ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গাবতলীতে সংঘর্ষ পুলিশ বক্স রেকার মাইক্রোতে আগুন

প্রকাশিত: ০৭:৫১, ১ মার্চ ২০১৭

গাবতলীতে সংঘর্ষ পুলিশ বক্স রেকার মাইক্রোতে আগুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাস্তায় যানাবাহন চলাচলে বাধা দেয়ার সূত্র ধরে রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। শ্রমিকরা পুলিশের একটি অস্থায়ী পুলিশ বক্স ও একটি রেকার এবং পাবলিকের একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দিয়েছে। রবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে রাত দশটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ। গাবতলীসহ আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থান করছেন। এদিকে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান পরিবহন ধর্মঘটের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গাবতলীতে আন্তঃজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে ঘটনার সূত্রপাত। সকাল থেকেই সেখানে শত শত শ্রমিক অবস্থান করছিল। রাত আটটার দিকে গাবতলী এলাকার রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয় শ্রমিকরা। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এরা নিরীহ যাত্রী, এদের হয়রানি করে কোন লাভ নেই। এমন কথায় পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয় শ্রমিকরা। কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশকে মারার জন্য ধাওয়া করে। অল্প কয়েক পুলিশ সদস্য থাকায় তারা দ্রুত নিরাপদ জায়গায় চলে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকরা সেখানে বিকল হয়ে পড়া একটি পুলিশের রেকারে আগুন ধরিয়ে দেয়। রেকারটির চাকা ছিদ্র হয়ে বিকল হয়ে পড়েছিল। চাকা খুলে কাজ করার সময় শ্রমিকরা তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন লাগার খবরে তাদের গাড়ি রওনা হলেও বিক্ষোভের কারণে সেখানে পৌঁছতে পারেনি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শ্রমিকরা হানিফ পরিবহনের বালুর মাঠ সংলগ্ন কাউন্টারের সামনে থাকা পুলিশের একটি অস্থায়ী পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ বক্সটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। খানিক পরেই রাত সাড়ে নয়টার দিকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনে শ্রমিকরা একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি গাড়িটি ভাংচুর করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিয়ে টিয়ারশেল, কাঁদানেগ্যাস ও রবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি জলকামান ও সাঁজোয়া যান (এপিসি) ঘটনাস্থলে রাখা হয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে গাবতলী এলাকায় বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে সারাদেশে চলমান পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে চালকদের পক্ষেই অবস্থান নেয় নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান। তিনি বলেছেন, ক্ষুব্ধ ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করতেই পারেন। এটাকে ধর্মঘট বলা যাবে না। এটাকে স্বেচ্ছায় অবসর বলা যেতে পারে। বিষয়টির সমাধান হতে সময় লাগবে। বাসচালক নেতারা কোন নির্দেশনা মানতে চাইছেন না। মন্ত্রী আরও বলেন, দুনিয়ার কোথাও দুর্ঘটনার জন্য ফাঁসি বা যাবজ্জীবন দেয়ার আইন বা বিধান নেই। চালকদের তিন বছর শাস্তি হওয়া উচিত। সারা পৃথিবীতে এসব অপরাধের জন্য বেশি হলে পাঁচ থেকে সাত বছরের শাস্তি হয়।
×