ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফিফা রেফারি তৈয়বের পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১ মার্চ ২০১৭

ফিফা রেফারি তৈয়বের পরিকল্পনা

সাতক্ষীরার সন্তান তৈয়ব হাসান প্রথমে ছিলেন শিক্ষক। পরে হন দৈনিক জনকণ্ঠের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি। তবে এসব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে ‘ফিফা রেফারি তৈয়ব’ হিসেবেই তার বেশি পরিচিত-খ্যাতি লাভ করেন তিনি। দীর্ঘদিন রেফারিংয়ে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশের সাবেক ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান শামসুজ্জামান বাবুকে বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) কর্তৃক এক বিশেষ সম্মাননা (ক্রেস্ট) প্রদান করা হয় (তৈয়বসহ মোট ২৩ রেফারি এই সম্মাননা লাভ করেন)। উল্লেখ্য, তৈয়ব হাসান ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফিফা রেফারি হিসেবে দেশে ও বিদেশে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বাংলাদেশের প্রথম রেফারি হিসেবে এই প্রথমবারের মতো তিনি এই সম্মাননা অর্জন করেন। কিছুদিন আগেই তিনি অবসর নিয়েছেন ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেফারিং থেকে। শনিবার বাফুফে ভবনে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফুটবলে রেফারিং করতে গিয়ে অনেকবারই বাংলাদেশী হওয়ায় অবহেলিত হয়েছি। পরে ভাল রেফারিং করায় তারাই আমাকে প্রশংসিত করেছে ....। ১৯৮৯ সালে রেফারি হিসেবে বাফুফের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তৈয়ব। দশ বছর পর ফিফা ও এএফসির রেফারি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ’৯৯ অলিম্পিক বাছাইয়ে ভিয়েতনামে ম্যাচ দিয়ে শুরু। তৈয়ব এএফসির এলিট প্যানেলে রামকৃষ্ণের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী রেফারি, যিনি একসময় এশিয়ার সেরা ২৫ রেফারির তালিকায়ও ছিলেন। তিনি ফিফা আয়োজিত বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়িং, অলিম্পিক কোয়ালিফায়িং, এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, বিভিন্ন রাউন্ড টুর্নামেন্টসহ শতাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। ২০১৩ সাফ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনাই ছিল তার সর্বশেষ ম্যাচ। বাংলাদেশের জেড আলম একসময় সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচে রেফারিং করেছিলেন। তাকে ছাড়িয়ে গেছেন তৈয়ব হাসান। এএফসির তৎকালীন সভাপতি মোহাম্মদ বিন হাম্মাম ভাল রেফারিংয়ের স্বীকৃতি হিসেবে প্রশংসাপত্র দিয়েছিলেন তৈয়বকে। ফিফার এলিটে ঢুকে কখনও বাদ পড়েননি তৈয়ব। কিন্তু তার কষ্ট ও আফসোসÑ এলিটে আর কোন বাংলাদেশী থাকছে না তার পর। এলিটে থাকার সুবাদে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈয়বের সঙ্গে দুজন সহকারী ও একজন চতুর্থ রেফারি ছিলেন এলিটে। কিন্তু এভন বাংলাদেশের কোন রেফারি নেই এলিটে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে বাফুফেকেই এগিয়ে আসতে হবে। প্লেয়ার হান্টের মতো রেফারি হান্টও করা উচিত। রেফারিদের কেবল কোর্স করালেই হবে না। ডেভেলপমেন্ট পর্যায়েও তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। নইলে রেফারিদের ভবিষ্যত পাইপলাইন আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। মনে রাখতে হবে ভাল ফুটবল খেলার সঙ্গে ভাল রেফারিংও সম্পৃক্ত।’ খেলার মাঠে রেফারিং আর না করলেও আগামীতে রেফারিংয়ের সঙ্গেই থাকতে চান তৈয়ব, ‘দেশের রেফারি বৃদ্ধি এবং তাদের মানের উন্নয়ন ঘটাতে আমি রেফারিজ ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করতে চাই। এ সংক্রান্ত কোর্সও করেছি মালয়েশিয়ায়।’
×