ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষ জনশক্তির অভাবে ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ১ মার্চ ২০১৭

দক্ষ জনশক্তির অভাবে ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার॥ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের বড় চ্যালেঞ্জ দক্ষ জনশক্তির অভাব। দক্ষ জনশক্তির অভাব পূরণে প্রতি বছর ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে। বলে মনে করেন বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার ভবনে ‘স্ট্রাটেজিক ফর বিজনেস বেনিফিটস ফরম এসডিজি ফর দ্য প্রাইভেট সেক্টর’ শীর্ষক সেমিনারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. হোসাইন জিল্লুর রহমান এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এ সেমিনারে হোসাইন জিল্লুর রহমান বলেন, লো কোয়ালিটি ইনিভার্সাল এডুকেশন হলো এসডিজি অর্জনে বড় একটা চ্যালেঞ্জ। তবে এই সেক্টরে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আগামী ৫ বছরে সরকার যদি নিজ খরচে এক হাজার মাধ্যমিক স্কুল করে। তাহলে তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যদিও এখন এমপিওর মাধ্যমে একধরনের দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। কিন্তু এর ফলে গুণগত মান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকার অবকাঠামো নিয়ে বৃহৎ চিন্তা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বৃহৎ চিন্তার জায়গায় সরকারকে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো দরকার। পদ্মা ব্রিজের মতো গুরুত্ব দিয়ে আগামী ৫ বছরে যদি এক হাজার মাধ্যমিক স্কুল করেন, তাহলে তা পদ্মা ব্রিজের চেয়ে বেশি উপকারে আসবে। যা বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। তিনি জানান, এখন দক্ষ জনশক্তি বাইরে থেকে আনতে হয়। ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স চলে যাচ্ছে বিদেশে। সরকার যদি মাধ্যমিক স্কুলের একটা ব্যাকরণ তৈরি করেন। তাহলে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা তো মাধ্যমিক থেকেই উঠে এসেছে। এগুলো করতে না পারলে এসডিজি কাগজেই থাকবে। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, প্রাইভেট সেক্টরকে বাদ দিয়ে কখনো এসডিজি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। কেননা, দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে প্রাইভেট সেক্টর। প্রাইভেট-পাবলিক সেক্টর মিলেই এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টরের প্রত্যেকটি অর্গানাইজেশনকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। সেক্টরভিত্তিক টার্গেট নির্ধারণ করতে হবে। এসব বিষয় মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল মনিটরিং সিস্টেমের আওতায় মনিটরিং হতে পারে। সেমিনারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে বাংলাদেশের কী অবস্থা তা হয়তো বর্তমান পরিবহন ধর্মঘট দেখলেই বুঝতে পারবেন। কোথাও এখন আইনের শাসন নেই। আমরা আমলা বাড়াচ্ছি, আমলাতান্ত্রিকতা বাড়াচ্ছি। অথচ জনগণের অধিকার দিচ্ছি না। বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন দরকার। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা ব্যবসা বাদ দিয়ে রাজনীতি করছেন। এটা ঠিক হচ্ছে না। সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ এখন এনার্জি। তাই বেসরকারি খাত এখানে কীভাবে বিনিয়োগ করতে পারে তা দেখতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রধান অনিমেষ রাজু বলেন, প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে এসডিজি অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের সরাসরি অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সেমিনারে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আবুল কাসেম খানের সভাপতিত্বে ডিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
×