ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলার রায় যে কোন দিন

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২ মার্চ ২০১৭

প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলার রায় যে কোন দিন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ১৯৯৬ সালে শেয়ার কারসাজিতে প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলায় চার সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও তাদের জেরা সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সাক্ষী মনিরউদ্দিন আহমেদকে জেরার মধ্য দিয়ে শুনানি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। একইসঙ্গে আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন শেয়ারবাজার-সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠন করা বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ। এদিন সাক্ষী মনিরউদ্দিন আহমেদকে জেরা করেন আসামি এম এ রউফ চৌধুরীর আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম খান এবং আসামি সাঈদ এইচ চৌধুরীর আইনজীবী আলহাজ মোঃ বোরহান উদ্দিন। এর আগে ১৮ জানুয়ারি এ মামলার অপর তিন সাক্ষী ডিএসইর মহাব্যবস্থাপক রুহুল খালেক, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ দেলোয়ার হোসেন ও বিএসইসির সহকারী পরিচালক এনামুল হককে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। বিএসইসির প্যানেল আইনজীবী মাসুদ রানা খান বলেন, বুধবার প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের মামলায় সাক্ষী মনিরউদ্দিন আহমেদকে জেরা করা হয়েছে। একইসঙ্গে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ৮ মার্চ নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এরপরে রায়ের জন্য শুধুমাত্র যুক্তিতর্ক পর্ব বাকি থাকবে। এ হিসাবে মামলাটির রায় দ্রুত পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এদিকে একই মামলায় আসামি মশিউর রহমান ও আনু জায়গীরদারের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। উচ্চ-আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে এই আসামিদের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। যা আগামী ২ মে পর্র্যন্ত কার্যকর থাকবে। আসামিদের এই মামলায় দুই দফায় ৬ মাস করে ১ বছরের স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ-আদালত। প্রথমবার ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল এ বিচারকাজে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। আর ২৯ নবেম্বর দেয়া হয় দ্বিতীয়বারের মতো ৬ মাসের স্থগিতাদেশ। এ মামলার আসামিরা হলেন- এম এ রউফ চৌধুরী, সাঈদ এইচ চৌধুরী, প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান ও পরিচালক আনু জায়গীরদার। মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের নামে ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে নবেম্বর পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন। এ সময়ে তারা মিতা টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বাটা সুজ ও বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ওই সময়ে মোট ১২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা লেনদেন করে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি শুধু ফরেন ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্টের (ডিভিপি) মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন করে। এ সময় ১ নম্বর আসামি প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ ওই সময়ে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩টি শেয়ার বিক্রি করে, যার মূল্য ছিল ৬৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের রেকর্ড মোতাবেক আসামিরা এসিআই লিমিটেডের ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১৯টি শেয়ার বিক্রি করেন। অথচ ব্যাংক রেকর্ড অনুযায়ী শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি, যার মধ্যে ফরেন ডিভিপির মাধ্যমে লেনদেন অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। একইভাবে আসামিরা ডিভিপির মাধ্যম ছাড়াও স্থানীয়ভাবে শেয়ারের অন্যতম ক্রেতা-বিক্রেতা ছিলেন। আসামিরা ওই সময়ের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৯৫টি শেয়ার বিক্রি করেন। এর মধ্যে ডিভিপির মাধ্যমে ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭০০টি শেয়ার বিক্রি করেন। আর এখানেও অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ার ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৫০০টি। এ সব ফরেন ডিভিপির মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য প্রতিষ্ঠানটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ইন্দোসুয়েজ ব্যাংক ব্যবহার করত।
×