ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর শুরু হয়েছে যান চলাচল

প্রকাশিত: ০০:০৩, ১ মার্চ ২০১৭

 ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর শুরু হয়েছে যান চলাচল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীসহ সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তা প্রত্যাহারের পর যানবাহন চলাচল শুরু করেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। এতে মানুষের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান বুধবার দুপুরে সরকারের ‘আশ্বাস পাওয়ার কথা’ জানিয়ে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের যানবাহন চলাচল শুরুর আহ্বান জানালে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়তে দেখা যায়। একই সাথে গাবতলি সায়েদাবাদ থেকে বাস ছাড়ছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে আন্তনগর বাস টার্মিনালগুলোতে অবস্থিত বিভিন্ন পরিবহনের বন্ধ টিকিট কাউন্টারগুলো খুলতে দেখা গেছে। এদিকে, রাজধানীতে গতকাল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত হঠাৎ দু’একটি বাস ছাড়া গণপরিবহন দেখা না গেলেও দুপুরের পর রাজধানীতেও গণপরিবহন বেড়েছে। ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ সদু বলেন, শ্রমিক নেতারা চালকদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এ কারণে শ্রমিকরা বাস চালাতে রাজি হয়েছেন। বেলা আড়াইটা থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। দুই চালকের সাজার রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে সারা দেশে পরিবহন শ্রমিকদের এই ধর্মঘট শুরু হলে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার মামলায় ঘাতক বাসের চালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাভারে ট্রাকচাপায় এক নারীকে হত্যার দায়ে চালকের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। এর প্রতিবাদে কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই মঙ্গলবার থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। এই ধর্মঘট পালনে সেদিন থেকেই গাবতলীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। আর তাতে সারা দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। রাতে কয়েক দফায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এরপর সেই ধর্মঘট বুধবার সকাল থেকেও চলতে থাকে। এ দিন সকালেই গাবতলীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ফের সংঘর্ষে জড়ায় পরিবহন শ্রমিকরা। রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষ ব্যাপক দুর্ভোগে পড়ে। অ্যাম্বুলেন্সের গাড়ি আটক করে রোগীকে পর্যন্ত মারধর করার খবর পাওয়া গেছে। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার সকালে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার দপ্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়ত উল্লাহকে নিয়ে বৈঠক করেন। এরপর দুপুরে শাহজাহান খান, রাঙ্গা ও এনায়ত উল্লাহ মতিঝিলে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কার্যালয়ে গিয়ে মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে নৌমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য মালিক ও শ্রমিক ভাইদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করছি, সারাদেশে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে। শাজাহান খান দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলোর শীর্ষ ফোরাম বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। আর প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গা বাস ও ট্রাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি। ওই সংবাদ সম্মেলনের পর টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা দূর পাল্লার বাসের চাকা সচল হতে শুরু করে। টার্মিনালগুলোতে ডাকাডাকি করে যাত্রী তুলতে দেখা যায় চালকের সহকারীদের। সময় যতো গড়াচ্ছে রাস্তায় গণপরিবহন এখন বাড়ছে। ইদকে, গাড়ি চালানো শুরু করেছেন ট্রাক চালকেরাও। এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বাংলাদেশ আন্তজেলা ট্রাক চালক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ট্রাক চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সন্ধ্যা থেকে পুরোপুরি ট্রাক চলবে।
×