রেকর্ড। রেমিটেন্স প্রবাহের ধারাবাহিক পতনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি কয়েক দফায় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেও কোন অগ্রগতি হচ্ছে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়েও রেমিটেন্সের পতন থামানো যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবার আগে রেমিটেন্স পাঠাতে ‘হুন্ডি’ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতি অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়লেও গত অর্থবছরে এসে আড়াই শতাংশ কমে যায়। যা চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। অর্থবছরের প্রথম মাস তথা জুলাইয়ে ১০০ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের রেমিটেন্স আসে, যা বিগত ৩৪ মাসের মধ্যে ছিল সর্বনিম্ন। এরপর আগস্ট মাসে ১১৮ কোটি ৩৬ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১০৫ কোটি ৬৬ লাখ এবং অক্টোবরে ১০১ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে আসে। নবেম্বরে মাত্র ৯৫ কোটি ১৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স আসায় বিগত ৭২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিটেন্সের রেকর্ড হয়। এরপর ডিসেম্বর মাসে রেমিটেন্স আসে ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স আসার গতি একটু বেড়ে ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স আসে ৯৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। সে হিসেবে বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে কোন একক মাসে প্রবাসী আয়ের এটাই সর্বনিম্ন রেকর্ড। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৮১১ কোটি ২৪ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ৯৭৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার। সে হিসেবে অর্থবছরের আট মাসেই প্রবাসী আয় কমেছে ১৬৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বা ২৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও সিঙ্গাপুর থেকেও বিশাল অংশ রেমিটেন্স দেশের আসে। বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রেরণকারী প্রথম সারির ১০টি দেশের পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যায় যে তার মধ্যে ৮টি দেশ থেকেই রেমিটেন্স কমেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, রেমিটেন্স প্রেরণকারী দেশের তালিকায় প্রথমে থাকা সৌদি আরব থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১১৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
×