ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গাবতলীতে সংঘর্ষে বাস চালক নিহত

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ১ মার্চ ২০১৭

গাবতলীতে সংঘর্ষে বাস চালক নিহত

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত এক যুবক মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে ভর্তি হওয়া ওই যুবকের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ২৫ বছর বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান। পুলিশ ও হাসপাতালের খাতায় ওই যুবককে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে। ওই সময় পর্যন্ত হাসপাতালে তার কোনো স্বজনও আসেননি। বুধবার সকালে তিনি আহত হলে প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দারুস সালাম থানা পুলিশ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যায় চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন ওই ব্যক্তিকে। তবে সংঘর্ষের সময় গাবতলীতে পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছিলেন, পুলিশের গুলিতে বৈশাখী পরিবহনের চালক শাহ আলম (৩২) আহত হয়েছেন। সকালেও তার মৃত্যু নিয়ে নানা গুজব ছড়ান তারা। তবে রাত পর্যন্ত তার পরিচয় সর্ম্পকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ব্লকের আবাসিক সার্জন জেসমিন নাহার বলেন, বেলা ১১টার দিকে ভর্তির সময়েই ওই ব্যক্তির অবস্থা খুব সংকটাপন্ন ছিল। আইসিইউতে চিকিৎসার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তিনি মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গাবতলীতে সংঘর্ষে ওই বাসচালক আহত হয়েছিলেন। ওই সময় শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। এরমধ্যে পড়েই ওই পরিবহন শ্রমিক আহত হন। পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ কমিশনার মাসুদ আহম্মেদ জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একদল শ্রমিক গাবতলীর মূল সড়ক ও মাজার রোডে এলোপাতাড়ি গাড়ি ভাংচুর করে। তারা ঊর্ধ্বতন একজন সরকারী কর্মকর্তার গাড়ি আটকে তাতে ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। একই সময় রোগীবাহি একটি অ্যাম্বুলেন্স আটকে তাতে ভাংচুর করে। শ্রমিকরা অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীর গ্যাস মাক্স খুলে নেয়। পাশাপাশি গাবতলী টার্মিনালের ডান পাশে থাকা অস্থায়ী একটি পুলিশ বক্স ভেঙে রাস্তায় নিতে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমন অরাজক পরিস্থিতিতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরিবহনশ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে সারা দেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। মঙ্গলবার ঢাকা থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি, ঢাকার বাইরে থেকে কোনো বাস আসেনি। অভ্যন্তরীণ পথেও বাস চলেনি। রাজধানীতে বাস চলেছে হাতে গোনা। গতকাল রাতেও রাজধানীর গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালের সামনে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের সময় টার্মিনালের সামনের সড়কে অ্যাম্বুলেন্সসহ ৩০ থেকে ৪০টির মতো যান ভাঙচুর করা হয়। তবে আজ দুপুরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান মালিক ও চালকদের যানবাহন চালানোর অনুরোধ করেন। এরপর বেলা পৌনে চারটার দিকে মহাখালী থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে বাস ছাড়তে দেখা যায়। গাবতলী থেকেও বাস-ট্রাক ছাড়া শুরু হয়েছে। এছাড়াও রাজধানীতেও গণপরিবহন চলাচল বেড়েছে।
×