অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে হংকং ও চীনের ব্যবসায়ীগণ সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আসুন, দেখুন এবং বিনিয়োগ করুন। দেশে এখন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। তাই যেকেউ বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন।
বুধবার হংকংয়ের সেক্রেটারি অব কমার্স (বাণিজ্যমন্ত্রী) এ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট গ্রীগরি সো কাম-লিয়াং সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ সব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি এখন হংকং সফর করছেন। আগামীকাল শুক্রবার তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য এখন চমৎকার স্থান। সরকারের বিনিয়োগ বান্ধব নীতি এবং এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা বিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। হংকং, চীনসহ পৃথিবীর অনেক দেশ এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশের ইপিজেড-এ হংকংয়ের ২৭টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় আধা বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। সেখানে তারা লাভ জনক ব্যবসা করছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। এগুলোর উন্নয়ন কাজ চলছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিনিয়োগকারীদের এ সকল জোন বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। চীন বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। সরকার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ আইন করে সংরক্ষণ করেছেন। কোন বিনিয়োগকারী চলে যেতে চাইলে শতভাগ মূলধন ফিরিয়ে নিতে পারবেন। বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশী পর্যটক ও ব্যবসায়িদের হংকং যেতে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, এ সমস্যা দূর করা প্রয়োজন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, হংকংয়ের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীক ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে দু‘দেশের মধ্যে প্রায় এক বিলিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ব্যবসা হচ্ছে। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ রফতানি করেছে ২১৪ দশমিক ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ৮০৫ দশমিক ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। উভয় দেশ বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশের বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। হংকংয়ের বাজারে বাংলাদেশের ঔষধ, চামড়া, নীটওয়্যার, ওভেন, কটন ও সামুদ্রিক মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ভিসা ও বাণিজ্য সমস্যা দূর করা হলে হংকংয়ের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বাড়বে।
হংকং সফরের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার আহবান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ৬ ভাগের বেশি হয়েছে, গত বছর হয়েছে ৭ দশকি ১১ ভাগ। দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিনত হবে। এখন দেশের রফতানি প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২১ সালে এ রফতানি হবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশে বিনিয়োগ ও রফতানি বৃদ্ধি করতে সরকার ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
