ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দশটি উপজেলা হবে শতভাগ বিদ্যুতায়িত

আজ ৮টি বিদ্যুত কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১ মার্চ ২০১৭

আজ ৮টি বিদ্যুত কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আটটি নতুন বিদ্যুত কেন্দ্র আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে ১০টি উপজেলার নাম ঘোষণা করা হবে। এর আগে এই তালিকায় ৬টি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা বলে ঘোষণা করা হয়। বলা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়ায় ২০১৮ সালের মধ্যে সকল উপজেলা হয়ে উঠবে শতভাগ বিদ্যুতায়িত। যদিও সরকার এর আগে বলেছিল ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সকল ঘরে পৌঁছাবে বিদ্যুতের ঝলক। তবে এবার সব থেকে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, দুর্গম হিসেবে পরিচিত বান্দরবনের থানচি উপজেলাকে যোগ করা হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। এর আগে দেশে এত দুর্গম এলাকায় বিদ্যুত ছিল না। মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ১০ উপজেলার নাম ঘোষণা করা হয়, উপজেলাগুলো হলোÑ ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও সাভার, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, ফেনীর দাগনভূইয়া, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, মেহেরপুরের মুজিবনগর ও লালমনিরহাটের সৈয়দপুর। বিদ্যুত বিভাগের দাবি, এসব উপজেলার শত মানুষের ঘরে বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি উপজেলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্গম হিসেবে পরিচিত বান্দরবানের থানচি উপজেলার মানুষ প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের আওতায় এলো। স্বাধীনতার চার দশকের পরে এই দুর্গম উপজেলাকে বিদ্যুতের গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে পাহাড়ের মানুষের জীবন মানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। নতুন আটটি বিদ্যুত কেন্দ্র হচ্ছেÑ শাহজিবাজারের ৩৩০ মেগাওয়াট, আশুগঞ্জ ৪৫০ মেগাওয়াট, খুলনা ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুত কেন্দ্রকে ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেলে উন্নীতকরণ, মানিকগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট, নবাবগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট, নারায়ণগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট, পাওয়ারপ্যাক মুতিয়ারা জামালপুর ৯৫ মেগাওয়াট ও বরিশাল ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র থেকে ১২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বিবিয়ানা-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি (কিলো ভোল্ট) সঞ্চালন লাইন ও ৪০০/২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র উদ্বোধন করবেন। সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গত বছরে আগস্টে আমরা ৬টি উপজেলার শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় এনেছি। আগামীকাল ১০টি উপজেলার শত মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে ১০১টি উপজেলার শতভাগ মানুষ বিদ্যুত পাবে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৮১টি উপজেলার শতভাগ ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে যাবে। এভাবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মোট ৪৬০টি উপজেলার শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আসবেন। সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের মাইলফলক আগেই পার করেছি আমরা। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে দেশ ও বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভর ২০ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র রয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে কয়লা থেকে ১০ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট উৎপাদনে আসবে। সংবাদ সম্মেলনে নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুত উৎপাদনের স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষ হয়েছে। এখন মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন চলছে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী পটুয়াখালীর পায়রাতে একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে জাপানের অর্থায়নে একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হবে এ ছাড়া রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। এসব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এলপিজি (লিকুফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) দিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যুত উৎপাদনে মিথেন ব্যবহারের কথা আমরা চিন্তা করছি। নসরুল হামিদ বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা বিদ্যুত আমদানির বিষয়ে অনেক দূর এগিয়েছি। নেপাল থেকে বিদ্যুত আনার বিষয়ে দ্রুতই আমরা চুক্তি সই করবো। এ ছাড়া ভারতের খোলাবাজার থেকে বিদ্যুত আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑ বিদ্যুত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালিদ মাহমুদ ও পল্লী বিদ্যুতায়ন সমিতির (আরইবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন প্রমুখ।
×