ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজালালে রাডার স্থাপন নিজস্ব অর্থে

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২ মার্চ ২০১৭

শাহজালালে রাডার স্থাপন নিজস্ব অর্থে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) স্থাপন প্রকল্পটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ-পিপিপি’র পরিবর্তে সরকারী অর্থায়নে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৯ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এগুলো হচ্ছে- টাঙ্গাইল, পঞ্চগড়, বাগেরহাট, নীলফামারী ও লালমনিরহাটে ২৫৮ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন প্রকল্প। বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। এতে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের দাম কিলোওয়াটপ্রতি ১১ টাকার বেশি দামে সরকার ক্রয় করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চারটি প্রকল্পেই বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০ বছর মেয়াদি চুক্তি করবে সরকার। বিদ্যুত উৎপাদনের পর নির্ধারিত দামে সেই বিদ্যুত সরকার ক্রয় করে নেবে বলে প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র হবে টাঙ্গাইলে। এটি বাস্তবায়ন করবে কনসোর্টিয়াম অব হানওয়া ৬৩ সিটি কোম্পানি লিমিটেড, বিজে পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং সোলার সিটি বাংলাদেশ লিমিটেড। এই বিদ্যুত প্রতি কিলোওয়াট ১৩ মার্কিন সেন্ট করে ক্রয় করবে সরকার। যা বাংলাদেশী টাকায় ১০ টাকা ৪০ পয়সা করে পড়বে। আগামী ২০ বছরে সরকারের আনুমানিক মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। পঞ্চগড় জেলায় অপর একটি কেন্দ্রে উৎপাদন হবে ৮ মেগাওয়াট। এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশের জেভি অব প্যারাগন পোল্ট্রি লিমিটেড ও প্যারাসোল এনার্জি লিমিটেড এবং হংকংয়ের সিম্বোইর সোলার সিয়াম লিমিটেড। একই দরে বিদ্যুত ক্রয়ে ২০ বছরের সরকারের মোট আনুমানিক ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বাগেরহাটের ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র তৈরি করবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এনারগন টেকনোলজিজ এফজেডই এবং চায়না সানারজি কোম্পানি লিমিটেড। প্রতি কিলোওয়াট ১৩ দশমিক ৮ সেন্ট করে ক্রয় করবে সরকার। যা বাংলাদেশের অর্থে ১১ টাকা ৪ পয়সা করে পড়বে। ২০ বছরে আনুমানিক ৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। নীলফামারী ও লালমনিরহাটে অবস্থিত অপর বিদ্যুত কেন্দ্রটিও ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। এটি বাস্তবায়ন করবে কনসোর্টিয়াম অব ঝেজিয়াং ডান্যান নিউ এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড, চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন, সোলার টেক পাওয়ার লিমিটেড, এমিটি সোলার লিমিটেড। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুত ১৪ মার্কিন সেন্ট বা ১১ টাকা ২০ পয়সা করে ক্রয় করবে সরকার। ২০ বছরে সরকারের মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। শাহজালালে রাডার স্থাপন হবে সরকারী অর্থায়নে ॥ সরকারী অর্থায়নে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাডার স্থাপন করা হবে। বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি। অস্বাভাবিক ব্যয় ও নিরাপত্তার কারণে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৈঠক শেষে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, যখন এটি পিপিপিতে দেয়া হয়েছিল, তখন ব্যয় কম হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। এখন টেন্ডার করার পর দেখা যাচ্ছে, ব্যয় বেশি হবে। তাই এটি সরকারী অর্থায়নে হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আধুনিক ও যুগোপযোগী রাডার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন থাকলেও অর্থাভাবে তা হয়নি। ড্যানিশ অর্থায়নে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আপগ্রেডেশন প্রকল্পে রাডার সংস্থাপন কম্পোনেন্টটি থাকলেও অর্থাভাবে সেটিও বাদ পড়ে। পরবর্তী সময়ে জরুরী ভিত্তিতে পিপিপির মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুপারিশ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। পরে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছিল।
×